২০২২ বিশ্বকাপের আগে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের মানের পার্থক্য নিয়ে বেশ আলোচনা শোনা যেত। ২০০২ সালের পর আর কোনো লাতিন দেশ বিশ্বকাপ না জেতার কারণেই মূলত এত আলোচনা।

সে সময় দুই মহাদেশের ফুটবলের পার্থক্য নিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পের একটি মন্তব্য বেশ আলোচনারও জন্মও দিয়েছিল। এমবাপ্পে বলেছিলেন, ‘ইউরোপের ফুটবল যতটা এগিয়েছে, দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ততটা এগোতে পারেনি।’

তবে কাতার বিশ্বকাপে সেসব প্রশ্ন ও বিতর্কের একরকম ইতি টেনে দেয় আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসিরা বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে তোলার পথে যে ৬টি ম্যাচে জিতেছিল, নকআউটের তিনটিসহ চারটিই ছিল ইউরোপের। শুধু বিশ্বকাপ নয়, বিশ্বকাপের আগে ফিনালিসিমাতেও ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে হারিয়েও শিরোপা জিতেছিল লাতিন আমেরিকার দেশটি।

সম্প্রতি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের নেশনস লিগ জয়ের পর আবারও একই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। এ সময় তিনি কথা বলেছেন অপ্রতিরোধ্য রোনালদোর শ্রেষ্ঠত্ব নিয়েও।

আরও পড়ুনদেখে নিন রোনালদোর ট্রফি কেবিনেটে চ্যাম্পিয়নস লিগ-ইউরোসহ আরও যা আছে ১৯ ঘণ্টা আগে

৪০ পেরিয়েও দুর্দান্ত ছন্দ রেখে শিরোপা জিতেছেন রোনালদো। আগামীকাল কলম্বিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে স্কালোনির সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্ন হয়েছে। আর্জেন্টিনা কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয় তাঁর রোনালদো–ভাবনা। উত্তর দেওয়ার সময় অবশ্য শুধু রোনালদো নন, নিজের মন্তব্যে পরোক্ষে মেসিকেও টেনে আনেন স্কালোনি।

উয়েফা নেশনস লিগ ট্রফি হাতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ব শ বক প ইউর প ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ