ভিকারুননিসার ছাত্রী মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা, ডুবে প্রাণ গেল দুজনেরই
Published: 9th, June 2025 GMT
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী হালিমা মোহাম্মদ (১৮)। এবার তার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। ঈদুল আজহায় বাড়িতে বেড়াতে এসে বাবা বাবুল আহমেদ বাবুর (৬০) সঙ্গে পুকুরে নেমেছিল সাঁতার শিখতে। কিন্তু হালিমার সাতার শেখা আর হয়নি। বাবার হাত ফসকে ডুবে মারা যায়। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে তার বাবাও প্রাণ হারান।
সোমবার বিকেলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে, বাবুল আহমদের স্ত্রী তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তাদের চার সন্তান সেখানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। বাড়ির কাছে মানিকসিংহ এলাকায় বাবুলের একটি ইটভাটা রয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে চার-পাঁচ দিন আগে তার স্ত্রী-সন্তানেরা বাড়িতে বেড়াতে আসে। তার সন্তানেরা সাঁতার জানে না। আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে মেয়ে হালিমাকে নিয়ে পুকুরে নেমে প্লাস্টিকের টিউবের সাহায্যে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবুল। একপর্যায়ে টিউব থেকে হাত ফসকে হালিমা পানিতে ডুবে যায়। এ সময় বাবুল মেয়েকে রক্ষার চেষ্টা করেন। কিন্তু দুজনই পানি থেকে উঠছিলেন না। আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে পুকুরে নেমে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। পরে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে দুজন মারা যান।
বাবুলদের আত্মীয় ও জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজাদ মিয়া জানান, আজ রাত ১০টায় বাবুল ও তার মেয়ের জানাজা হবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হবে।
জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোরশেদুল আলম ভুঁইয়া বলেন, ‘পানিতে ডুবে একসঙ্গে বাবা ও মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনেছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’
নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫