কৃষকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই তিন শতাধিক কৃষকের মাঝে গরু বিতরণ ও কৃষি পণ্য বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে গ্রো-আপেরে। বগুড়ার শিবগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, গ্রো-আপের ইনপুট চ্যানেলের কর্মকর্তারা এবং অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ক্যাটল রেঞ্চ-৬ নামের এই প্রজেক্টের জন্য গ্রো-আপের টি পারচেস টিম গরু ক্রয়ের কার্যক্রম চালায়। এতে প্রায় ২৫০টি গরু কেনা হয়। এছাড়াও গ্রো-আপের নিজস্ব খামারে মজুদ ছিল ১০০টি গরু। গ্রো-আপে কৃষকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই তিন শতাধিক কৃষকের মধ্যে গরু বিতরণ ও কৃষি পণ্য বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে গ্রো-আপের ফিল্ড সুপারভাইজার মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা কৃষকের কষ্ট লাঘবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বগুড়াতে এসেছি কৃষক ভাইদের জন্য গরু উপহার দিতে। তারা যেন গরু লালন-পালন করে তারা জীবন ও জীবিকার পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়। আমরা গরু প্রদানের পাশাপাশি উন্নত প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা করে থাকি।
গ্রো-আপের এই প্রকল্প সম্পর্কে এক কৃষক বলেন, ‘আমি দুইবার গ্রো-আপের সহায়তায় গরু পেয়েছি। প্রথমবারে ভালো হয়েছে। আশা করি দ্বিতীয়বার আরও ভালো হবে।’
গ্রো-আপ প্রকল্পের সহযোগী আরেক কৃষক শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘এক বছর আগে গ্রো-আপের সহায়তায় আমি একটি গরু নিই। এরপর তা লালনপালন করে বিক্রি করি। যাতে আমার প্রায় ১৬০০০ টাকা লাভ হয়েছিল। এরপর আরও একটি গরু লালনপালন করে ২৯০০০ টাকা পেয়েছি। বর্তমানে গ্রো-আপের সহায়তায় আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। এই লভ্যাংশের টাকায় আমার ছেলেকে পড়াশোনা করিয়ে স্বাবলম্বী হিসেবে তৈরি করতে পারব আশা করি।’
অনুষ্ঠানে বলা হয়, গ্রো-আপ প্রকল্পে কৃষকদের জন্য উন্নত কৃষি সরঞ্জাম, সঠিক সার, বীজ ও কীটনাশক সরবরাহ করছে নিয়মিত। এসমস্ত সরঞ্জাম সরবরাহের পাশাপাশি আধুনিক কৃষিশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ নিশ্চিত করছে। প্রকল্পটি কৃষকদের সাথে সরাসরি বিনিয়োগকারীদের যুক্ত করে ফসলের সঠিক বাজার মূল্য নিশ্চিত করে, যা কৃষকদের মধ্যস্থতাকারী মহাজনদের শোষণ থেকে রক্ষা করছে। এছাড়াও বিপণন সহায়তাও দিয়ে যাচ্ছে গ্রো-আপ। এতে তৈরি হচ্ছে টেকসই কৃষি ব্যবস্থা! আর এই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে গ্রো-আপ এগ্রো। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গর ঈদ ল আজহ ক ষকদ র প রকল প ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।