খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
Published: 15th, June 2025 GMT
দেশের ব্যাংক-আর্থিক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে চলতি বছরের মার্চ শেষে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। ৩ মাস আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।
রবিবার (১৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ শেষে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এ সময় বিতরণ করা ঋণের ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা বা ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশই খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০১ কোটি টাকা।
আরো পড়ুন:
ঈদের আমেজ ব্যাংক পাড়ায়, গ্রাহক কম
ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি: নিরাপত্তাপ্রহরীর দোষ স্বীকার
আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩০ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। তার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে খেলাপি ঋণ। ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।
তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। সরকার পরিবর্তনের পর খেলাপির প্রকৃত তখ্য বেরিয়ে আসে। সেই হিসেবে চলতি মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা।
চলতি মার্চ শেষে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির পরিমাণ ৬ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির মধ্যে ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা বা ৯০ দশমিক শূণ্য ৭ শতাংশই মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে, যা আদায় করার সম্ভবনা নেই।
এদিকে, মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ১০ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপির মধ্যে ২ লাখ ২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা বা ৭৬ শতাংশই মন্দ ঋণ, যা আদায় করার সম্ভাবনা নেই। এ সময় বিদেশি ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ করা হযেছে ৬৭ হাজার কোটি টাকা, খেলাপির পরিমাণ ৩ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা।
এর আগে গভর্নর ড.
আর রবিবার গভর্নর বলেছেন, “পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক শিগগিরই একীভূত করবে। তবে একীভূত করা ব্যাংকগুলোর কর্মীদের চাকরি ঠিক থাকবে।”
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীরা নামে বেনামে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কম দেখানো হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর খেলাপির প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে এসেছে।
ঢাকা/এনএফ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঋণ ৪ ল খ ২০ হ জ র খ ল প র পর ম ণ র পর ম ণ ছ ল ঋণ ব তরণ ব তরণ কর ঋণ র প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কোটাবিরোধী আন্দোলনকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, র্যাগিংসহ নানা অভিযোগ এনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন ১০ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব ও সনদপত্র বাতিল করেছে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃতরা হলেন, বিশ্বজিৎ শীল, সাইদুজ্জামান পাপ্পু, জাহাঙ্গীর আলম অপু, মহিউদ্দিন মুন্না, হাসু দেওয়ান, আকিব মাহমুদ, আবির, অন্তু কান্তি দে, জাকির হোসেন ও রিয়াদ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি ড. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে যাদের শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে, তাদের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। যারা এখনো অধ্যয়নরত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ছাত্রলীগের বিচারসহ ৯ দাবি জবি ছাত্রদলের
রাবিতে প্রভাষক হলেন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা, ক্ষোভ
ভিসি আরো জানান, ২০২৪ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানান অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়, যা সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদিত হয়েছে। গত পরশু তাদের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বহিষ্কৃত ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্ট মাসে এমন কোনো ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটেনি, যে কারণে আমাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। ক্যাম্পাসে কোটা প্রত্যাহার দাবিতে একদিন বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে প্রোগ্রাম হয়েছে, সেদিনও কিছু হয়নি। আমরা সম্পূর্ণভাবে ভিসি ও ছাত্রদল-শিবিরের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একদিন নিশ্চয়ই এই অবিচারের বিচারও হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের কিছু বলার নেই। শুধু জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনাই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক ঘটনাও আছে অভিযোগে। তারই প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’’
২০১৫ সালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত কমিটি দেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের ব্যানারে নানান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যেত। বহিষ্কৃত ও সনদ বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজন ৫ আগস্টের আগে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কিছু দিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা বহিষ্কৃত ১০ জনের একজন বিশ্বজিৎ শীল।
ঢাকা/শংকর/বকুল