সিরাজগঞ্জে গাড়ির অপেক্ষায় কর্মস্থলে ফেরা মানুষ
Published: 14th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহার টানা ১০ দিনের ছুটি শেষে রবিবার (১৫ জুন) খুলছে অফিস-আদালতসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ছুটির শেষ দিন শনিবার (১৪ জুন) কর্মস্থল রাজধানী ঢাকায় ফিরছেন উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের হাজারো মানুষ। ফলে মহাসড়কে বেড়েছে যাত্রীদের ভিড়। চাহিদার তুলনায় যানবাহনের সংকট দেখা দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
আজ সকাল থেকে ঢাকা-রংপুর যমুনা সেতু সংযোগ সড়কের সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ ইউনিয়নের মুলিবাড়ি, কাঠালতলা, কড্ডার মোড়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
যাত্রীরা জানান, রাজধানীতে ফিরছে কর্মজীবী মানুষ ও তাদের পরিবার। ঈদের ছুটির শেষ দিন হওয়ায় মহাসড়কে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। যানবাহনের জন্য হাজারো মানুষ সড়কে অপেক্ষা করছেন। চাহিদার তুলনায় বাসের সংকট দেখা দিয়েছে। কড্ডার মোড় থেকে যমুনা সেতু পাড়ি দিতে ১৫ মিনিটের জায়গায় সময় লাগছে ২-৩ ঘণ্টা। এ কারণে প্রত্যেকটি বাস ফিরছে দেরিতে।
আরো পড়ুন:
টুঙ্গিপাড়ায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ৫ পরিবহনে জরিমানা
ঈদ শেষে রাজধানীতে ফিরছে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ, নেই যানজট
যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসের দেখা পাচ্ছেন না। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যেসব যাত্রীরা বাসের টিকিট কেটেছেন তারাও অপেক্ষায় আছেন গাড়ির। যারা সুযোগ পেয়েছেন তারা ট্রাকের ছাদে রওনা হয়েছেন।
কড্ডার মোড়ে অপেক্ষারত ঢাকারা একটি গার্মেন্টসের কর্মী ছাবিনা বলেন, “১০ দিনের ছুটিতে ঈদে বাড়ি এসেছিলাম। এখন কর্মস্থলে ফিরতে হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় এসেছি, বিকেল হয়ে যাচ্ছে; তারপরেও টিকিট পাইনি। কেউ কেউ দুই-তিনশ টাকা বেশি দিচ্ছে, তবুও গাড়িতে সিট পাচ্ছে না।”
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী শাহ-আলী বলেন, “প্রতিবারই এই সময় এমন হয়। এবার সমস্যা বেশি। আগেভাগে টিকিট কেটে না এলে এখন আর যাওয়ার উপায় নেই। অফিসে না গেলেও সমস্যা হবে।”
সয়দাবাদ এলাকার যাত্রী পারভিন খাতুন বলেন, “ঢাকায় মেয়ে পড়ালেখা করে। তাকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। ওর বাবা সরকারি চাকরি করে। সে ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ঢাকায় চলে গেছে। আগামীকাল থেকে মেয়ের স্কুল খোলা। ঢাকায় যাওয়ার কোনো বাস নেই। এখন পর্যন্ত টিকিট পায়নি। মেয়েকে নিয়ে গাড়ির অপেক্ষায় বসে আছি।”
সেবা লাইন বাসের চালক হাফিজুর রহমান বলেন, “অনেক বাস নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। উত্তরবঙ্গের বাকি রুটের সব বাসই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৩-৪ ঘণ্টা দেরিতে ঢাকায় পৌঁছাচ্ছে। যমুনা সেতুর দুই পারে যানজট থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”
সিরাজগঞ্জ-ঢাকা রুটে পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এসআই এন্টারপ্রাইজ কাউন্টার ম্যানেজার মো.
তিনি বলেন, “যেসব যাত্রী আগেই টিকিট কেটেছেন, তারাই আগে যাচ্ছেন। একটি বাস ঢাকায় গিয়ে ফিরে এসে যাত্রী নিয়ে আবারো রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে। আমরা বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া নিয়ে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছি।”
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন স র জগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।