কিশোরদের মারামারি থামাতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবদল নেতার
Published: 4th, July 2025 GMT
ধূমপান করাকে কেন্দ্র করে মারামারিতে লিপ্ত হয় এলাকার কিশোরদের দুটি পক্ষ। তা দেখে থামাতে গিয়েছিলেন সাবেক এক যুবদল নেতা। এ সময় ওই যুবদল নেতার বুকে একটি ঘুষি লাগে। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় ঘটেছে এ ঘটনা। নিহত ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ আলমগীর (৪৫)। তিনি স্থানীয় উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মুহাম্মদ আলমগীর গ্রামে আসতে পারেননি। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতের ঘটনার পর তিনি গ্রামে ফেরেন। পরে এলাকায় একটি মুরগি বিক্রির দোকান দেন। গতকাল রাতেও তিনি দোকানে ছিলেন। ওই দোকানের সামনেই কিশোরদের দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। ওই কিশোরদের বয়স ১৪ থেকে ১৬ বছর। দুই পক্ষ মিলিয়ে সদস্য ছিল ১৫ জনের মতো। তিনি সেখানে গিয়ে দুই পক্ষের সমঝোতার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় তাঁর বুকে ঘুষি লাগে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং পরে নগরের আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানতে চাইলে নিহত আলমগীরের ছোট ভাই মুহাম্মদ রফিক প্রথম আলোকে বলেন, দুই গ্রামের কিশোরদের মধ্যে মারামারির ঘটনায় তাঁর ভাই সমঝোতা করতে গিয়েছিলেন। এ সময় ঘুষিতে তাঁর ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘুষির আঘাতে ওই ব্যক্তির মাটিতে লুটিয়ে পড়ার কথা অনেক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। তবে নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হৃদ্রোগের কারণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। ওসি আরও বলেন, তাঁরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। পরিবার মামলা করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রুমায় বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের একজন কেএনএর শীর্ষ নেতা হতে পারেন, ভারী অস্ত্র উদ্ধার
বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে কুকি–চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুজনের একজন কেএনএর শীর্ষ নেতা হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় সেনাবাহিনী রুমা জোন সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর হোসেন। সেনাবাহিনীর অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের পর কেএনএর গোপন আস্তানা থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করা হয় বলে তিনি জানান। তাঁরা ওই সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য। এর মধ্যে একজন শীর্ষ নেতা হতে পারেন। তবে নিহত ব্যক্তিদের নাম–পরিচয় নিশ্চিত করেনি সেনাবাহিনী। অভিযানে কেএনএর আস্তানা থেকে সাব মেশিনগান, চায়নিজ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদও উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর হোসেন বলেছেন, আজ ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী কেএনএ সন্ত্রাসীদের গোপন আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে। নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে কেএনএ সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। নিরাপত্তা বাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়। আক্রমণের মুখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। গোপন আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে দুজন কেএনএ সন্ত্রাসীর লাশ পাওয়া যায়। নিহত সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজন কেএনএর শীর্ষ নেতা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাঁর নামসহ নিহত দুজনের নাম শনাক্ত করা যায়নি। এ ছাড়া কেএনএ সন্ত্রাসী সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আলমগীর হোসেন বলেছেন, কেএনএর আস্তানা থেকে একটি চায়নিজ এসএমজি, দুটি মিয়ানমারে তৈরি এসএমজি ও একটি চায়নিজ রাইফেল উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে ৪৫১টি গুলি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আটটি ম্যাগাজিন, দুটি ওয়্যারলেস সেট, তিন সেট ইউনিফর্ম, পাঁচ জোড়া বুট জুতা, বাংলাদেশি ১৭ হাজার ৯০০ টাকা ও ভারতীয় ৯৫১ রুপি।
কেএনএর আস্তানা থেকে উদ্ধার করা ভারী অস্ত্র