ঠান্ডা হয়ে গেলে খাবার আবার গরম করার অভ্যাস অনেকের। অনেকেরই হয়তো জানা নেই কিছু খাবার আবার গরম করলে তা বিষাক্ত হতে পারে। এতে থাকা পুষ্টি উপাদান নষ্ট করার পাশাপাশি, বারবার গরম করলে মাঝে মাঝে ক্যান্সারসহ বিপজ্জনক রোগের ঝুঁকি বাড়ে। কোন কোন খাবার আবার গরম করা ঠিক নয় জেনে নিন-
চা : চা বারবার গরম করলে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর হতে পারে। বারবার গরম করলে এতে উপস্থিত ট্যানিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েড বৃদ্ধি পায়, যা পেটে গ্যাস, অ্যাসিডিটি এবং হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়াও, পুনরায় গরম করা চায়ের স্বাদ তেতো এবং তীব্র হয়ে ওঠে। এটি শরীরে বিষাক্ত উপাদানও বাড়াতে পারে।
পালং শাক, বিট এবং মসুর ডাল : পালং শাক, বিট এবং অন্যান্য নাইট্রেট সমৃদ্ধ সবজি কখনই আবার গরম করা উচিত নয়। এটি করলে এতে উপস্থিত নাইট্রেটগুলি নাইট্রাইট এবং নাইট্রোসামিনে রূপান্তরিত হয়, যা কার্সিনোজেনিক বলে বিবেচিত। এ কারণে এসব খাবার তাজা খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ভাত : যদি রান্না করা ভাত দীর্ঘ সময় ধরে ঘরের তাপমাত্রায় রাখা হয় এবং তারপর আবার গরম করা হয়, তাহলে এতে ব্যাসিলাস সেরিয়াস নামক একটি বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। এর ফলে খাদ্যে বিষক্রিয়া, বমি এবং ডায়রিয়া হতে পারে। এ কারণে বেঁচে যাওয়া ভাত দ্রুত ফ্রিজে রাখুন এবং দ্রুত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
পনির : পনির বারবার গরম করলে কেবল এর গুণাগুণই নষ্ট হয় না, এতে উপস্থিত প্রোটিনও ক্ষতিকর আকার ধারণ করতে পারে। এর ফলে হজমের সমস্যা এবং পেটের জ্বালাভাব হতে পারে।
রুটি : যদি রুটি বারবার গরম করা হয়, তাহলে এতে উপস্থিত স্টার্চ বিষাক্ত যৌগে পরিণত হতে পারে। মাইক্রোওয়েভে বা প্যানে গরম করা রুটি শরীরে কোনও পুষ্টি সরবরাহ করে না; বরং এটি বদহজম, অম্বল এবং গ্যাসের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সুস্থ থাকতে আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং আমরা যে খাবার খাই দুটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বারবার খাবার গরম করা একটি সাধারণ অভ্যাস, তবে সামান্য অসাবধানতাও বড় ধরনের অসুস্থতার কারণ হতে পারে। যতটা সম্ভব খাবার টাটকা খেতে চেষ্টা করুন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ সালের হজের রোডম্যাপ ঘোষণা, ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন
২০২৬ সালের হজ কার্যক্রমের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সৌদি আরব সরকার। আগামী বছর হজে অংশ নিতে আগ্রহী বাংলাদেশি যাত্রীদের চলতি বছরের ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এর পর ৯ নভেম্বর সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় হজচুক্তি সই হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এই রোডম্যাপ হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব), হজ এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে ১৫ জুন পাঠানো হয়েছে। এর আগে ৮ জুন রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১০ জুলাই হজ কোটা ঘোষণা করবে সৌদি সরকার। ২৬ জুলাই থেকে ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্যাম্প-সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষণ ও অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ৯ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চলতি হজ মৌসুমের ব্যবহৃত ক্যাম্পগুলো আগামী হজ মৌসুমের জন্য পুনর্ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।
প্যাকেজ, আবাসন, পরিবহন চুক্তি, এয়ারলাইন্স নির্ধারণসহ ফ্লাইট সূচি চূড়ান্ত করতে হবে ২৪ আগস্টের মধ্যে। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের তথ্য নুসুক মাসারে আপলোড এবং গ্রুপ গঠন শুরু করতে হবে। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁবু ভাড়া ও মাশায়ের প্যাকেজ বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠাতে হবে। আগামী বছরের ৪ জানুয়ারির মধ্যে সেবা সংস্থার সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি এবং ফ্লাইট সূচি নির্ধারণ করতে হবে। ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মক্কা-মদিনার হোটেল ও পরিবহন-সংক্রান্ত অর্থ স্থানান্তর প্রক্রিয়া, যা চূড়ান্ত করতে হবে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
হজযাত্রীদের ভিসা দেওয়া শুরু হবে ৮ ফেব্রুয়ারি এবং চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রা শুরু হবে ১৮ এপ্রিল।
২০২৬ সালের হজে সর্বোচ্চ দুটি সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করার সুযোগ থাকবে। সব ধরনের চুক্তি এবং অর্থ প্রদান ‘নুসুক মাসার’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে হবে। এর বাইরে কোনো অর্থ দেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। কোরবানির অর্থও এই প্ল্যাটফর্মে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের খাবার-সংক্রান্ত চুক্তি করতে হবে সৌদি ক্যাটারিং কোম্পানির সঙ্গে। তাঁবু, সেবা প্যাকেজ এবং পরিবহন খরচ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মেডিকেল ফিটনেস (শারীরিক সুস্থতা) ছাড়া কেউ হজে অংশ নিতে পারবেন না। হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতা, লিভার সিরোসিস, নিউরোলজিক্যাল বা মানসিক সমস্যা, কেমোথেরাপি/রেডিওথেরাপি নেওয়া ক্যান্সার রোগী এবং ঝুঁকিপূর্ণ অন্তঃসত্ত্বা নারীরা হজ নিবন্ধনের অযোগ্য বিবেচিত হবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।