দিনাজপুরের বিরামপুরে মাদক সেবনের অভিযোগে জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ছেলের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিরামপুর পৌর শহরের পূর্বপাড়া মহল্লায় অভিযান চালিয়ে এই সাজা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জসিম উদ্দিন পৌর শহরের পূর্বপাড়া মহল্লার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। তাঁর ছেলে এহসানুল হক ওরফে সোহান গত রোববার ইউএনও নুজহাত তাসনীমের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তিনি তাঁর বাবার বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ করেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।

ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও নুজহাত তাসনীম থানা–পুলিশের সহযোগিতায় গতকাল বিকেলে বিরামপুর পৌর শহরের পূর্বপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। ওই এলাকার একটি চারমাথা মোড় থেকে জসিম উদ্দিনকে আটক করে পুলিশ। তাঁর দেহ তল্লাশি করে নেশাজাতীয় দুটি ট্যাপেন্টাডল বড়ি ও মাদক সেবনের সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ সময় সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুজহাত তাসনীম।

লিখিত অভিযোগ ও অভিযোগকারী এহসানুল হকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর মা–বাবা গাজীপুরের চান্দুরা এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। এহসানুল বিরামপুরে একটি মসজিদে ইমামতি করেন। এ ছাড়া তিনি বিরামপুর পৌর শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। এহসানুল হক তাঁর ছোট ভাই জোবায়দুর রহমানকে নিয়ে পৌর শহরের পূর্বপাড়ায় নানির বাড়িতে থাকেন। আড়াই বছর আগে তাঁর বাবা জসিম উদ্দিন গাজীপুরে চান্দুরায় অবস্থানকালে তাঁর এক দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের সঙ্গে মিশে মাদক সেবন শুরু করেন। মাদক সেবনের জন্য টাকা না দিলে মা শম্পা বেগমকে প্রায়ই মারধর করতেন। এ ছাড়া বাড়ির জিনিসপত্র গোপনে বিক্রি করে মাদকদ্রব্য কিনতেন। গত ঈদুল আজহার আগের রাতে চান্দুরা থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার পথে চান্দুরা এলাকায় রাস্তায় মাদক সেবনের জেরে মা ও বাবার মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁর মা–বাবাকে মারধর করেন। তাঁর বাবা জসিম উদ্দিন ঈদের পরদিন বিরামপুরে বাড়িতে আসেন।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মাদক সেবনের অভিযোগে গতকাল বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। গতকালই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছয় ম স র এহস ন ল গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুলাউড়ার প্রতিবন্ধী শিশুটির পাশে প্রশাসন, পেয়েছে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু গোপাল সাঁওতালের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন শিশুটির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেন। এ সময় গোপালের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

সাড়ে তিন বছর বয়সী গোপাল সাঁওতাল উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া চা-বাগানের স্কুলটিলা এলাকার বাসিন্দা। সে চা-শ্রমিক অনিল সাঁওতাল ও সনছড়ি সাঁওতাল দম্পতির একমাত্র সন্তান।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল দুপুরে ইউএনও মো. মহিউদ্দিন গোপালের বাড়িতে যান এবং তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে শিশুটির শারীরিক সমস্যার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এ সময় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রণেশ বর্মা, কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলাল আহমদ ও ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিশু গোপাল এত দিন প্রতিবন্ধী ভাতার আওতার বাইরে ছিল। ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি জানা যায়। এরপর গত রোববার স্বজনেরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে আবেদন করেন। দ্রুততার সঙ্গে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’ তৈরি করে তা হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে শিশুটির পরিবারের বিকাশ নম্বরে এক বছরের ভাতা (প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা করে) পাঠানো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আরও পড়ুনসন্তান দাঁড়াতে না পারায় গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান মা১৫ জুন ২০২৫

ইউএনও আরও বলেন, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের আওতায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় প্রতিবন্ধীসেবা ও সাহায্যকেন্দ্র রয়েছে। শিশু গোপালকে নিয়ে স্বজনেরা আগামী বুধবার সেখানে যাবেন। সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করবেন। হুইলচেয়ার, অন্যান্য সরঞ্জাম বা ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন হলে তা দেওয়া হবে। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

সম্প্রতি কয়েকজন ভ্রমণকারী মুরইছড়া এলাকায় বেড়াতে গিয়ে শিশু গোপালের কথা জানতে পারেন। জন্মের পর থেকে গোপাল কোমরের নিচের অংশে শক্তি পায় না। চিকিৎসকেরা এ রোগকে ‘সেরেব্রাল পালসি’ হিসেবে শনাক্ত করেন। অর্থসংকটে তার পরিবার চিকিৎসা করাতে পারছিল না। খিদে পেলে শিশুটিকে ঘরের মেঝেতে করা একটি গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়াতে হতো। এ চিত্র দেখে এক ভ্রমণকারী, স্থানীয় কবি ও শিক্ষক সঞ্জয় দেবনাথ শিশুটির ছবিসহ একটি মানবিক পোস্ট দেন ফেসবুকে। পরে তা ভাইরাল হয়।

এ বিষয়ে ১৫ জুন প্রথম আলো অনলাইনে ‘সন্তান দাঁড়াতে না পারায় গর্তে দাঁড় করিয়ে খাওয়ান মা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেটে টাস্কফোর্সের অভিযান, আরও ৩৩টি পাথর ভাঙার মেশিনের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন
  • ‘বিএনপির কথা শুনবে, না হয় ইউএনওগিরি-ওসিগিরি ছেড়ে চলে যেতে হবে’, ব্যাখ্যা দিলেন নেতা
  • গোপালগঞ্জে ১৪ লাখ টাকার চায়না জাল জব্দ
  • কুলাউড়ার প্রতিবন্ধী শিশুটির পাশে প্রশাসন, পেয়েছে ‘সুবর্ণ নাগরিক কার্ড’
  • দুর্নীতির অভিযোগে সহযোদ্ধাদের হাতে অবরুদ্ধ ছাত্র সমন্বয়ক ফাহিম