Samakal:
2025-09-17@21:27:06 GMT

শুভস্য শীঘ্রম

Published: 17th, June 2025 GMT

শুভস্য শীঘ্রম

আগামী রমজানের পূর্বেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সংস্কারকার্য আগাইয়া লইতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে যেই নির্দেশ দিয়াছেন, তাহাকে আমরা স্বাগত জানাই। মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সরকারপ্রধান এই নির্দেশ প্রদান করেন। গত শুক্রবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত ড.

মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকে আগামী নির্বাচনের দিনক্ষণ লইয়া উভয়ের মধ্যে ঐকমত্য হইয়াছে বলিয়া উক্ত বৈঠক-পরবর্তী যৌথ বিবৃতিতে যাহা বলা হইয়াছিল, প্রধান উপদেষ্টার সোমবারের নির্দেশনা উহাকেই জোরালো ভিত্তি দিল। নির্বাচনের সময় লইয়া ইতোপূর্বে বিএনপিসহ দেশের অধিকাংশ দল এবং জনপরিসরে যেই সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি হইয়াছিল, এই ঘটনার পর তাহার বিলক্ষণ অবসান ঘটিবে। 

আমরা জানি, বিএনপিসহ দেশের সিংহভাগ দল গত কয়েক মাস ধরিয়া আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাইয়া আসিতেছিল। গত ৩ জুন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহিত রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় ধাপের প্রথম বৈঠকেও দলগুলি সেই দাবি  পুনর্ব্যক্ত করে। কিন্তু ঈদুল আজহার প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণা সম্পর্কে বিশেষত বিএনপি ও তাহার সমমনা দলগুলি অসম্মতি ব্যক্ত করে। শুধু উহাই নহে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমিরের নির্বাচনের সময়-সংক্রান্ত সর্বশেষ দাবির সহিত প্রধান উপদেষ্টার উক্ত ঘোষণা মিলিয়া যাইবার বিষয়ও বিএনপিসহ কোনো কোনো দল উল্লেখ করে। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির প্রধান উপদেষ্টার উক্ত ঘোষণাকে সমর্থন প্রদানও জন্ম দিয়াছিল নানামুখী আলোচনার। বিএনপি নেতৃবৃন্দ এইরূপ হুঁশিয়ারিও প্রদান করেন, নির্বাচনের কাঙ্ক্ষিত পথনকশা না পাইলে সরকারকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখিবার বিষয়ে দলটি ভিন্ন চিন্তা করিতে পারে। এমনই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরকালে তাঁহার সহিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকে দুই পক্ষই নীতিগতভাবে একমত হয়– ২০২৬ সালের রমজানের পূর্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। 

ইহা সত্য, প্রায় সকল দল উক্ত লন্ডন ঘোষণাকে স্বাগত জানাইলেও উহা সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির প্রতিক্রিয়ায় বেশ নেতিবাচক বিষয় দৃষ্ট। তবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত উহাদের পৃথক বিবৃতিতে ইহা স্পষ্ট, তাহাদের অসন্তোষের কারণ যতটা নির্বাচনের সময় নির্ধারণে কেবল বিএনপির সহিত সরকারপ্রধানের বৈঠক ঘিরিয়া, ততটা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান-সংক্রান্ত নহে। জামায়াত নেতারা বরং মনে করাইয়া দিয়াছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ব্যাপারে তাহারাই সর্বপ্রথম অভিমত দিয়াছিলেন। 
আমরা মনে করি, লন্ডন বৈঠক লইয়া উক্ত দুই দলের মধ্যে যতটুকু মান-অভিমান সৃষ্টি হইয়াছে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই তাহা দূর করা সম্ভব। সংস্কারের বিষয় ও প্রক্রিয়া লইয়া অন্তর্বর্তী সরকারের সহিত অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো মতভেদ থাকিলে উহাও একই প্রক্রিয়ায় সমাধান করিতে হইবে। তবে এই আলোচনার নামে কোনোভাবেই নির্বাচনকে আর বিলম্বিত করা যাইবে না। আগামী রমজানের পূর্বে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগেই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হইতে হইবে। 

অস্বীকার করা যাইবে না, বিগত ১০ মাসে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদ্রূপ শান্ত হয় নাই, তদ্রূপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও দৃশ্যমান উন্নতি ঘটে নাই। বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, মব সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য অব্যাহত। ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ খাতেও সুখবর বিরল। দেশি-বিদেশি সকল পর্যবেক্ষকেরই অভিমত, অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়া গঠিত সরকারই কেবল দেশকে এই হতাশাজনক পরিস্থিতি হইতে টানিয়া তুলিতে পারে। তাই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানেই সরকারসহ সকলের মনোযোগ নিবদ্ধ হউক। শুভস্য শীঘ্রম!

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক পর স থ ত র সহ ত প রথম সরক র ব এনপ হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’

কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।

আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল