চালক এখন পরিবহননেতা, দুর্ঘটনার সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন ‘তাঁর বহিরাগত সহকারী’
Published: 14th, June 2025 GMT
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বর্জ্য পরিবহনের পরী-১০২৪ নম্বরের কনটেইনার ক্যারিয়ার গাড়িটির চালক আনোয়ার হোসেন। এ গাড়ি দিয়ে মগবাজার, মিরপুর-১৪ ও আদাবর এসটিএস (অস্থায়ী বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র) এবং রাইনখোলা এসটিএস থেকে একটি করে মোট চারটি ট্রিপে বর্জ্য আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে নেওয়া হয়।
প্রতিদিনের মতো রাতের বর্জ্য নেওয়ার কাজ শেষে বুধবার সকালে গাড়িটি নেওয়া হচ্ছিল ধলপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পার্কিংয়ের জায়গায়। ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার হয়ে পার্কিংয়ের জায়গায় পৌঁছানোর আগেই দুর্ঘটনায় পড়ে ওই গাড়ি। সড়কের পাশে বর্জ্য রাখার কনটেইনারে সজোরে ধাক্কা লেগে গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। পরে আরেকটি গাড়ি এনে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটিকে ধলপুরের পার্কিংয়ে নেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আনোয়ার চালক থেকে বনে যান পরিবহননেতা। তাঁর পদবি এখন ঢাকা উত্তর সিটির পরিবহন চালক শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ পদের ক্ষমতাবলে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নিজে না চালিয়ে তাঁর নামে বরাদ্দ থাকা গাড়িটি বহিরাগত ওই সহকারীকে দিয়ে চালাতেন।ঢাকা উত্তর সিটির একাধিক কর্মকর্তা ও চালক বলেছেন, দুর্ঘটনার পর থেকেই ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কারণ, তখন গাড়িটি চালাচ্ছিল বহিরাগত একজন। কিশোর বয়সী ওই ছেলের নাম মো.
পরিবহননেতা হয়ে দাপট
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আনোয়ার চালক থেকে বনে যান পরিবহননেতা। তাঁর পদবি এখন ঢাকা উত্তর সিটির পরিবহন চালক শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ পদের ক্ষমতাবলে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নিজে না চালিয়ে তাঁর নামে বরাদ্দ থাকা গাড়িটি বহিরাগত ওই সহকারীকে দিয়ে চালাতেন।
ঢাকা উত্তর সিটির আরও অনেক চালকের বিরুদ্ধে এভাবে বহিরাগত সহকারীকে দিয়ে গাড়ি চালানোর অভিযোগ রয়েছে। কয়েক দিন আগে গত শনিবার ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায়ও বর্জ্য পরিবহনের কাজ ফেলে ঢাকা উত্তর সিটির বর্জ্য পরিবহনের গাড়ির একজন অপারেটর ও চারজন চালক প্রশাসকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে গত সোমবার ‘বর্জ্য সরানোর কাজ ফেলে চালক-অপারেটররা ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে’ শিরোনামে প্রথম আলো অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কথা হয় দুর্ঘটনার সময় গাড়ি চালানো কিশোর মারুফের বাবা মোহাম্মদ আক্কাসের সঙ্গে। দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সঠিকটা বলতে পারি না। সকালে গিয়ে দেখেছি (ধলপুর পার্কিংয়ে) গাড়িটা ঢাইকা রাখা হয়েছে।’ মারুফের অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মারুফরে অহনতরি দেখতাসি না। ওই যে ডরাইয়া কই গেছে, ওরে পাইতাসি না। ওয় কি ব্যথা পাইল, না কি—এ পর্যন্ত ওরেই পাই নাই।’
সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটিউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন র সহক র ক বর জ য
এছাড়াও পড়ুন:
নিউ ইয়র্কে নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল ম্যানহাটনে একটি বহুতল অফিসে বন্দুক হামলায় নিহত হয়েছেন নিউ ইয়র্ক পুলিশের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬)। জানা গেছে, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসী ছিলেন। খবর রয়টার্সের।
নিহত কর্মকর্তা দিদরুল ইসলামকে একজন ‘বীর বাংলাদেশি অভিবাসী’ হিসেবে উল্লেখ বর্ণনা করেছেন নিউ ইয়র্কের মেয়র এবং নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার। তারা বলেছেন, ওই কর্মকর্তা নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে অন্যদের জীবন রক্ষা করেছিলেন।
সোমবার ম্যানহাটনের মিডটাউন অফিস টাওয়ারের ভেতরে এক বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬) সহ চারজনকে হত্যা করে। হামলাকারী পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
পুতিনকে এবার ১২ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প
নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৪
নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “ভয়াবহ একটি বন্দুক সহিংসতার ঘটনায় আমরা চারটি প্রাণ হারিয়েছি, যার মধ্যে নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের একজন সদস্য ‘অফিসার ইসলাম’ রয়েছেন।
অ্যাডামস জানান, নিহত অফিসার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নিউ ইয়র্ক পুলিশে কর্মরত ছিলেন এবং তিনি বাংলাদেশ থেকে আসা একজন অভিবাসী।
মেয়র বলেন, “হামলার সময় অফিসার ইসলাম অন্যদের জীবন রক্ষা করছিলেন, তিনি নিউ ইয়র্কবাসীদের রক্ষা করছিলেন। তিনি এই শহরকে ভালোবাসতেন এবং আমরা যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই বলেছেন যে, তিনি একজন সৎ মানুষ ও ঈশ্বরে বিশ্বাসী ব্যক্তি ছিলেন।”
মেয়র আরো জানিয়েছেন, সোমবার রাতে তিনি অফিসর ইসলামের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।
মেয়র আরো বলেন, “আমি তাদেরকে বলেছি, অফিসার ইসলাম একজন একজন বীর এবং আমরা তার ত্যাগের প্রশংসা করি।”
নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ সংবাদ সম্মেলনে জানান, অফিসার ইসলাম বিবাহিত ছিলেন এবং তার দুটি সন্তান ছিল। তার স্ত্রী তৃতীয় সন্তানের মা হতে চলেছেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, “অফিসার ইসলাম নিজেকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিলেন। তিনি চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন, তাকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।”
ঢাকা/ফিরোজ