ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’
Published: 15th, June 2025 GMT
‘২ জুন কি পেলাম? কি পাওয়ার কথা ছিল? সালাম প্রশাসন!’- লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি- অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
সোমবার (১৬ জুন) বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিতব্য হতে যাওয়া সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভূক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকালের এ সভায় যেকোনোভাবে যেন ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো পাশ হয়, সেজন্যই তাদের এমন তোড়জোড়।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক
ছাত্রদলের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিবাদ ডুজার
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচন চায় না এবং এই পক্ষ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
অনশনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে শক্তিশালী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী বলার চেষ্টা করছে যে ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের দোসর আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পুরোপুরি সক্ষম নয়; সুতরাং ডাকসু নির্বাচন দেওয়া যাবে না।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব কি কেবল প্রশাসন-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের? কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল সংসদে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাসহ প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ব্যর্থতাগুলো লক্ষণীয়, সেগুলো ঘোচানোর জন্যই ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন।”
তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, ছাত্রলীগ যেভাবে হল নিয়ন্ত্রণ করা, দখলদারিত্ব কায়েম করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভিতর ক্ষমতার বলয় তৈরি করত-ঠিক এখনো আমরা এই প্রক্রিয়া দেখছি। আর এই প্রক্রিয়ার যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, তারাই মূলত ডাকসু নির্বাচনে বাঁধা দিতে চায়।”
এর আগে, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিন আমিন মোল্লার নেতৃত্বে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকজন শিক্ষার্থী।
গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।
তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।
আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেযতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।