হলুদে থাকে কারকিউমিন। হলুদের যত গুণাগুণ, সবই এই কারকিউমিনের জন্য। কারকিউমিন একটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান। অর্থাৎ দেহের ভেতরে ও ত্বকে বয়সজনিত যেসব পরিবর্তন হয়, তার গতিকে ধীর করতে সক্ষম এই উপাদান। তা ছাড়া প্রদাহ কমাতেও হলুদ কার্যকর। এসব উপকার পেতে রান্নায় ব্যবহৃত হলুদের পাশাপাশি রোজ হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করাও উচিত কি না, সে সম্পর্কে জানালেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.

মো. মতলেবুর রহমান

স্বল্প মাত্রায় হলুদ উপকারী। তবে বেশি মাত্রায় গ্রহণ করা হলে অবশ্য তা কিছু ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। একজন ব্যক্তি তাঁর প্রতি কেজি ওজনের জন্য রোজ ৩ মিলিগ্রাম পর্যন্ত হলুদ গ্রহণ করতে পারেন। যেমন ৫০ কেজি ওজনের একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দেড় শ মিলিগ্রাম হলুদ গ্রহণ করতে পারবেন।

হলুদের সাপ্লিমেন্টের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে সাধারণত ছোটখাটো সমস্যাই দেখা দেয়। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি একটু জটিল হয়ে দাঁড়াতে পারে। হলুদ বা হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের সময় ওজন ছাড়া আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।

আরও পড়ুনদুধ বা পানিতে হলুদ মিশিয়ে খেলে কি সত্যিই সৌন্দর্য বাড়ে২০ জানুয়ারি ২০২৫যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রায়ই দেখা দেয়

অতিরিক্ত হলুদ গ্রহণ করা হলে বমিভাব, বমি, ক্ষুধামান্দ্য, পেটে অস্বস্তি বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। মাথাব্যথাও হয় কারও কারও। হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে এসব সাধারণ উপসর্গকে অবহেলা করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লিভার বা কিডনিরও ক্ষতি হতে পারে

অতিরিক্ত মাত্রায় হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা হলে লিভারের কার্যক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে। এ রকম হলে ক্ষুধামান্দ্য ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। চোখ, ত্বক ও প্রস্রাব হলুদ হয়ে যায়। লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অল্প কিছু ক্ষেত্রে কিডনির সমস্যার কারণও হয়ে দাঁড়াতে পারে মাত্রাতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট। বেশি পরিমাণে হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথর হতে পারে। বুঝতেই পারছেন, প্রাকৃতিক উপাদান হলেও হলুদ সব সময় সবার জন্য নিরাপদ নয়।

রক্তের সুগার কমে যেতে পারে

অতিরিক্ত হলুদ গ্রহণ করলে রক্তের সুগার কমে যেতে পারে। এর কারণে বুক ধড়ফড় করা, ঘাম হওয়া ও শরীর কাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে জ্ঞানও হারাতে পারেন।

আরও পড়ুনভুল সময়ে সাপ্লিমেন্ট বা সম্পূরক খাবার খাচ্ছেন না তো?০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪স্বল্প মাত্রায়ও বিপজ্জনক হতে পারে যখন

যাঁদের আয়রনের ঘাটতি থাকে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ঘাটতি আরও বাড়তে পারে হলুদের সাপ্লিমেন্টের কারণে। এভাবে বাড়ে রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি।

বয়স্ক ব্যক্তি কিংবা যাঁর কোনো ওষুধ চলছে, তিনি যদি হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে চান, তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, কিছু ওষুধের সঙ্গে হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন অ্যাসপিরিন–জাতীয় ওষুধ সেবন করার পাশাপাশি হলুদের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি সৃষ্টি হবে।

পিত্তথলির কোনো রোগ থাকলে হলুদের সাপ্লিমেন্টের কারণে সেই রোগের উপসর্গগুলো প্রকট হয়ে উঠতে পারে।

অন্তঃসত্ত্বা ও সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান, এমন নারীর জন্য হলুদের সাপ্লিমেন্ট নিরাপদ নয়।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে অল্প মাত্রার হলুদেই রক্তের সুগার কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

শেষ কথা

বুঝতেই পারছেন, সাপ্লিমেন্ট হিসেবে হলুদ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক থাকা প্রয়োজন। রান্নায় ব্যবহৃত হলুদই আপনার সুস্থতার জন্য যথেষ্ট। একটু বেশি উপকার পেতে চাইলে আপনি সামান্য কাঁচা হলুদ দিয়ে এক গ্লাস পানীয় তৈরি করে খেতে পারেন কোনো কোনো দিন। নিতান্তই সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হলে সেটিও একটানা দীর্ঘদিন গ্রহণ করা উচিত নয়। তা ছাড়া সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করা যেকোনো হলুদই খাঁটি কি না, তা–ও বলা মুশকিল।

আরও পড়ুনএই ৫ সাপ্লিমেন্ট অহেতুক খেয়ে বিপদ ডেকে আনছেন না তো? ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহণ করত গ রহণ করল র জন য ত হল দ

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে তিন বছর পর করোনায় একজনের মৃত্যু

যশোরে তিন বছর পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

মৃত ব্যক্তির নাম শেখ আমির হোসেন। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর গ্রামের শেখ মকছেদ আলীর ছেলে।

এ সম্পর্কে ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক বলেন, যশোরে দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে এ জেলায় ২০২২ সালের মাঝামাঝি করোনায় মৃত্যু হয়েছিল। প্রায় তিন বছর পর আবার মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।

এদিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষার কোনো কিট নেই। ফলে এই হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে না। জেলায় র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটিপিসিআর ল্যাব নতুনভাবে চালু করা হয়নি।

যশোর জেনারেল হাসপাতালে কিট না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হোসাইন সাফায়েত বলেন, ‘কয়েক বছর আগের করোনা পরীক্ষার কিছু কিট রয়েছে, যা মেয়াদোত্তীর্ণ। কিটের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে এই হাসপাতালের জন্য দুই হাজার কিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। দুই–এক দিনের মধ্যে তা হাতে পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৬ জুন পেটের ব্যথা নিয়ে আমির হোসেন যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। শ্বাসকষ্ট হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

হোসাইন সাফায়েত বলেন, ‘পিত্তথলিতে পাথর নিয়ে এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন। পেটের ব্যথা তীব্র হতে থাকে, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। তখন বাইরের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে করোনা পরীক্ষা করানো হলে ফল পজেটিভ আসে। এরপর তিনি মারা যান।’

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে বর্তমানে এক নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে তিনটি কেবিন প্রস্তুত করে রাখা রয়েছে। যেখানে ছয় রোগী একসঙ্গে থাকতে পারবেন।
হোসাইন সাফায়েত আরও বলেন, এ বছর এখনো করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দুই থেকে একজন। যে কারণে তিনটি কেবিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী করোনা ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, কিটের ঘাটতিতে পরীক্ষা বন্ধ
  • বিদেশ থেকে ফেরার সময় বিনা শুল্কে মোবাইল, ল্যাপটপ, ফ্রিজ-টিভিসহ ১৯টি পণ্য আনতে পারবেন
  • ইরানিরা নিজের বাড়ির ছবি শেয়ার করছেন
  • ডি ব্রুইনা চলে যাওয়ায় ম্যানচেস্টার সিটির নতুন অধিনায়ক কে হলেন
  • অস্কার পাচ্ছেন টম ক্রুজ
  • মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার মিরপুরে গুলি ছুড়ে টাকা ছিনতাইয়ে জড়িতরা
  • যশোরে করোনায় একজনের মৃত্যু
  • সেদিন হাউমাউ করে কেঁদেছিলাম, ফিল্ম পলিটিক্স নিয়ে শিরিন শিলা
  • যশোরে তিন বছর পর করোনায় একজনের মৃত্যু