যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ভারতের এক ট্রাকচালককে আটক করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের গেট থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা তাঁকে আটক করেন। এ সময় আনসার সদস্যরা তাঁর কাছ থেকে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়, সেগুলোতে সার্বিয়ার ভিসার স্টিকার ও সিলমোহর রয়েছে।

আটক ট্রাকচালকের নাম বেচারাম প্রামাণিক (৪৩)। তাঁর বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ থানার কালোপুর বেলেরমাঠ গ্রামে।

বেনাপোল কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা জানান, গতকাল বিকেলে ভারতীয় ট্রাকচালক বেচারাম প্রামাণিক একটি ছোট ট্রাকে করে মুরগির খাদ্য নিয়ে পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দরে আসেন। কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের ভেতর ট্রাক রেখে রাত সাড়ে নয়টার দিকে তিনি হেঁটে গেট দিয়ে বের হচ্ছিলেন। তাঁর হাতে একটি শপিং ব্যাগ ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে আটক করা হয়। এরপর তাঁর হাতে থাকা শপিং ব্যাগ তল্লাশি করে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। পাসপোর্টগুলোতে গত ২৩ জুন তারিখে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে সার্বিয়ার ভিসার স্টিকার ও সিলমোহর রয়েছে। ‘ডি’ ক্যাটাগরির ১৮০ দিনের ওই ভিসা ২০২৫ সালের ২৪ জুন থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈধতা রয়েছে।

উদ্ধার করা পাসপোর্টগুলোর মালিকেরা ঢাকা, চাঁদপুর, নোয়াখালীর, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সাতক্ষীরা, গাজীপুরের, মানিকগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার বাসিন্দা।

বেনাপোল বন্দরের আনসার ক্যাম্প ইনচার্জ এইচ এম হেলালউজ্জামান বলেন, আগে থেকে তাঁদের কাছে গোপন সংবাদ ছিল, ভারত থেকে অবৈধভাবে ভারতীয় এক ট্রাকচালকের মাধ্যমে বাংলাদেশি বেশ কিছু পাসপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। এ খবর পাওয়ার পর স্থলবন্দরের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল গেটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে সন্দেহভাজন ওই ট্রাকচালক শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় তাঁকে আটক করা হয়। এরপর শপিং ব্যাগ তল্লাশি করে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। আটক ট্রাকচালক ও পাসপোর্টগুলো আজ শুক্রবার বেনাপোল বন্দর থানায় হস্তারের প্রক্রিয়া চলছে।

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, ‘২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ এক ভারতীয় ট্রাকচালকে বেনাপোল কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালের গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা আটক করেছে বলে শুনেছি। এখনো আনসার সদস্যরা আটক ট্রাকচালক ও উদ্ধার করা পাসপোর্ট থানায় হস্তান্তর করেনি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মা-ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা

কবিতা নিজের ছোট ছেলে রামদেবকে মেয়েদের জামা ও মাথায় ওড়না পরিয়ে দেন। দুই চোখে কাজলও দেন। নিজের গয়না দিয়ে ছেলেকে সাজিয়ে নেন। এরপর কবিতা নিজে, তাঁর স্বামী এবং রামদেব ও আরেক ছেলেসহ জলাধারে ঝাঁপ দেন। পরে তাঁদের চারজনকেই মৃত উদ্ধার করা হয়।

ভারতের রাজস্থানের বারমারে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে ওই জলাধার থেকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশু সন্তানদের নিয়ে কেন এ দম্পতি আত্মহত্যা করলেন, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত চারজন হলেন শিবলাল মেঘওয়াল (৩৫), তাঁর স্ত্রী কবিতা (৩২), এবং তাঁদের দুই ছেলে বজরং (৯) ও রামদেব (৮)। জলাধারটি তাঁদের বাড়ি থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে অবস্থিত।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। খবর পেয়ে দম্পতির শ্বশুরবাড়ির সদস্যসহ অন্য আত্মীয়-স্বজন রাতেই ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁরা পরদিন সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে বুধবার ভোরে তাঁদের উপস্থিতিতে জলাধার থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি) মানোরম গর্গ জানিয়েছেন, কয়েকবার ফোন করেও শিবলালের ছোট ভাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। এরপর শিবলালের পরিবারের খোঁজ নিতে এক প্রতিবেশীকে বাড়িতে পাঠান তিনি। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে সাড়া না পেয়ে ওই প্রতিবেশী স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানান।

পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি থেকে একটি হাতে লেখা চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটটি শিবলালের লেখা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২৯ জুন তারিখের ওই চিঠিতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে তাঁদেরকে আত্মহত্যার জন্য দায়ী করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের একজন শিবলালের ছোট ভাই। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবারের মধ্যে যৌথ মালিকানার জমি ও বসতবাড়ি নিয়ে বছরের পর বছর বিরোধ চলে আসছিল। চিরকুটে অনুরোধ করা হয়েছে, পরিবারের চার সদস্যের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া যেন বাড়ির সামনেই সম্পন্ন করা হয়।

কবিতার চাচা জানিয়েছেন, শিবলাল প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় সরকারি সহায়তায় একটি আলাদা ঘর নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চিরকুটে অভিযোগ করা হয়েছে, এতে তাঁর মা ও ছোট ভাই আপত্তি জানান এবং বাধা দেন। চিরকুটে অভিযুক্ত হিসেবে তাদের দুজনেরই নাম রয়েছে।

কবিতার চাচা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘শিবলাল প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় পাওয়া অর্থ দিয়ে একটি আলাদা ঘর বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মা ও ভাই তাতে বাধা দেন। দীর্ঘদিনের এই হয়রানি তাঁকে ২৯ জুন আত্মহত্যার চিরকুট লিখতে বাধ্য করে।’

কবিতার চাচা আরও জানান, ঘটনার দিন বাড়িতে পরিবারের বাকি সদস্যরা ছিলেন না। শিবলালের মা তাঁর ভাইকে দেখতে বারমারে আর বাবা গিয়েছিলেন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে শিবলাল ও কবিতা দৃশ্যত মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন এবং আত্মহত্যা করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কিসের, কী নির্বাচন হবে: জামায়াত আমির
  • টেকনাফ বন্দরের কার্যক্রম ২ মাস ধরে বন্ধ, বাড়ছে চোরাচালান
  • পরিবারের খোঁজে ৪৮ বছর পর চুনারুঘাটে
  • আইফোনের পর্দায় হঠাৎ করে কালো গোল দাগ দেখা যাচ্ছে, কারণ কী
  • ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন, পরীক্ষা বাতিল
  • দশ বছরে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বাজে অবস্থা বাংলাদেশের
  • ছেলেরা তার বাবার রক্ত দেখেছে: কারিনা
  • হিলি বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতে জুস রপ্তানি 
  • মা-ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা