কক্সবাজারের মহেশখালীতে পুলিশের লুট হওয়া বিদেশি পিস্তল, গুলিসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। তাঁর নাম আবদুল মান্নান (৩২)। তিনি মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

আজ শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার ভোরে মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের জেএম ঘাট ঢালার মুখ এলাকায় কিছু ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছেন—এমন সংবাদের ভিত্তিতে কোস্টগার্ড অভিযান চালায়। অভিযানকালে সন্দেহভাজন তিন-চারজন পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে ধাওয়া দিয়ে আটক করা হয়। পরে তাঁদের তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়।

লে.

কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বলেন, উদ্ধার হওয়া পিস্তলটির গায়ে খোদাই করা চিহ্ন ও মডেল বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পুলিশের অস্ত্র। গত বছরের ৫ আগস্ট কোনো সময় গণ–অভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতিতে অস্ত্রটি পুলিশের কাছ থেকে বা থানার অস্ত্রাগার থেকে লুট হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অস্ত্রটি পুলিশের কোন ইউনিট বা থানার, তা যাচাইয়ের জন্য পিস্তলটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কোস্টগার্ড জানায়, আটক আবদুল মান্নান একজন চিহ্নিত ডাকাত। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁকে মহেশখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ