ঝালকাঠি সদর উপজেলার সংগ্রামনীল পুলিশ বক্স থেকে সারেঙ্গল বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে খানাখন্দে তৈরি হয়ে চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কোথাও কোথাও পিচ উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে কাদা-পানিতে পরিণত হয় সেসব স্থান। এতে প্রতিনিয়ত এই সড়ক দিয়ে চলচলকারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, সড়কটির আইডি নম্বর ৫৪২৪৩০১১। ২০০১-২০০২ অর্থবছরে আরডিপি-১৯ প্রকল্পের আওতায় সড়কের প্রথম চার কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে আরও কিছু অংশ নির্মাণ হলেও সর্বশেষ ২০১৮ সালে জিওবি মেইনটেনেন্স প্রকল্পে মাত্র এক কিলোমিটার সংস্কার করা হয়। তারপর থেকে আর কোনো সংস্কার কাজ হয়নি।
বেহাল এই সড়ক দিয়ে একটি ইউনিয়ন পরিষদ, একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন যাতায়াত করেন। বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে।
সারেঙ্গল এলাকায় বাসিন্দা মো.
তারুলী গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম রাসেল বলেন, “সড়কে একটি কালভার্ট রয়েছে যা এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, এর ওপর দিয়ে স্বাভাবিকভাবে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা মোটা কাঠের তক্তা দিয়ে অস্থায়ীভাবে ব্যবস্থা করেছি, যেন বড় কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।”
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সালাউদ্দিন সোহাগ বলেন, “স্কুলগামী শিশুদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। কেউ পড়ে গিয়ে আহত হয়, কেউ আবার ভিজে স্কুলে আসে। এই সড়ক শুধু সংস্কার করলেই হবে না, পুনঃনির্মাণ করতে হবে।”
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক শাহাজাহান মুন্সী বলেন, “কোরবানি ঈদের আগের দিন আমি এই রাস্তায় যাত্রী নিয়ে এসে দুর্ঘটনায় পড়ি। গাড়িতে থাকা বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে। অল্পের জন্য এই যাত্রায় বেঁচে গেছি। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার না করা হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
এ বিষয়ে ৪নং কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হেমায়েত উদ্দিন হিমু বলেন, “বিষয়টি আমরা বহুবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার। আশা করছি, দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
ঝালকাঠি এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, “সড়কটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
ঢাকা/অলোক/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন এই সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।
পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।
শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।
ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ