মার্কিনিরা যে কারণে ৪ জুলাই উদযাপন করে
Published: 4th, July 2025 GMT
প্রযুক্তি-প্রাচুর্য-সমৃদ্ধি, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, পারমাণবিক শক্তিমত্তা ও প্রতিপত্তির বিচারে যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় বিশ্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি ও তিলোত্তমা। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মধ্যে একটি হলো ৪ জুলাই, যেটিকে মার্কিনিরা পালন করে ইন্ডিপেনডেন্স ডে হিসেবে।
৪ জুলাই গ্রীষ্মকালীন বিনোদনের সর্বোচ্চ রূপ। কিছু উৎসব কয়েক দশক আগের। অন্যরা আঞ্চলিক রীতিতে আয়োজন করেন, বড় শহর বা ছোট শহরের চরিত্র ধারণ করে। এই দিনে যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক দলিল Declaration of Independence গ্রহণ করেছিল ১৭৭৬ সালে। এই ঘোষণার মাধ্যমে গ্রেট ব্রিটেন থেকে ১৩টি উপনিবেশ নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। আর শুরু হয় ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার পথচলা।
এদিন আমেরিকার মানুষেরা নানা আয়োজনে তাদের দেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে।
এবারো বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আতশবাজি প্রদর্শনে অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে তাদের পোষা প্রাণিদের প্যারেড, ক্লাসিক গাড়ি প্রদর্শনের প্রভৃতি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলসের বিখ্যাত ডিজনিল্যান্ডেও নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন শো ও আতশবাজি প্রদর্শনের বড় রকমের প্রস্তুতি।
১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই ফিলাডেলফিয়ায় দ্বিতীয় মহাদেশীয় কংগ্রেসের বৈঠকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গ্রহণের স্মরণে এই উৎসব পালিত হয়। সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্ত আমেরিকার ১৩টি মূল উপনিবেশকে বহু বছরের অস্থিরতার পর ব্রিটিশ শাসন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল যা ততদিনে সশস্ত্র সংঘাতের রূপ নিয়েছে।
কী ঘটেছিল ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই?
এই দিনেই Second Continental Congress সর্বসম্মতিক্রমে Declaration of Independence গ্রহণ করে। এই ঘোষণাপত্রের প্রধান রচয়িতা ছিলেন থমাস জেফারসন, যেখানে উপনিবেশগুলোর প্রতি রাজা জর্জ তৃতীয়-এর অবিচারের বিস্তারিত বিবরণ এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার তুলে ধরা হয়। যদিও ঘোষণাটি ৪ জুলাই গৃহীত হয়, অধিকাংশ প্রতিনিধির স্বাক্ষর পড়ে ২ আগস্ট ১৭৭৬-এ। তবে জন হ্যানকক এবং চার্লস থমসন ৪ জুলাই দিনেই স্বাক্ষর করেন।
স্বাধীনতা ঘোষণার সময় আমেরিকার যে ১৩টি উপনিবেশ ছিল, সেগুলো একত্রে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে যুক্তরাষ্ট্র গঠন করে। এই উপনিবেশগুলো ছিল- নিউ হ্যাম্পশায়ার, ম্যাসাচুসেটস, রোড আইল্যান্ড ও প্রভিডেন্স প্লান্টেশন, কানেকটিকাট, নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া, ডেলাওয়ার, মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা এবং জর্জিয়া।
নিউ হ্যাম্পশায়ার ছিল ছোট কৃষি ও জেলেদের উপনিবেশ, আর ম্যাসাচুসেটস ছিল বিপ্লবী আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। রোড আইল্যান্ড ছিল ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতীক, যেখানে প্রভিডেন্স নামে একটি মুক্তচিন্তার শহর গড়ে উঠেছিল।
কানেকটিকাট ছিল কৃষিভিত্তিক সমাজ, নিউইয়র্ক ছিল গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র, আর নিউ জার্সি ছিল কৃষি ও কারিগর শ্রেণির উপনিবেশ। পেনসিলভানিয়ায় ফিলাডেলফিয়া ছিল ঘোষণা-পত্র স্বাক্ষরের স্থান। ডেলাওয়ার ছিল ছোট হলেও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবিধান অনুমোদনে প্রথম। মেরিল্যান্ড ছিল ক্যাথলিকদের জন্য প্রতিষ্ঠিত, আর ভার্জিনিয়া ছিল সবচেয়ে পুরনো ইংরেজ উপনিবেশ এবং নেতৃত্বদানকারী অঞ্চল—জর্জ ওয়াশিংটনের জন্মস্থান।
নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনা ছিল ধনী কৃষিজ সম্পদে ভরপুর উপনিবেশ, আর সবচেয়ে নবীন উপনিবেশ ছিল জর্জিয়া, যা শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধে শরিক হয়। এই উপনিবেশগুলো একসঙ্গে মিলেই গড়ে তোলে স্বাধীন আমেরিকার ভিত্তি।
বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর হামলা সার্থকভাবে মোকাবিলা করার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভের প্রথম দেড়শ’ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিগ্রহে বিশ্বে শীর্ষ স্থান দখল করে। অতঃপর বিশ্বজুড়ে একচ্ছত্র প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। আবার বিশ শতকে আমেরিকা বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করায় প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান-জার্মানি ও হিটলারের নাৎসি বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়।
এদিকে ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর ৩৫৩টি ইমপেরিয়াল জাপানিজ এয়ারক্রাফট হাওয়াই এবং অপারেশন ওয়ান ও অপারেশন জেডের আওতায় হনলুলুতে আঘাত হানে। পার্ল হারবার নামে সমধিক খ্যাত ওই হামলায় আমেরিকার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
পরবর্তী সময়ে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চোখের নিমেষে কয়েক লাখ লোককে খুন করে এবং পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র-সমৃদ্ধ বিশ্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-মহাকাশ অভিযান ইত্যাদির উন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের মুখরোচক বুলির আড়ালে সমরাস্ত্র তৈরির পেছনে রাশি রাশি অর্থ ব্যয় শুরু করে। বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র বহুলাংশে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
জিডিপি বা অভ্যন্তরীণ স্থূল উৎপাদনের (গ্রস ডমেস্টিক প্রডাক্ট) বিচারে আমেরিকা বিশ্বের সেরা অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃত। অঢেল প্রাকৃতিক সম্পদ, রাশি রাশি কৃষিজাত পণ্য এবং শিল্প-কারখানায় সমৃদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক নিয়ামক শক্তি হিসেবে স্বীকার করা হয়। বিশ্বজনীন নানাবিধ উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মূলধন তহবিলে আমেরিকার উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রকে মোড়লের মর্যাদা দিয়েছে।
ইউরোপীয় কলোনিগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম আমেরিকাই নিজস্ব মাতৃভূমিকে পরাধীনতার লৌহশৃঙ্খল সাফল্যের সঙ্গে ছিন্ন করেছে। আবার সরকার নয়, বরং নাগরিকদের ওপরই দেশের সার্বভৌমত্ব নির্ভর করে নীতিমালার ভিত্তিতে নিজ ভূখণ্ডে প্রথম স্বাধীন জাতি গঠন করেছে।
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র স ব ধ নত আম র ক র উপন ব শ প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
ইলুমিনাতি স্যাটানিজম বা শয়তানবাদ সম্পর্কে কতটুকু জানেন?
প্রায় ২৪৮ বছর আগে ‘ইলুমিনাতি’ নামে একটি গোপন ‘বাস্তব সমাজ’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই একই নাম ছিল একটি কাল্পনিক সমাজেরও। অনেকেই মনে করেন এই রহস্যময় বৈশ্বিক সংস্থা, পুরো বিশ্ব দখল করারে উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত এবং তারাই বিশ্বের বড় বড় বিপ্লব এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত।
দ্য অর্ডার অফ দ্য ইলুমিনাতি হলো ব্যাভারিয়াতে (বর্তমান আধুনিক জার্মানির অংশ) প্রতিষ্ঠিত একটি গোপন সমাজ। যেটার ব্যাপ্তিকাল ছিল ১৭৭৬ থেকে ১৭৮৫ সাল পর্যন্ত। এই সমাজের সদস্যরা নিজেদেরকে 'পারফেকশনিস্ট' বা ‘নিখুঁত’ বলে পরিচয় দিতো।
আরো পড়ুন:
সর্বাত্মক ফ্যাসিবাদ কায়েম হয় ২০১৪ সন থেকে: সলিমুল্লাহ খান
রাশিয়ায় যুদ্ধে নিহত রাজবাড়ীর নজরুল, পরিবার জানল ৭ মাস পর
ইলুমিনাতির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আইনের অধ্যাপক অ্যাডাম উইসাপট। তিনি ইউরোপে রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন, সরকারের উপর ধর্মের প্রভাব অপসারণ করতে এবং জনগণকে ‘আলোর নতুন পথ’ দেখাতে চেয়েছিলেন।
সংগঠনটি পাঁচজন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়েছিলো। তারা ১৭৭৬ সালের পহেলা মে ইঙ্গলস্ট্যাড শহরের কাছে একটি জঙ্গলে প্রথম বৈঠক করে। তারা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে চায়, সেইসাথে রাজতন্ত্র ও চার্চের মত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভাব কীভাবে ব্যাহত করা যায়, তার ওপর মনোযোগ দিতে চায়। এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকে। তারা আরও সদস্য বাড়ানোর জন্য ফ্রিম্যাসন সোসাইটিতে যোগ দেয়।ফ্রিম্যাসন সোসাইটি হলো শুধুমাত্র পুরুষদের নিয়ে গঠিত একটি প্রাচীন গোপন সমাজ।
কেউ যদি ইলুমিনাতিতে যোগ দিতে চায়, তাহলে তার সেই সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের অনুমতি এক কথায় সর্বসম্মত অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।একই সঙ্গে অঢেল সম্পদ থাকতে হয় এবং খ্যাতিমান হতে হয়।
ইলুমিনাতিরা কী ধরণের আচার-অনুষ্ঠান পালন করে তার বেশিরভাগই জানা যায় না। সামান্য যেটুকু জানা যায় তাহলো— তাদের ছদ্মনাম থাকে। অনেকেই বিশ্বাস করে যে ইলুমিনাতি বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে অধিকাংশ ইতিহাসবিদ মনে করেন যে, মূল ইলুমিনাতি সংগঠনের প্রভাব বেশ সীমিত। রা কেবলমাত্র মধ্যপন্থী হতে পেরেছিল।
ইলুমিনাতি গ্রুপের বিখ্যাত সদস্য কারা ছিলেন?
১৭৮২ সালের মধ্যে, ইলুমিনাতি গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৬০০ জনের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। তাদের মধ্যে একজন হলেন ব্যারন অ্যাডলফ ভন নিগে, তিনি জার্মান সমাজের অভিজাতদের মধ্যে একজন বলে মনে করা হয়।তিনি এর আগে ফ্রিম্যাসন সমাজের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সাবেক ফ্রিম্যাসন হিসেবে, ইলুমিনাতিকে সংগঠিত ও প্রসারে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।
প্রাথমিকভাবে, শুধুমাত্র অ্যাডাম উইসাপটের ছাত্ররা ইলুমিনাতির সদস্য ছিলেন, কিন্তু শিগগিরই ডাক্তার, আইনজীবী এবং সমাজের বুদ্ধিজীবীরা এই দলে যোগ দেন।
বলা হয় যে ১৭৮৪ সালের মধ্যে ইলুমিনাতির সদস্য দুই থেকে তিন হাজারের মত হয়ে যায়। কিছু সূত্র দাবি করেছে যে বিখ্যাত লেখক ইয়োহান ওয়ালফগ্যাং ফন গুঠাও এই সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন, তবে এ বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইলুমিনাতির আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে কখন?
১৭৮৪ সালে, ব্যাভারিয়ার শাসক (ডিউক) কার্ল থিওডর আইন দ্বারা অনুমোদিত নয় এমন কোনও কর্পোরেশন বা সমাজ তৈরি করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। পরের বছর তিনি দ্বিতীয় আদেশ পাস করেন, যেখানে স্পষ্টভাবে ইলুমিনাতিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
ওই সময় ইলুমিনাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সেখানকার সদস্যদের গ্রেফতার করা হতো, তখন বেশ কিছু নথি পাওয়া যায়, যেখানে নাস্তিক্যবাদ এবং আত্মহত্যার মত ধারনাকে সমর্থন করা হয়েছিল। সেইসাথে গর্ভপাত করার নির্দেশনাও পাওয়া যায়।
এসব নথিপত্র থেকে তৎকালীন শাসকদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে যে এই সংগঠনটি রাষ্ট্র এবং চার্চ উভয়ের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তারপর থেকে, অর্ডার অফ দ্য ইলুমিনাতি সাধারণ মানুষের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। যদিও অনেকের ধারণা যে তারা গোপনে গোপনে ঠিকই সংগঠন টিকিয়ে রেখেছে।
অ্যাডাম উইসাপটের পরিণতি কী?
অ্যাডাম উইসাপট ইউনিভার্সিটি অফ ইঙ্গলস্টাডের সাথে যুক্ত থাকলেও পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিলো। এরপর তিনি ব্যাভারিয়া থেকেও নির্বাসিত হন। পরে জার্মানির গোথা শহরে তিনি জীবনের বাকি দিনগুলো কাটান। এই শহরেই ১৮৩০ সালে মারা যান অ্যাডাম।
১৭৯৭ সালে, ফরাসি ধর্মযাজক অ্যাবে অগাস্টিন বোরেলের ধারণা যে ‘অর্ডার অফ দ্য ইলুমিনাতি’র মত গোপন সমাজ ফরাসি বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছে।
কেন আজও মানুষ ইলুমিনাতিতে বিশ্বাস করে?
ইলুমিনাতি বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করে আছে, এই ধারণাটি মানুষের মন থেকে সম্পূর্ণরূপে উধাও হয়ে যায়নি বরং এটি পপুলার কালচারের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের পিছনে ইলুমিনাতির ভূমিকা ছিল বলে দাবি করে ডিসকর্ডিয়ানিজমের কিছু অনুসারী। এ নিয়ে তারা বিভিন্ন জার্নালে জাল চিঠিও পাঠায়।
সাহিত্যে নতুন ধারার জন্ম দিয়েছে
ইলুমিনাতি সম্পর্কে মানুষের বিশ্বাস ও ধারণা থেকে সাহিত্যে নতুন ধারা তৈরি হয়েছে। উইলসন পরে রবার্ট শিয়াকে নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেন, যার নাম ‘দ্য ইলুমিনাতি ট্রায়োলজি’। বইটি বিশ্বে ভীষণ জনপ্রিয় হয় এবং এর সর্বাধিক কপি বিক্রি হয়। ড্যান ব্রাউনের উপন্যাস ‘এঞ্জেলস অ্যান্ড ডেমনস’ যা নিয়ে পরে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। এটি ওই কথাসাহিত্যের নতুন ধারায় অনুপ্রাণিত সৃষ্টি।
ইলুমিনাতি স্যাটানিজম বা শয়তানবাদ ধীরে ধীরে অন্যান্য আদর্শের সাথেও যুক্ত ছিল। এর ফলে সংগঠনটি ১৮ শতকের মূল ব্যাভারিয়ান গোষ্ঠীদের থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি
ঢাকা/লিপি