আমাদের সৌরজগতের অচেনা ও অন্ধকার প্রান্তে ‘প্ল্যানেট নাইন’ নামের বিশাল ও রহস্যময় গ্রহ লুকিয়ে আছে বলে মনে করেন অনেক বিজ্ঞানী। আর তাই দীর্ঘদিন ধরে কল্পিত এই প্ল্যানেট নাইন গ্রহের সন্ধান করছেন তাঁরা। গ্রহটির সন্ধান পাওয়া না গেলেও সৌরজগতের অচেনা ও অন্ধকার প্রান্তে একটি নতুন বামন গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। নতুন এই বামন গ্রহের অস্তিত্ব প্ল্যানেট নাইন তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। আর তাই বামন গ্রহটি নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নেপচুনের অপর পাশে বরফের পাথরের অদ্ভুত, গুচ্ছবদ্ধ কক্ষপথ ইঙ্গিত দেয় সেখানে বড় কিছু আছে। এই বড় কিছুর মধ্যে প্ল্যানেট নাইনও থাকতে পারে। সেই এলাকাতেই ‘২০১৭ ওএফ২০১’ নামের বামন গ্রহের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৭০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই গ্রহটি প্রায় ২৫ হাজার বছরে নিজ কক্ষপথে আবর্তন করায় পৃথিবী থেকে খুব কম সময়ের জন্য পর্যবেক্ষণ করা যায়।

নতুন বামন গ্রহটির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডির বিজ্ঞানী সিহাও চেং বলেন, এই বামন গ্রহ প্লুটোর চেয়ে তিন গুণ ছোট হলেও বামন গ্রহ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট বড়। গ্রহটির দীর্ঘ কক্ষপথ রয়েছে। পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যকার দূরত্বের ১ হাজার ৬০০ গুণের বেশি দূরত্বে অবস্থান করছে গ্রহটি।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে প্লুটোকে বামন গ্রহের মর্যাদা দেওয়া হয়। সৌরজগতে সব মিলিয়ে আরও চারটি বামন গ্রহ রয়েছে। নতুন বামন গ্রহটি এই তালিকায় শিগগিরই যুক্ত করা হবে। জেমস ওয়েব, হাবল ও আলমা টেলিস্কোপের তথ্য বিশ্লেষণ করে গ্রহটির অবস্থান শনাক্ত করা বিজ্ঞানী স্যাম ডিন বলেন, বামন বস্তুটি সৌরজগতের আকর্ষণীয় আবিষ্কারের মধ্যে একটি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ২,৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) থেকে ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে শতবর্ষী এ শিক্ষায়তনের চেহারা পাল্টে যাবে।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রতিষ্ঠান, জাতিকে যার একাডেমিক দিক থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিগত সময়ে আমাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এবার সে বঞ্চনার অবসান ঘটবে।’

গত রোববার একনেক সভায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদন করা হয়। ২০৩০ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি একাডেমিক ভবন, ২ হাজার ৬০০ ছাত্রের জন্য ৪টি এবং ৫ হাজার ১০০ ছাত্রীর জন্য ৫টি আবাসিক হল নির্মাণ করা হবে। শিক্ষকদের জন্য দুটি ও কর্মকর্তাদের জন্য আরও দুটি আবাসিক ভবন এবং পাঁচটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, প্রকল্পের আওতায় জলাধার ও সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি বিদ্যমান সার্ভিসলাইন মেরামত ও একটি খেলার মাঠের উন্নয়ন করা হবে। সবুজায়নে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ছয় কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ৮ শতাংশ জায়গা বাড়বে বলে জানান তিনি।

উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘এই টাকা জনগণের করের টাকা। আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। এটি শুধু অবকাঠামোর জন্য নয়, একাডেমিক পরিবেশকে দৃঢ় করতেও কাজে লাগবে।’

নিয়াজ আহমেদ খান আরও বলেন, ‘আমাদের বর্তমানে মাত্র ৪০ শতাংশ আবাসন আছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আরও ১৮ শতাংশ যোগ হবে। এরপরও আবাসনসংকট থাকবে, তাই ভবিষ্যতে আবারও প্রস্তাব জানানো হবে।’

প্রকল্পে নির্মিতব্য স্থাপনাগুলো হলো কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশের ভবন ভেঙে ১২ তলা ও ৬ তলা দুটি ভবন, আইএসআরটি ও ফার্মেসি বিভাগের জন্য ১০ তলা ভবন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে ৩ তলা ভবন, চারুকলা অনুষদের পুরোনো ভবন ভেঙে ৫ তলা একাডেমিক ভবন, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে ১০ তলা এমবিএ টাওয়ার, প্রেস বিল্ডিং ও নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে দুটি একাডেমিক ভবন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, সূর্যসেন, শহীদুল্লাহ, মুহসীন ও কুদরাত-ই-খুদা হলে সম্প্রসারণ ভবন, ছাত্রীদের জন্য শাহনেওয়াজ, শামসুন নাহার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে ১০-১৫ তলা ভবন, প্রতিটি হলে ২০টি ফ্ল্যাটসহ ১১তলা শিক্ষক কোয়ার্টার, সহ-উপাচার্যের বাংলো, ১৫ তলা আবাসিক ভবন, ডাকসু মাল্টিপারপাস ভবন, প্রশাসনিক ভবনের উত্তর-পশ্চিমে ২০ তলা এবং দক্ষিণ-পূর্বে ৪ তলা ভবন, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গ্যালারি, বাস পার্কিং, অফিস, ডরমিটরি, ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার ভবন, ৪ তলা মসজিদুল জামিয়া কমপ্লেক্স, জলাধার সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধন, সড়ক, সার্ভিসলাইন, ২৪ হাজার ৮২০ মিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ