মাঠের খেলায় কুলিয়ে উঠতে না পেরে স্লেজিংয়ের নোংরা কৌশল অবলম্বন করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়রা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। চতুর্থ দিন সকালে খেলা শুরুর সময় ফাইনাল জেতার জন্য প্রোটিয়াদের প্রয়োজন ছিল ৬৯ রান, হাতে ৮ উইকেট। তখন ‘চোকার্স’ শব্দটি ব্যবহার করে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের স্লেজিং করে অসিরা।
তৃতীয় উইকেটে ১৪৭ রান যোগ করে ২৮২ রান তাড়ায় বড় ভূমিকা রাখেন মার্করাম ও বাভুমা জুটি। চতুর্থ দিন সকালে তারা দু’জন যখন খেলা শুরু করেন, তখন নাকি অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়রা তাদের মনে করিয়ে দেন, ‘তোমরা চোকার্স। বাকি কয় রান তোলার আগেই অলআউট হয়ে যাবে।’
তবে এবার আর চাপের মুখে ভেঙে পড়েনি প্রোটিয়ারা। ৫ উইকেটে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ২৭ বছর পর আইসিসির কোনো ট্রফি জিতল তারা। ১৯৯৮ সালে ঢাকায় মিনি বিশ্বকাপ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) ছিল তাদের শেষ ট্রফি। লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শেষ মুহূর্তে তাদের ঘায়েল করতে অসিরা যে চোকার্স শব্দটি ব্যবহার করেছে, সেটা বাভুমা নিশ্চিত করেছেন, ‘আমাদের চোকার্স (চাপের মুখে ভেঙে পড়া দল) বলার ব্যাপারটা আজ সকালে (শনিবার) আবার উঠল। তাদের এক খেলোয়াড় বলেছিল, আমরা ৬০ রান তোলার আগেই ৮ উইকেট হারাতে পারি। আমি সেটা স্পষ্টভাবে শুনেছি।’
আরও একটি সাক্ষাৎকারেও অসিদের চোকার্স বলে স্লেজিংয়ের বিষয়টি তুলে ধরেন বাভুমা, ‘আমাদের ব্যাটিংয়ের সময় অস্ট্রেলিয়ানরা এই শব্দটি বলে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমরা এসব অতিক্রম করে ফাইনাল জিতে ইতিহাস গড়েছি।’
অস্ট্রেলিয়ানদের স্লেজিংয়ের সময় নাকি প্রতি ওভার শেষে মার্করাম এগিয়ে এসে তাঁকে অনুপ্রাণিত করতেন। ১৩৬ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলা মার্করাম বলতেন, ‘আমাদের মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। কোনোভাবেই উত্তেজিত হওয়া চলবে না।’
মার্করাম তো এ চোকার্স শব্দটি আর শুনতেই চান না। ৩০ বছর বয়সী এ ব্যাটারকে অবশ্য অনেক দিন তাড়া করে বেড়িয়েছে ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপের দুঃসহ স্মৃতি। বারবাডোজে ভারতের বিপক্ষে সেই ফাইনাল হাতের মুঠোয় আসার পরও অবিশ্বাস্যভাবে ৭ রানে হেরে গিয়েছিলেন তারা। সেই ফাইনালে ৪ রানে আউট হয়েছিলেন মার্করাম। শুক্রবার রাতেও নাকি বিষয়টি তাড়া করেছে তাঁকে, ‘আগের রাতে আমি টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা অনেকবার ভেবেছি। সেদিন আউট হওয়ার পর কী অসহায় না লেগেছিল! তবে সেটা এবার অনুপ্রেরণাও জুগিয়েছে যে আমাকে উইকেটে টিকে থাকতে হবে, খেলা শেষ করে আসতে হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র কর ম আম দ র ফ ইন ল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’