ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার সময় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে যুবদলকর্মী নিহত
Published: 11th, June 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আটক নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে ছাড়িয়ে নেওয়া সময় বিএনপির দুই পক্ষের গোলাগুলির ঘটনায় এক যুবদলকর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল বিকেলে মাঝিপাড়া এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মামুন ভূঁইয়া (৩৫)। তিনি রূপগঞ্জের ভুলতা মাঝিপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর ভাই বাদল ভূঁইয়া ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। মামুনও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ফারুক।
পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে রূপগঞ্জ উপজেলার মাঝিপাড়া এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আটক হন ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন। সেখানে বাদল ভূঁইয়ার অনুসারীরাও ছিলেন। তাঁরা ছাত্রলীগের ওই নেতাকে বাদলের বাড়ির দিকে নিয়ে যেতে চান। ওই সময় সেখানে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে উপস্থিত হন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক জায়েদুল ইসলাম ওরফে বাবু। এ সময় সাব্বিরকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে জায়েদুল ও তাঁর লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বাদলের পক্ষের লোকজন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে জায়েদুল অন্তত পাঁচটি গুলি ছোড়েন। এতে মামুন গুলিবিদ্ধ হন। পরে লোকজনের ধাওয়া খেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান জায়েদুল। পরে মামুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া আগে সাব্বিরকে উদ্ধার করে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আগেই গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন।
স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী জানান, রূপগঞ্জে বিএনপির কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে বিভক্তি আছে। একটি অংশের নেতৃত্ব দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও অন্যটির নেতৃত্বে আছেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। বাদল হোসেন মোস্তাফিজুর পক্ষের অনুসারী ও জায়েদুল মাহবুবুর পক্ষের অনুসারী। স্থানীয়ভাবে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জায়েদুলের সঙ্গে বাদলের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ আছে।
এ বিষয়ে বাদল ভূঁইয়া আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, জায়েদুলের চাচা মাহবুবুর রহমান জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। জায়েদুল নিজেও ছাত্রদল নেতা। চাচার প্রভাবে ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এলাকার ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডারদের আশ্রয় দিয়ে তাঁদের সব অস্ত্র নিজের হাতে নিয়েছেন জায়েদুল। এলাকায় তিনি ‘বাবু বাহিনী’ গড়ে তোলে মাদক ও চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গতকাল এলাকাবাসীর হাতে আটক ওই ছাত্রলীগ নেতা (সাব্বির) বাবু বাহিনীর ক্যাডার।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত জায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি শুনেছি ছাত্রলীগের সাব্বিরকে লোকজন ধরছিল। সেখানে গোলাগুলি হইছে। কিন্তু আমি সেখানে ছিলাম না৷ আমি বাসায় ছিলাম।’
জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম জানান, গুলির ঘটনায় গতকাল রাতেই মামুনের ভাই বাদল ভূঁইয়া বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। এতে জায়েদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ায় মামলাটি হালনাগাদ করা হবে। আসামিদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ব এনপ র এল ক য় ব দল ভ ইসল ম ল কজন গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাক্তন স্ত্রী দেবশ্রীর সঙ্গে প্রেমের সিনেমা করতে চান প্রসেনজিৎ
ভারতীয় বাংলা সিনেমার তারকা জুটি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি ও দেবশ্রী রায়। পর্দায় এ জুটির রোমান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য ভক্ত। রুপালি পর্দার রোমান্স ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ভালোবেসে দেবশ্রী রায়কে বিয়ে করেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু কয়েক বছর পরই এ বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়।
সংসার ভাঙার পাশাপাশি দর্শক হারান রুপালি পর্দার জনপ্রিয় এই জুটিকে। এরপর আর কোনো সিনেমায় একসঙ্গে দেখা যায়নি তাদের। অবশেষে দূরত্ব কমিয়ে দেবশ্রীর সঙ্গে সিনেমা করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন প্রসেনজিৎ।
আরো পড়ুন:
নিজেকে তৈরি করে খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় করব: স্বস্তিকা
ছেলের বন্ধুরা ‘দিদি’ বলে ডাকে: শ্রাবন্তী
কিছুদিন আগে ‘আমি যখন হেমা মালিনী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেছিলেন—“দেব-শুভশ্রী জুটির পর আমি চাই আবার প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী জুটি ফিরুক, এই জুটিটা ফেরার অত্যন্ত প্রয়োজন।” ‘দেবী চৌধুরানী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিতের এই বক্তব্য প্রসেনজিৎকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, “আমি তো চাই দীপকদা একটা স্ক্রিপ্ট লিখুক আমাদের জন্য, আমার বহুদিনের ইচ্ছা ছিল এবং আমি অনেকবার দীপকদাকে বলেছি যে, আমি তোমার পরিচালনায় একটা কাজ করতে চাই। দীপকদা, আমাদের জন্য যদি পরিচালনা করেন তাহলে অবশ্যই আমি সিনেমা করতে চাই। আর আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে দেবশ্রীর সঙ্গে আবারো একটা পরিণত প্রেমের সিনেমা করতে চাই।”
তাহলে কী পুরোনো তিক্ততা ভুলে গেছেন প্রসেনজিৎ? জবাবে এই নায়ক বলেন, “আমার কারো সঙ্গে কোনো তিক্ততা নেই। যে আমার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলবে, আমি সব সময় তাদের জন্য আছি। আর কোনো তিক্ততা নিয়ে বাঁচতে চাই না, যে কটা দিন আছি সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নিয়েই থাকতে চাই।”
এক সময় দেবশ্রীকে নিয়ে কথা বলতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন না প্রসেনজিৎ। তবে অভিমান ভুলে কাজের ক্ষেত্রে আবার এক হওয়ার কথা বললেন তিনি। বর্তমানকে ভালোবেসে যেমন এগিয়ে যান, ঠিক তেমনই কি অতীতকেও আঁকড়ে বাঁচেন?
এ প্রশ্নের জবাবে প্রসেনজিৎ বলেন, “নিজের অতীতকে কখনো উপেক্ষা করা যায় না। মাঝেমাঝেই আমি আমার অতীতে ফিরে যাই; সেই সময়গুলোর জন্যই আজকের আমি। অতীত আমাকে অনেক ভালোবাসা, রাগ-দুঃখ-ক্ষোভ দিয়েছে। আমার ক্ষেত্রে যেটা অল্প কিন্তু তবু আছে সেটা হলো—ঘৃণা। সেটাও পেয়েছি, তবে অতীত যেমনই হোক না কেন, তাকে কখনো ফেলে দেওয়া যায় না। আমরা সবাই মাঝে মাঝে অতীতে ফিরে যাই।”
সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও দ্বিধাবোধ করেন না প্রসেনজিৎ।তার ভাষায়—“এই বদলগুলোকে মেনে না নিলে আমাকে পিছিয়ে পড়তে হবে। আমি প্রচুর বদল দেখেছি, তবে যেই সময় যেটা এসেছে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছি, এটাই তো করা উচিত। না হলে বর্তমান প্রজন্ম থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”
ঢাকা/শান্ত