‘গত কয়েক মাসে দেশের এত কিছুর পরিবর্তন হইল, অথচ ঈদে বাসের বাড়তি ভাড়া নেওয়া বন্ধ হইল না। এসব দেখার কি কেউ নাই?’

চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যেতে বাড়তি ভাড়ায় টিকিট কেটে এভাবেই নিজের ক্ষোভ ঝাড়লেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাশেম। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম নগরের অলংকার মোড়ে দেখা হলো তাঁর সঙ্গে।

বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে হাশেম বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে এ পথে ভাড়া নেওয়া হয় ২০০ টাকা করে। কিন্তু ঈদ এলে ভাড়া বেড়ে যায়। এবার সাড়ে ৩০০ টাকায় টিকিট কেটেছি। গাড়ির সংকট, সড়কে যানজট, চট্টগ্রাম থেকে গেলে খালি ফিরতে হয়—এমন সব অজুহাতে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।’

অলংকার ও এ কে খান ঘুরে হাশেমের মতো আরও অনেক যাত্রীকে পাওয়া গেছে, যাঁরা বাড়তি ভাড়ায় টিকিট কেটেছেন। এই যেমন, কবির উদ্দিন যাবেন নোয়াখালীর চৌমুহনী এলাকায়। শাহী পরিবহনে এ পথে স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া নেওয়া হয় সাড়ে ৩০০ টাকা। কিন্তু কবির উদ্দিন টিকিট কেটেছেন জনপ্রতি ৫৫০ টাকায়। এ বিষয়ে কাউন্টারের কর্মরত ব্যক্তিরা তাঁকে বলেছেন, ‘সাড়ে ৫০০ টাকায় টিকিট নিলে নেন, না নিলে যান। বাস একবার গেলে খালি আসতে হয়। কম হবে না।’

কবির প্রথম আলোকে বলেন, ঈদে প্রচুর মানুষের চাপ থাকে। এ সুযোগে পরিবহনমালিকেরা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন। এ কে খান শাহী কাউন্টারে কর্মরত এক ব্যক্তি দাবি করেন, তাঁরা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন না। তাঁরা আগে কম নিতেন। এখন সমন্বয় করছেন।

বাড়তি ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাশেম.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়ায় মহিলা দলের নেত্রীকে মারধর, অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

চাহিদামতো ভিজিএফের স্লিপ না পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে তালা দিয়েছিলেন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি মালেকা বেগম। ওই ঘটনার জেরে মারধরের শিকার হন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেন।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ভিজিএফের চাল নিতে আসা নারীদের হামলায় মালেকা বেগম আহত হয়েছেন।

এদিকে মালেকা বেগমের ওই অভিযোগের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ করেছেন এলাকার লোকজন। বিকেল চারটা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়।

গত মঙ্গলবার সকালে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদে মালেকা বেগমকে মারধর করা হয়। পরে তিনি তজুমদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তিনি ইউপির সাবেক সদস্য। ওই ঘটনা সম্পর্কে মালেকা বেগম বলেন, ‘গত সোমবার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিনের কাছে ঈদে বরাদ্দ ভিজিএফের ১০০টি স্লিপ চেয়েছিলাম। তিনি ৪০ জনের তালিকা দিতে বলেছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেন। তখন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহীম হাওলাদারের ভাই কালিমুল্লাহ ও ইউপির দফাদার মো. আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল নারী তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। তাঁরা তাঁর ছবি ফেসবুকেও ছড়িয়ে দিয়েছেন।

এ সম্পর্কে বিএনপি নেতা ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ‘ওই দিন (মঙ্গলবার) নারীদের মধ্যে চাল বিতরণের কথা ছিল। তাঁরা এসে পরিষদে তালা মারা দেখেন এবং মালেকা বেগমকে তালা খুলে দিতে বলেন। এ সময় কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে মালেকা বেগম হতদরিদ্র নারীদের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেন। তখন তাঁরা তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় আমার পরিবারের বা বিএনপির কেউ জড়িত নন।’

চাঁচড়া ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিন বলেন, ‘তাঁদের ইউনিয়নে ১ হাজার ৬৭৪ জন হতদরিদ্রের নামে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল এসেছে। মহিলা সভাপতি (মালেক বেগম) একাই ১০০টি স্লিপ দাবি করেন। তাঁকে বলেছিলাম, আইডি কার্ড জমা দেন, চেষ্টা করব। ঘটনার দিন (মঙ্গলবার) সাড়ে ১০টার সময় পরিষদে গিয়ে জানতে পেরেছি তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।’

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ