উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর অ্যাভিনিউতে বিজিএমইএ ভবন। রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠান টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিবের জানাজায় শোকাবহ পরিবেশ। প্রিয় মানুষকে চিরবিদায় জানাতে এসেছেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী, বন্ধু, পরিবারের সদস্য ও পরিচিতজন। শোক ও অশ্রুতে তারা রাকিবকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন। রাকিবের অসমাপ্ত কাজ ও স্বপ্ন এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেন সহকর্মীরা।
৯ জুন কানাডায় একটি লেকে ভ্রমণের সময় নৌকাডুবে মারা যান আবদুল্লাহ হিল রাকিব ও তাঁর বন্ধু বাংলাদেশ বিমানের ক্যাপ্টেন মো.
অশ্রুসজল চোখে রাকিবের কানাডাপ্রবাসী মেয়ে লামিয়া তাবাসসুম বলেন, ‘বাবা স্বপ্ন দেখতেন, দেখাতেন। তিনি যেসব স্বপ্ন আমাদের দেখিয়েছেন, যেসব কাজ রেখে গেছেন, আমরা যেন সুন্দরভাবে তা বাস্তবায়ন করতে পারি। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কানাডায় গিয়েছিলেন বাবা।’
রাকিব ও সাইফুজ্জামান ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাদের মরদেহ বিমানের একই ফ্লাইটে শুক্রবার রাতে ঢাকায় আনা হয়। জানাজা শেষে ঢাকায় বিমানবাহিনীর কবরস্থানে দু’জনকে সমাহিত করা হয়। তাদের সহকর্মী ও বন্ধুরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে অকালে দুটি স্বপ্ন বিদায় নিল।
রাকিবের সহকর্মীরা বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানিকে ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করার স্বপ্ন দেখতেন রাকিব। তারা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন বলে জানান।
উত্তরায় জানাজার আগে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আবদুল্লাহ হিল রাকিবের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর কাজ করেছি। সব সময়ই দেখেছি, তিনি নিজের পরিবার, বন্ধু, ব্যবসা ও বিজিএমইএকে সমান অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তৈরি পোশাকশিল্প খাতের যে কোনো সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি সামনে চলে যেতেন। রাকিবের দর্শন ছিল– সফলতার মাত্রা নেই। তবে একজন ব্যক্তি কতটা সফল, সেটি তাঁর কর্মযজ্ঞ দেখলে বোঝা যায়।’
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক বলেন, রাকিব উজ্জ্বল প্রদীপ। স্বপ্ন ছিল অনেক। ঝোড়ো হাওয়ায় সেই প্রদীপ নিভে গেছে। সবাই তাঁর জন্য দোয়া করবেন।
রাকিবের জন্য সবার কাছে দোয়া চান বিজিএমইএর সর্বশেষ নির্বাচনে বিজয়ী রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান। স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য দেন রাকিবের বড় ভাই আবদুল্লাহ হিল নকীব।
ক্যাপ্টেন সাইফুজ্জামানের সহকর্মীরা জানান, শুক্রবার তাঁর মরদেহ কানাডা থেকে ঢাকায় আনার সময় তাঁর সঙ্গে স্ত্রী, দুই মেয়ে, বোন এবং ভগ্নিপতি ছিলেন। মরদেহ পৌঁছার পর উপস্থিত পাইলটরা সহকর্মীর মরদেহে স্যালুট দেন। এর পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও পাইলটস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে মরদেহ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) মর্গে রাখা হয়। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর বনানীর ডিওএইচএসের বাসায়। বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি বাশারের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা হয়। সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারীসহ পাইলট, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এতে অংশ নেন। পরে জোহরের নামাজ শেষে ডিওএইচএস মাঠে একসঙ্গে ক্যাপ্টেন সাইফুজ্জামান ও রাকিবের জানাজা হয়। সাইফুজ্জামানকে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। একই কবরস্থানে দাফন করা হয় রাকিবকে। তাঁর বাবা বিমানবাহিনীর সদস্য ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বন ধ ত ব আবদ ল ল হ হ ল সহকর ম র র সহকর ম ব যবস মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যরাতে শাহরুখের বাড়ির সামনে ভক্তদের ভিড়
বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে এখনো দারুণ সরব। শুধু তাই নয়, বক্স অফিসেও ঝড় তুলছেন তিনি। রবিবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্ণ করলেন এই অভিনেতা। যদিও তা দেখে বোঝার উপায় নেই।
শনিবার (১ নভেম্বর) দিবাগত মধ্যরাত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সহকর্মী-ভক্তদের শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসছেন শাহরুখ খান। পাশাপাশি প্রিয় তারকাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে হাজার হাজার ভক্ত ছুটে যান তার বাড়ি মান্নাতের সামনে। এ মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়।
আরো পড়ুন:
শাহরুখের ব্যাপারে সাবধান করলেন জুহি চাওলা
শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?
সারা ভারত তো বটেই, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাহরুখ খানের ফ্যান ক্লাব রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্ত-অনুরাগীরা মুম্বাইয়ের মান্নাতের (বাড়ি) সামনে জড়ো হন। শাহরুখের জন্মদিন উপলক্ষে কলকাতা থেকে মুম্বাই পাড়ি দিয়েছেন প্রিন্স সিং ও তার দল।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে প্রিন্স সিং বলেন, “আমি কলকাতা থেকে আসছি। আমার সঙ্গে ‘এসআরকে ওয়ারিয়স’ টিম রয়েছে। ৩৩ ঘণ্টা ট্রেন জার্নি করে শাহরুখ খানকে একঝলক দেখার জন্য এখানে এসেছি। আশা করছি, আজকে তিনি একবারের জন্য হলেও দেখা দেবেন। আমরা নিশ্চিত, আজ অথবা কালকে তাকে দেখতে পাব। আমরা অনেক কিছু ম্যানেজ করে এখানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। কারণ হাজার হাজার মানুষ এখানে আসতে চাচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ আসতে দিচ্ছেন না।”
প্রিন্সের মতো হাজার ভক্ত-অনুরাগী মধ্যরাতে শাহরুখের বাড়ির সামনে জড়ো হন। কেউ প্রিয় অভিনেতার ছবি, কেউ প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মান্নাতের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন—“আমরা আপনাকে ভালোবাসি। শুভ জন্মদিন এসআরকে।”
তবে গতকাল রাতে শাহরুখের দেখা মেলেনি। কারণ শাহরুখ খান এখন বিলাসবহুল মান্নাতে বসবাস করেন না। গত মার্চের দিকে মান্নাত থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অভিজাত একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেন; সেখানেই বসবাস করছেন। কারণ মান্নাতে এখন সংস্কার কাজ চলছে। সংস্কার কাজ শেষ হতে দুই বছর লাগবে বলে জানা গেছে।
ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গতকাল রাতে শাহরুখ খান তার ৬০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন আলীবাগের বাসায়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী, ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবরা। এ তালিকায় রয়েছেন—ফারাহ খান, করন জোহর, রানী মুখার্জিসহ অনেকে।
ঢাকা/শান্ত