কাদের জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, প্রশ্ন বিএনপি নেতা আমীর খসরুর
Published: 8th, June 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘কাদের জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে? কাদের জন্য এ সুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে? এতে লাভবান কারা হচ্ছে? তাহলে আগামী নির্বাচনও কি যারা আছে, তারা প্রভাবিত করে তাদের দিকে নিয়ে যাবে বা তাদের মতো করে নির্বাচন করবে? প্রশ্নগুলো উঠে আসছে।’
আজ রোববার দুপুরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম নগরে তাঁর মেহেদীবাগের বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন। ঈদ উপলক্ষে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করার এক ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সিংহভাগ রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছে। ঐকমত্যের বিষয়টিও একেবারে শেষ পর্যায়ে আছে। ইতিমধ্যে বিচারকার্য শুরু হয়েছে। বিচার নিজের গতিতে চলবে। কোনো সরকার বিচার চালাবে না। সুতরাং এসব সিদ্ধান্ত যখন পরিষ্কার, তখন হঠাৎ করে এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন তারও আগে করা সম্ভব। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বরে নির্বাচন করা সম্ভব।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অনেক ভেবেচিন্তে সবাই মিলে ডিসেম্বরে নির্বাচনের বিষয়টি বলা হয়েছে। কেননা, এরপর পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। রমজান মাসে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড করার সুযোগ থাকে না। এরপর আবার পরীক্ষা, আবহাওয়া, কালবৈশাখী মিলিয়ে সম্ভব (নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনা) হবে না। ফলে এ সময়ে (এপ্রিলে) নির্বাচনী দিনক্ষণ ঠিক করার পেছনে কী কারণ, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এপ্রিলে নির্বাচন কাদের স্বার্থে, সে প্রশ্ন তুলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশে যখন একটা নির্বাচিত সরকার থাকে, তখন একটা বিশেষ সময়ে নির্বাচন হয়। একটা সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়। এখন নির্বাচিত সরকার নেই। সংসদ নেই। সে ক্ষেত্রে আপনার এটা (নির্বাচনের পথনকশা ঘোষণা) করতে হলে সবার ঐকমত্যে ও মতামতের ভিত্তিতে করতে হবে। মতামত সৃষ্টি হয়েছে ডিসেম্বরের পক্ষে। সুতরাং যে মতামত সৃষ্টি হয়েছে, সেটির বাইরে গিয়ে এপ্রিলে নির্বাচন কেন—এটিই এখন প্রশ্ন। এটি কাদের স্বার্থে, অন্য কোনো চিন্তা আছে নাকি?’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
ব্যক্তিগত সম্পদ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসির এক সাংবাদিকের ওপর ভীষণ চটে যান। ওই সাংবাদিকের কারণে ‘অস্ট্রেলিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে’ বলে সতর্ক করেন তিনি। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে ওই সাংবাদিকের ব্যাপারে নালিশ করারও হুমকি দেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের লনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন ট্রাম্প। এবিসির সাংবাদিক জন লায়ন্সও তাঁকে প্রশ্ন করছিলেন। লায়ন্স এবিসিতে প্রচারিত ফোর কর্নারস অনুষ্ঠানের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।
গতকাল লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি কতটা ধনী হয়েছেন? তিনি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে অবস্থান করা সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না।’ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন নামে তাঁর যে পারিবারিক ব্যবসাটি আছে, সেটি এখন তাঁর সন্তানেরা পরিচালনা করেন।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বেশির ভাগ ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছে।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন যে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।এরপর লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’
এরপর লায়ন্সকে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, তিনি (লায়ন্স) কোথা থেকে এসেছেন।
এরপর ট্রাম্প চটে গিয়ে বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে লায়ন্স ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি’ করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলতে থাকেন, ‘আমার মতে, আপনি এ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার অনেক ক্ষতি করছেন। আর তারা আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। আপনি জানেন, আপনার নেতা (অ্যান্থনি আলবানিজ) শিগগিরই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন। আমি তাঁকে আপনার ব্যাপারে বলব। আপনি খুব খারাপ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। আপনি আরও ভালোভাবে কথা বলুন।’
সাংবাদিক লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’এরপর লায়ন্স আবারও কিছু বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চুপ করুন’।
গত জুনে কানাডায় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প ও আলবানিজের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে হঠাৎই তা বাতিল হয়ে যায়। এর পর থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করছেন আলবানিজ।
আরও পড়ুনট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগ্বিতণ্ডার পর কী বললেন স্টারমার ও আলবানিজ০১ মার্চ ২০২৫সম্প্রতি আলবানিজ বলেছেন, নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের সম্মেলন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানকালে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দেখা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউইয়র্কে আমাদের একে অপরের সঙ্গে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে তিনি একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিভিন্ন ফোরামে আমাদের দেখা হবে। এটা সম্মেলনের মৌসুম।’
ট্রাম্পের সঙ্গে আলবানিজের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে পেন্টাগনের অকাস পারমাণবিক সাবমেরিন চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতে আরও ব্যয় বাড়াতে ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে দাবি জানিয়েছেন, তা নিয়ে পর্যালোচনা।