‘সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে’
Published: 17th, June 2025 GMT
সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত স্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট (SEA) সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “সুন্দরবন আমাদের একটাই। সবাই মিলে সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে।”
আরো পড়ুন:
খুলনায় উদ্ধারকৃত অজগর সুন্দরবনে অবমুক্ত
সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার, নৌকা জব্দ
তিনি কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির পাশাপাশি একটি কার্যকর সমন্বয় কাঠামো (কো-অর্ডিনেশন মেকানিজম) গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তার মতে, সুন্দরবনের কোনো ঝুঁকি চিহ্নিত হলে বন অধিদপ্তর ও পরিবেশ অধিদপ্তর তা দ্রুত উত্থাপন করবে এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোর পরিবেশগত প্রভাব মনিটরিং করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে কী কী কাজ করা যায়, তা নির্ধারণের জন্য মন্ত্রণালয়কে একটি সুস্পষ্ট ওয়ার্কপ্ল্যান প্রণয়নের আহ্বান জানান।
সুন্দরবন সংরক্ষণে ‘বটম-আপ প্রসেস’ বাস্তবায়নের ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন এবং বলেন, “অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে বন বিভাগের দক্ষতা বাড়াতে হবে।”
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.
এর আগে উপদেষ্টা বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বোর্ডের সভায়ও সভাপতিত্ব করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন স ন দরবন উপদ ষ ট পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই ‘জলদস্যু’ আটক
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ’জলদস্যুকে’ আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার উপকুলবর্তী যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় আটক দুই জলদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা।
এর আগে সোমবার রাত আটটার দিকে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে উঠে আসার সময় স্থানীয়দের ধাওয়ার মুখে অপর কয়েক সহযোগিসহ এসব জলদস্যুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আটকরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজী এবং আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম।
আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন ও আকবর আলীসহ স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত পাঁচ/সাত জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে যায়। এসময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তারা মাইক্রো বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের জন্য কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নাম-পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় যতীন্দ্রনগর বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজীরকে আটকের পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশি তৎপর না। বরং নজীর, তার ভাই নবাব ও ছেলে আব্দুর রহিম এবং মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার আছাদুলসহ কয়েকজনকে নিয়ে জোনাবের নামে সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত। সোমবার রাতে নজীর আলীকে আটকের পরপরই তার ছেলে আব্দুর রহিম ও ভাই নবাব ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।
আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদ্যদের উপরে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যেয়ে মাছ শিকারের পাশাপাশি তারা পরিচিত জলদস্যুদের উপরে নিচে উঠানামার কাজ করেন বলেও দাবি তার। উপরে উঠে যাওয়া দুই জলদস্যু উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি তার নৌকার মধ্যে রেখে যায় বলেও তিনি দাবি করেন।
দিদারুল জানান, তিনি নজীর আলীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করারসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। লোকারয়ে পৌঁছে দেওয়া দুই জলদস্যুকে সুন্দরবনের পুটেরদুনে এলাকা থেকে নিয়ে আসার কথাও নিশ্চিত করেন তিনি। তবে তার কাছে মোবাইলের পাওয়ার ব্যাঙ্কসহ নানান সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন।
এদিকে অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটকের বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। আটকের পর উভয়কে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।