জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত সময়সীমা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি বিএনপি। রমজান মাসে নির্বাচনী কার্যক্রম ও প্রচারণা নিয়ে আপত্তি আছে দলটির। তারা মনে করছে, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

বিএনপি বারবার ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলে আসছে। যদিও প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর দলটি এখনো পরবর্তী করণীয় ঠিক করেনি। ঈদের ছুটি শেষে দলীয় ফোরামে এবং যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে বলে

জানান। তাঁর এই ঘোষণার ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে বলেও জানান অধ্যাপক ইউনূস। তাঁর এই ঘোষণার পর বিভিন্ন দল মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

আরও পড়ুনসংসদ নির্বাচন আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন: প্রধান উপদেষ্টা০৬ জুন ২০২৫

দলটির নেতারা প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণায় অন্য গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ারও আশঙ্কা করেছেন। তবে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবিতে এ মুহূর্তে কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বিএনপি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহার পর নির্বাচন বিষয়ে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের ছুটির পর আমরা সবার (যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক দল) সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।’

শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ শেষ হলে রাতেই স্থায়ী কমিটির সভা ডাকে বিএনপি। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ পর্যালোচনা করা হয় এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন৯০ শতাংশ দলের দাবি পাশ কাটিয়ে এ সিদ্ধান্ত কি না, প্রশ্ন জাগে: খসরু০৬ জুন ২০২৫

এদিকে নির্বাচন বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর মতে, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত নির্বাচনের সময়সীমায় জাতি হতাশ। আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

মির্জা ফখরুলের মতে, জাতীয় নির্বাচনের জন্য এপ্রিল মাস কোনোভাবেই উপযোগী নয়। গতকাল ঈদের দিন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে সময় (এপ্রিল মাস) নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই সময় বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সঠিক সময় নয়। এখানে (এপ্রিল মাস) প্রচণ্ড গরম, ঝড়বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে…ওই সময় রোজার পরপরই.

..পাবলিক পরীক্ষা আছে। সময়টা খুব চিন্তা করে দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হয় না। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা করতে হবে রোজার মাসে, যেটা ডিফিকাল্ট হবে।’

বিএনপি বলছে, এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে আবহাওয়ার সংকট থাকবে। এ ছাড়া রমজানের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা ও কার্যক্রম এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি০৬ জুন ২০২৫আরও পড়ুননির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণায় জামায়াতের সন্তোষ প্রকাশ০৬ জুন ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড স ম বর ব এনপ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাতিল করে দেওয়ার পরও আগামী নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রীদের জন্য বাড়তি দামে বিলাসবহুল গাড়ি কিনতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতি আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে এ ধরনের কেনাকাটায় অতি আগ্রহের কারণ অনুসন্ধানও জরুরি বলে মনে করছে সংস্থাটি।

টিআইবি বলছে, সমালোচনার মুখে প্রথম দফায় গাড়ি কেনার প্রস্তাব নাকচ হওয়ার পর আবারও আগের চেয়ে তুলনামূলক বেশি দামে গাড়ি কেনার অভিনব প্রস্তাব উত্থাপন বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলের মতোই একশ্রেণির আমলাদের পরবর্তী সরকারের সম্ভাব্য মন্ত্রীদের প্রতি অতি উৎসাহী তোষামোদি আচরণের ন্যক্কারজনক পুনরাবৃত্তি।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলে সংস্থাটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এক শ্রেণির অতি উৎসাহী স্বার্থান্বেষী তোষণপ্রবণ আমলাদের প্রস্তাব অনুযায়ী গাড়ি কেনার এ সিদ্ধান্ত অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। যা সুবিধাবাদী আমলাদের প্রভাববলয় প্রতিষ্ঠার যে চর্চাকে পতিত সরকারের আমলে স্বাভাবিকতায় পরিণত করা হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বিব্রতকর ও আত্মঘাতী উদাহরণ।’ এ ধরনের সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত উল্লেখ করে ভবিষ্যৎ মন্ত্রীদের গাড়ি কেনার প্রস্তাব বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আইন অনুযায়ী একজন মন্ত্রী সরকারিভাবে সার্বক্ষণিক একটি গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকেন। বিগত সময়ে মন্ত্রীরা এবং বর্তমানে উপদেষ্টারা গাড়ি ব্যবহার করছেন। হঠাৎ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আইনবহির্ভূতভাবে ভবিষ্যতের মন্ত্রীদের জন্য বিলাসবহুল টয়োটা ব্র্যান্ডের ল্যান্ড ক্রুজার কেনার জন্য উদ্‌গ্রীব কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। সরকারের এ জাতীয় আগ্রহের পেছনের কারণ অনুসন্ধান করা জরুরি।

অন্তর্বর্তী সরকার গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিলেও তা পরবর্তী সরকারের মন্ত্রীদের কাছে গ্রহণযোগ্য না–ও হতে পারে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের ব্যয় সংকোচনের নিজস্ব সিদ্ধান্তের পরিপন্থী এ ক্রয়ের মাধ্যমে এমন স্ববিরোধী পথে সরকার কেন যাচ্ছে? এটি কি জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্র সংস্কারে অঙ্গীকারবদ্ধ সরকারের স্ববিরোধী আচরণ বলে বিবেচিত হবে না? এর দায়ভার সরকারের পক্ষ থেকে কে বা কারা নেবেন?’

আরও পড়ুনসংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ গাড়ি কেনা হচ্ছে০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • চাকসু: মনোনয়নপত্র বিতরণের সময় বৃদ্ধির দাবি ছাত্রদলের
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফরের সময়সূচি ঘোষণা
  • ৪৭তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার্থীদের জন্য পিএসসির যত নির্দেশনা
  • যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের মালিকানা সংক্রান্ত চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটন–বেইজিং সমঝোতা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩