‘২ জুন কি পেলাম? কি পাওয়ার কথা ছিল? সালাম প্রশাসন!’- লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি- অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সোমবার (১৬ জুন) বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিতব্য হতে যাওয়া সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভূক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকালের এ সভায় যেকোনোভাবে যেন ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো পাশ হয়, সেজন্যই তাদের এমন তোড়জোড়।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক

ছাত্রদলের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিবাদ ডুজার

ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচন চায় না এবং এই পক্ষ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে।

অনশনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে শক্তিশালী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী বলার চেষ্টা করছে যে ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের দোসর আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পুরোপুরি সক্ষম নয়; সুতরাং ডাকসু নির্বাচন দেওয়া যাবে না।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব কি কেবল প্রশাসন-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের? কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল সংসদে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাসহ প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ব্যর্থতাগুলো লক্ষণীয়, সেগুলো ঘোচানোর জন্যই ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন।”

তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, ছাত্রলীগ যেভাবে হল নিয়ন্ত্রণ করা, দখলদারিত্ব কায়েম করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভিতর ক্ষমতার বলয় তৈরি করত-ঠিক এখনো আমরা এই প্রক্রিয়া দেখছি। আর এই প্রক্রিয়ার যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, তারাই মূলত ডাকসু নির্বাচনে বাঁধা দিতে চায়।”

এর আগে, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিন আমিন মোল্লার নেতৃত্বে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকজন শিক্ষার্থী।

গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.

সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ ২ জুনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের ওয়াদা করলে অনশন ভাঙ্গেন তারা। সে সময় অনশন শেষে ইয়ামিনসহ দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছিল।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।

গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।

বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
  • সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন