পৃথিবী কি সত্যিই সৌরজগৎ থেকে বেরিয়ে যাবে
Published: 23rd, June 2025 GMT
কোনো এক ক্ষণস্থায়ী নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের সৌরজগৎজুড়ে ভবিষ্যতে কোনো একসময় অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এ অস্থিরতার প্রভাবে ভবিষ্যতে পৃথিবী তার কক্ষপথ থেকে সরে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্ল্যানেটারি সায়েন্স ইনস্টিটিউট ও ফ্রান্সের বোর্ডো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ন্যাথান এ কাইব ও শন এন রেমন্ড।
কম্পিউটার সিমুলেশনের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে নক্ষত্রের প্রভাবে পৃথিবী তার কক্ষপথ থেকে বিতাড়িত হয়ে অন্য অবস্থান থেকে গ্রহ বা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পারে। অর্থাৎ অন্য কোনো নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের গ্রহের অবস্থান বদলে যেতে পারে।
নতুন এ গবেষণার বিষয়ে বিজ্ঞানী ন্যাথান এ কাইব ও শন এন রেমন্ড জানিয়েছেন, নক্ষত্রের প্রভাবে পৃথিবী ও প্লুটোর ভাগ্য কতটা পরিবর্তিত হতে পারে, তা জানার চেষ্টা চলছে। আগামী চার শ বছরের মধ্যে এই অস্থিরতা দেখা যেতে পারে। সিমুলেশন থেকে দেখা যাচ্ছে, সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের মধ্যে আমাদের পৃথিবীর কক্ষপথ তুলনামূলক কম স্থিতিশীল। আর তাই নক্ষত্রের কারণে মহাকর্ষীয় টান তৈরি হতে পারে। এমন মহাজাগতিক অস্থিরতার কারণে পৃথিবীর সঙ্গে কোনো গ্রহের সংঘর্ষ বা সৌরজগতের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ভ্রাম্যমাণ কোনো নক্ষত্রের কারণে বুধ গ্রহের কক্ষপথ পরিবর্তন হতে পারে। এর ফলে শুক্র বা মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। এমনকি পৃথিবী সূর্যের সঙ্গেও ধাক্কা খেতে পারে। বৃহস্পতি গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও পৃথিবীকে সৌরজগতে বাইরে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ রহ র
এছাড়াও পড়ুন:
সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি
বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’
সূত্র: স্পেস ডট কম