গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে আইরিশ বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 5th, June 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রতিবাদে ইসরায়েলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে আয়ারল্যান্ডের বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন’।
বিশ্ববিদ্যালয়টির (ট্রিনিটি কলেজের) বোর্ড বুধবার শিক্ষার্থীদের এক ই-মেইলে জানায়, তারা একটি বিশেষ টাস্কফোর্সের সুপারিশ গ্রহণ করেছে। সুপারিশ অনুযায়ী, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্র, দেশটির সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসরায়েলভিত্তিক কোম্পানির সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক’ ছিন্ন করা হবে।
বোর্ড চেয়ারম্যান পল ফারেল সই করা ওই ই-মেইলে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত গাজায় ‘আন্তর্জাতিক ও মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন চলা পর্যন্ত’ কার্যকর থাকবে। ই-মেইলটির একটি কপি বার্তা সংস্থা এএফপির হাতে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মধ্য ডাবলিনে তাদের ক্যাম্পাসের একটি অংশ গত বছর শিক্ষার্থীদের পাঁচ দিনের অবরোধের মুখে পড়েছিল। গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমের প্রতিবাদেই সেই অবরোধ করা হয়েছিল। এরপর এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ডের গ্রহণ করা টাস্কফোর্সের সুপারিশগুলো হলো— ইসরায়েলভিত্তিক সব কোম্পানি থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার, ভবিষ্যতে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো সরবরাহ চুক্তি এবং নতুন কোনো বাণিজ্যিক সম্পর্ক না করা।
বিশ্ববিদ্যালয় আরও জানিয়েছে, তারা (পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত) ইসরায়েলের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থী বিনিময় চুক্তি করবে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শিক্ষাবিনিময় কর্মসূচি ‘ইরাসমুস প্লাস’র অধীনে বর্তমানে ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের সঙ্গে ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি চুক্তি রয়েছে। এর একটি তেল আবিবের উপকণ্ঠে অবস্থিত ‘বার ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের’ সঙ্গে, যা ২০২৬ সালের জুলাইয়ে শেষ হবে। অন্য চুক্তিটি ‘হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেমের’ সঙ্গে, যা ২০২৫ সালের জুলাইয়ে শেষ হবে। ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন এক ই-মেইলে এএফপিকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড আরও বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন ইসরায়েলি অংশগ্রহণ রয়েছে এমন নতুন কোনো গবেষণা প্রকল্পে অংশ না নেয় কিংবা এ ধরনের প্রকল্পে অনুমোদনের জন্য কোনো প্রস্তাব না পাঠায়।
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব দেশ ইসরায়েলের নীতির কঠোর সমালোচনা করে আসছে আয়ারল্যান্ড তাদের অন্যতম। যুদ্ধ শুরুর পর হওয়া বিভিন্ন জরিপ দেখা গেছে, আয়ারল্যান্ডে ফিলিস্তিনের প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে।
২০২৪ সালের মে মাসে ডাবলিন ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ওই সময় আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ একই সিদ্ধান্ত নেয়।
পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আনা গণহত্যার অভিযোগে পক্ষভুক্ত হয় আয়ারল্যান্ড। ইসরায়েলি নেতারা অবশ্য এসব অভিযোগকে কড়াভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।
আয়ারল্যান্ডের ‘চরম ইসরায়েল-বিরোধী নীতির’ অভিযোগ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ডাবলিনে নিজেদের দূতাবাস বন্ধের নির্দেশ দেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
নারায়নগঞ্জের জেলার ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় আমেনা বেগম (৩৮) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী ফিরে গেলো তার আপন ঠিকানায়।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে উদ্ধার মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পরিবারের লোকজন কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। মানসিক প্রতিবন্ধী নারী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার লনেস্বর গ্রামের জহিরুল হকের স্ত্রী।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১১ টার দিকে ফতুল্লা বাজার এলাকায় অস্বাভাবিক আচরন করতে থাকা মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে ঘিরে লোকজনের ভীড় উপস্থিতি দেখতে পেয়ে এগিয়ে যায় পুলিশ।
নারীটির আচরন ও কথাবার্তা শুনে মানসিক প্রতিবন্ধী মনে হওয়ায় তাকে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিবন্ধী নারীর বিচ্ছিন্নভাবে প্রদত্ত তথ্যের সমন্বয়ে থানা পুলিশ ধারণা করেন যে তার বাড়ী কুমিল্লা জেলার কোন এক জায়গায়।
মঙ্গলবার সকালে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নানা কথাবার্তার এক পর্যায়ে তার বাড়ী এবং পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়।পরবর্তীতে পুলিশ বেলা ১১ টার দিকে
ঐ নারীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। পরে কুমিল্লা থেকে বিকেল ৪ টার ঐ নারীর ভাই সহ পরিবারের অপর সদস্যরা থানায় এলে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী আমেনা বেগম কে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে তুলে দেয়।
আমেনা বেগমের ভাই মোঃ মানিক জানায়,তার বোন মানসিক রুগী। বোন জামাই প্রবাসী। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে নিজ বাসা থেকে পরিবারের সকলের অগোচরে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তারা তাকে খুঁজে পেতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ ও করতেছিলো।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে ফতুল্লা থানা পুলিশ তাদের কে মোবাইল ফোনে ফোন করে তার বোনকে পাওয়ার বিষয়টি জানায়। পরে চারটার দিকে তারা ফতুল্লা থানায় এসে তার বোনকে পায়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক গাজী শামীম জানান,নারীটি রাতে ঠিকমতো কিছু বলতে পারছিলোনা। সকালে তার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তার ফলে বাসার ঠিকানা জানতে পারেন। তখন সেখানকার থানার সাথে যোগাযোগ করেন।
থানা থেকে স্থানীয় মহিলা মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে ঐ মহিলার ইউপি সদস্যের মাধ্যমে নারীর পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ হয়। বিকেল চারটার দিকে ঐ নারীর পরিবারের সদস্যরা ফতুল্লা থানায় এলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।