ময়মনসিংহ নগরীতে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়া এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া মুঠোফোন ও ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে তোলা টাকা।

ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুল হক (৩১) নগরের ছোট বাজার এলাকার আল–আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হকের ছেলে।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ব্যাংকের কাজ শেষে মাসকান্দা এলাকায় যান মনিরুল হক। কেনাকাটা শেষে বাসায় ফেরার সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে নামার পর একটি দল তাঁর পথরোধ করে। ছিনতাইকারীরা তাঁকে চাকু দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র দিতে বলে। প্রথমে তিনি রাজি না হলে মারধর শুরু করে। পরে সঙ্গে থাকা আড়াই হাজার টাকা, মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও এতে থাকা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ছিনিয়ে নেয়।

মনিরুল হক বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ডও নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আমি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা চলে যায়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দিলে টহলরত পুলিশ আমার কাছে এসে ঘটনার বিস্তারিত শোনে।’

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নগরের বলাশপুর নয়াপাড়া এলাকার শরাফ উদ্দিনের ছেলে তানভির হোসেন ওরফে অন্তর (২৫), শম্ভুগঞ্জের রাঘবপুর এলাকার আদাস আলীর ছেলে মো.

মিলন (২৫) ও একই গ্রামের সাদিকুল ইসলামের ছেলে সাব্বির আহমেদকে আটক করা হয়েছে। গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে দেড়টার মধ্যে তাঁদের নিজ নিজ এলাকা থেকে আটক করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, তানভির হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি মামলা ও মিলনের বিরুদ্ধে একটি ছিনতাইয়ের মামলার তথ্য আছে থানায়।

ছিনতাইয়ের শিকার মনিরুল হক বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

নগরের ৩ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল হোসেন বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তার ছিনতাইকারীর কবলে পড়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই এলাকায় ছিনতাই কাজে জড়িত ব্যক্তিদের ছবি দেখালে ব্যাংক কর্মকর্তা দুজনকে চিনতে পারেন। পরে একে একে তিনজনকে আটক করা হয়। এ চক্রের আরও সদস্য আছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, থানায় মামলা শেষে আজ মঙ্গলবার পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে ছিনতাইকারী দলের তিন সদস্যকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক কর মকর ত এল ক র ছ নত ই

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু, পুলিশ স্বাভাবিক মৃত্যু বললেও ‘অস্বাভাবিক’ বলে প্রচার

ময়মনসিংহে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা মো. রুহুল আমিন আকাশের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বল জানিয়েছে পুলিশ ও তার পরিবার। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলে প্রচার করা হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, রুহুল আমিন আকাশ রোববার রাতে ময়মনসিংহ নগরীতে তার বোন নাফিয়া আক্তারের বাসায় বেড়াতে আসেন। সোমবার সকাল ১০টার দিকে দিঘারকান্দা শান্তিনগর আলহাজ্ব সিরাজ আলী জামে মসজিদের সামনে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান। এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এর আগে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা ঈসমাইল হোসেন এবং গৃহকর্মী মোছা. বকুল আক্তার দ্রুত এগিয়ে এসে ছাত্রলীগ নেতা আকাশের মাথায় পানি ঢেলে এবং পরে উদ্ধার করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। তবে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের ভগ্নিপতি বোম্বের সুইটস কোম্পানির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. আনিছুর রহমান সমকালকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মাত্র দেড় মাস আগে রুহুল আমিন আকাশ বিয়ে করেছিলেন। তার স্ত্রী গাজীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন। 

আনিছুর রহমান বলেন, ‘গতরাতে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমার বাসায় বেড়াতে আসে। সন্ধ্যায় তার শারীরিক অবস্থার একটু খারাপ হলে সে বমি করে। এরপর রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে হাসপাতালে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়। পথে সে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। পরে বিষয়টি হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয়।’

এদিকে, কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন জানান, ‘এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তবে একটি মহল এই মৃত্যুর ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।’

তবে পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বললেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা নিজ নিজ ফেসবুক পোস্টে শোক প্রকাশের পাশাপাশি এই মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক এবং হত্যাকাণ্ড’ বলে দাবি করছেন।

সোমবার বিকেল পৌনে ৪টায় ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্ট লীগ’ নামের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে দাবি করা হয়, ‘ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন আকাশ এর মৃতদেহ পাওয়া গেছে রাস্তার পাশে। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতা রুহুল আমিন আকাশ এর অপমৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানায়।’ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার বিদেহী আত্মার শান্তি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত মো. রুহুল আমিন আকাশ নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেলায়াতলী গ্রামের বাসিন্দা মো. নওয়াব আলীর ছেলে। তিনি গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশে একটি দলের সঙ্গে বসে কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন না
  • বন্ধুকে খুঁজতে এসে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী
  • লাকসামে ‘প্রেমিককে’ খুঁজতে যাওয়া তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩
  • ‘একটি দলের সঙ্গে বিদেশে বসে কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন না’
  • নিখোঁজ কিশোরের লাশ মিলল সেপটিক ট্যাংকে 
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু, পুলিশ স্বাভাবিক মৃত্যু বললেও ‘অস্বাভাবিক’ বলে প্রচার
  • মোবাইল চুরির সন্দেহে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩
  • পাবনায় মুঠোফোন চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
  • বগুড়ায় মেয়ে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩