চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শাখা ছাত্রদলের খসড়া কমিটিতে নাম থাকায় ৯ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকায় ওই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে নোটিশে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দিতে হবে। তারা চাইলে ২৮ জুলাই শুনানিতে উপস্থিত হয়ে নিজের পক্ষে বক্তব্য দিতে পারবেন।

গত বছরের ৭ আগস্ট চুয়েট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে চুয়েট প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বলা হয়, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ।

তবে আদেশ অমান্য করে গত বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের ফেসবুক পেজ থেকে চুয়েট ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষণার কিছু সময় পর সেই পোস্ট মুছে ফেলাও হয়। পোস্ট মুছে ফেলার বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘এটি ছিল খসড়া কমিটি। আপাতত সেটি স্থগিত করা হয়েছে। আমরা পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করব।’

ছাত্র রাজনীতিমুক্ত চুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ মিছিল করে। কমিটিতে থাকা নেতাদের শাস্তির দাবি করেন তারা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়ে তালিকায় দেখা যায়, ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটির সভাপতি তড়িৎ কৌশল বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিফ রাশেদ এবং সাধারণ সম্পাদক জৈব চিকিৎসা প্রকৌশল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তৌফিক হাসান চৌধুরী। সদস্যরা হলেন– জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন, সহসভাপতি চন্দন কুমার দাশ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌসিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান আল সাবিত ও সাখাওয়াত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব হোসাইন তন্ময় এবং প্রচার সম্পাদক আহমেদ ইনতিসার।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার

স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।

আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।

হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
  • মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার