টয়োটার চেয়ারম্যান আবার নির্বাচিত
Published: 14th, June 2025 GMT
টয়োটা মোটরে আবার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আকিও টয়োডা। বিশ্বের শীর্ষ বিক্রিত গাড়ি উৎপাদক টয়োটার প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা সাকিচি টয়োডার নাতি আকিও টয়োডা। কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় তাঁকে আবার নির্বাচিত করা হয়। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম অনেক বিনিয়োগকারী তাঁর বিরোধিতা করেননি। তিনি গত বছর ৭২ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আকিও টয়োডা সর্বশেষ ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার দিয়ে আরেকটি প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণের জন্য প্রশ্নের মুখে পড়েন। অনেক বিনিয়োগকারী এরই মধ্যে টয়োটা মোটরের টয়োটা ইন্ডাস্ট্রিজকে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার দিয়ে কেনার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আপত্তি রয়েছে এই অধিগ্রহণে। টয়োটা মোটরের শেয়ারহোল্ডার আকিহিরো হোরিউচি বলেন, ‘টয়োটা ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পর্কে এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমে অনেক কিছু প্রকাশিত হয়েছে। আমার মনে হয়, অনেক শেয়ারহোল্ডার মনে করেছিলেন, তাঁরা অনেক কিছু জানেন। টয়োটা মোটর জাপানের সেরা কোম্পানি, আর আমি মনে করি, এটি আরও বৃদ্ধি পাবে।’
টয়োটা ইন্ডাস্ট্রিজ আগে টয়োডা অটোমেটিক লুম ওয়ার্কস নামে যাত্রা শুরু করে। ১৯২৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয় তাঁত তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই প্রতিষ্ঠানে একটি অটোমোটিভ বিভাগ স্থাপন করা হয়, যা পরে টয়োটা মোটর নামে পরিচিতি লাভ করে। টয়োটা মোটর একটি জটিল চুক্তির মাধ্যমে ফর্কলিফট–নির্মাতা টয়োটা ইন্ডাস্ট্রিজকে অধিগ্রহণ করার চেষ্টা করছে। চেয়ারম্যান টয়োডা তাঁর নিজস্ব অর্থের ১০০ কোটি ইয়েন সেখানে বিনিয়োগ করবেন বলে জানা গেছে।
জাপানের সবচেয়ে শক্তিশালী করপোরেট গ্রুপের পুনর্গঠনের জন্য এমন অধিগ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশি শেয়ারহোল্ডাররা প্রতিষ্ঠানের অন্তর্নিহিত মূল্য অবমূল্যায়িত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। গ্রুপের ওপর প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন। টয়োটা মোটরের ভাষ্যে, নতুন এই অধিগ্রহণ টয়োটা ইন্ডাস্ট্রিজকে স্বল্পমেয়াদি মুনাফার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সুযোগ দেবে। পুরো কোম্পানির মধ্যে গতিশীলতা বাড়বে।
কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতার কারণে আকিও টয়োডার অবস্থান বেশ নড়বড়ে দেখা যাচ্ছে। চেয়ারম্যানের ওপর সাম্প্রতিক বছরে শেয়ারহোল্ডারদের সমর্থন হ্রাস দেখা যায়। আকিও টয়োডা সমর্থন হ্রাসের কারণে তাঁর অবস্থান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করেন।
সূত্র: রয়টার্স
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইন ড স ট র জ রহ ল ড র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ