ইরানে হামলায় কেবল সমর্থন নয়, ইসরায়েলকে উৎসাহও দিচ্ছে ভারত: প্রিয়াঙ্কা
Published: 14th, June 2025 GMT
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মানবাধিকার রক্ষায় আনা প্রস্তাবে ভারত ভোটদানে বিরত থাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের (বিজেপি সরকার) তীব্র সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস এমপি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি এই সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক ও হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন। খবর এএনআই
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে প্রিয়াঙ্কা লেখেন, এই সিদ্ধান্তের কোনও যৌক্তিকতা নেই। প্রকৃত আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের জন্য ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ানোর সাহস প্রয়োজন।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আরও বলেন- যখন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি পুরো জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন, তখন ভারত কেবল নীরব সমর্থকই থাকছে না, বরং ইসরায়েলের ইরানে হামলা এবং দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বকে হত্যার ঘটনাকে সমর্থন দিয়ে দেশটিকে উৎসাহিত করছে। এটি একটি দেশের সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক সব নীতিমালার পরিপন্থি।
তিনি লেখেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। একটি গোটা জনসংখ্যাকে অবরুদ্ধ করে অনাহারে মারা হচ্ছে, অথচ আমরা কোনও অবস্থান নিচ্ছি না—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই পদক্ষেপকে ভারতের বিরোধী উপনিবেশবাদী ঐতিহ্য থেকে করুণ পশ্চাদপসরণ হিসেবে আখ্যা দেন।
তিনি আরও বলেন- কীভাবে আমরা একটি জাতি হিসেবে আমাদের সংবিধানের নীতিমালা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যবোধ বিসর্জন দিতে পারি; যেগুলো শান্তি ও মানবতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের অবস্থান গড়ে তুলেছিল।
কংগ্রেস এই নেত্রী বলেন, ভারত অতীতে বারবার ন্যায়ের পক্ষে সাহসিকতা দেখিয়েছে। আজকের বিভাজিত বিশ্বে আমাদের উচিত মানবতার পক্ষে আওয়াজ তোলা, সত্য ও অহিংসার পক্ষে নির্ভয়ে দাঁড়ানো।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গাজায় অবিলম্বে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানে একটি স্থায়ী প্রস্তাব গ্রহণ করে। এতে ১৪৯টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, ১৯টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে এবং ১২টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়।
গত বছর শীতকালীন সংসদ অধিবেশনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে একটি ব্যাগ বহন করতে দেখা যায়, যাতে ‘Palestine’ লেখা ছিল এবং তাতে ফিলিস্তিনি সংহতির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত তরমুজের চিহ্নসহ বিভিন্ন প্রতীক ছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।