এয়ারপ্লেন মোড বা ফ্লাইট মোড চালু থাকলে ফোনের ব্লুটুথ, ইন্টারনেটসহ মোবাইল নেটওয়ার্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বিমানের নেভিগেশন বা যোগাযোগব্যবস্থায় কোনো বিঘ্ন ঘটে না। আর তাই বিমান চলাচলের সুবিধার্থে যাত্রীদের ফোন বন্ধ করতে বা এয়ারপ্লেন মোড চালু করতে বলা হয়। বিমান ভ্রমণের সময় ছাড়াও দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে এয়ারপ্লেন মোড ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যায়। এয়ারপ্লেন মোড ব্যবহারের ৫ উপকারিতা জেনে নেওয়া যাক।

১.

নেটওয়ার্কের সিগন্যাল দ্রুত ফিরে পাওয়া

ঘরে বা দূরে কোথাও ভ্রমণের সময় স্মার্টফোনে নেটওয়ার্ক না থাকলে ভোগান্তির সীমা থাকে না। ফোনকল করা যায় না, ইন্টারনেট বন্ধ থাকে, জিপিএসও কাজ করে না। এর ফলে জরুরি প্রয়োজনে পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। যেসব এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল, সেখানে ফোন ক্রমাগত সিগন্যাল খোঁজার চেষ্টা করে; এতে ব্যাটারির ওপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায়। তবে এয়ারপ্লেন মোড চালু করে কয়েক সেকেন্ড পর তা বন্ধ করে দিলে ফোনের নেটওয়ার্ক, ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ সংযোগ নতুন করে চালু হয়, যা নিকটবর্তী মোবাইল টাওয়ারের সঙ্গে দ্রুত সংযোগ স্থাপন করতে পারে। অনেক সময় এ পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কের সিগন্যাল দ্রুত ফিরে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনস্মার্টফোনে নজরদারি ঠেকানোর পাঁচ উপায়২৯ জুন ২০২২২. দ্রুত চার্জ

এয়ারপ্লেন মোডে ফোন কোনো নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার চেষ্টা করে না, এর ফলে ফোনের ব্যাটারির শক্তি খরচ কম হয়। আর তাই এয়ারপ্লেন মোড চালু থাকা অবস্থায় ফোন চার্জ করলে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত দ্রুত চার্জ করা যায়।

৩. শিশুদের থেকে ফোন নিরাপদ রাখতে

শিশুরা অনেক সময় ফোনে গেম খেলে বা ভিডিও দেখে। এর ফলে অবাঞ্ছিত ওয়েবসাইটে প্রবেশের পাশাপাশি ভুয়া বা ক্ষতিকর অ্যাপ ডাউনলোডের ঝুঁকি থেকে যায়। এই ঝুঁকি এড়াতে এয়ারপ্লেন মোড বেশ কার্যকর।

আরও পড়ুনআপনার ফোনে কেউ কি নজরদারি করছে, বুঝবেন যেভাবে২৪ আগস্ট ২০২৩৪. নজরদারি এড়ানো

এয়ারপ্লেন মোড চালু থাকলে ফোনের ব্লুটুথ, ইন্টারনেটসহ মোবাইল নেটওয়ার্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ফোনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অবস্থান জানার পাশাপাশি অনলাইন বা দৈনন্দিন কার্যক্রমে নজরদারি করা সম্ভব হয় না।

৫. মনোযোগ বৃদ্ধি

পড়াশোনা, কাজ বা ঘুমের সময় বারবার ফোনকল, বার্তা বা নোটিফিকেশন এলে মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে। আর তাই গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা পড়াশোনার সময় এয়ারপ্লেন মোড চালু করে মনোযোগ বৃদ্ধি করা যায়।

সূত্র: নিউজ ১৮

আরও পড়ুনস্মার্টফোন ধীরগতির? অনুসরণ করুন এই পাঁচ উপায়১৯ জুলাই ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন টওয় র ক ব যবহ র নজরদ র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান

জাতিসংঘের মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান বলেছেন, ‘আমাদের যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে, তার একটি হলো ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি স্বাভাবিক গণতন্ত্রের দেশ নয়। এখানে গণতন্ত্র চলছে না। কার্যত এটা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে।’

টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট (টিজিআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে আইরিন খান এ কথা বলেন। বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গত বুধবার ‘আইন থেকে অধিকার: বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণে ডিজিটাল স্বাধীনতার সুরক্ষা’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ওয়েবিনারে বিদ্যমান ও নতুন সাইবার আইন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া এবং নাগরিকদের ওপর নজরদারিসহ ডিজিটাল সুশাসন-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ও উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়। টিজিআই–এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নজরদারি সরঞ্জাম কেনার জন্য ১৯ কোটি ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে।

ওয়েবিনারে সূচনা বক্তব্য দেন টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রশীদ দিয়া। গত বছরের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে বেশ কিছু সংস্কার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাবহানাজ রশীদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে কিছু উল্লেখযোগ্য তদন্ত, কমিশন ও প্রক্রিয়া করা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা নির্বিচার গ্রেপ্তার হতেও দেখেছি।’

টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। অতীতে আমাদের বিশ্লেষণে আমরা দেখেছি, এই আইন বাংলাদেশে নজরদারির সবচেয়ে সহায়ক এবং একই সঙ্গে এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে।’

আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা খাতের বিষয়গুলো নিয়ে আইরিন খান বলেন, ‘আমাদের একটি অন্তর্বর্তী সরকার আছে, যার কর্তৃত্ব সীমিত। আমাদের একটি নিরাপত্তা খাত আছে; এই একটি মাত্র খাতে অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনের কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা খাতে সংস্কার নিশ্চিত করতে আমরা কী করতে পারি?’

জাতিসংঘের বিশেষ এই র‍্যাপোর্টিয়ার বলেন, ‘এই রূপান্তর বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তা খাতকেই সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে হবে (বর্তমান সরকারকে)। এখনো তাদের কাছে সব ধরনের (নজরদারি) সরঞ্জাম রয়েছে। আর সে কারণে পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবে, তা নির্ধারণে অন্য সবার চেয়ে তাদের বাড়তি সুবিধা রয়েছে।’

পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ডিজিটাল পরিসরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান সরকার কী করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনায় আইরিন খান বলেন, ‘ডিজিটাল নিয়ে ভাবুন। আমি মনে করি না, সরকার তা করছে। তবে অন্য সবাই ডিজিটাল নিয়ে ভাবছে। তাই সরকারের ডিজিটাল নিয়ে এবং ডিজিটাল পরিসরে কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে ভাবা দরকার। (ইন্টারনেট) কোম্পানিগুলোকে ডাকুন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন এবং ডিজিটাল পরিসর কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা মানুষকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকেও বুঝতে দিন।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের প্রোগ্রাম অফিসার ডায়নাহ ফন ডার গেস্ট বলেন, ‘আমি মনে করি, নজরদারি নিজে থেকে অবৈধ নয়। সর্বত্র রাষ্ট্রগুলোর জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধের তদন্ত করা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু নজরদারি যখন ব্যাপক, অস্বচ্ছ ও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়, তখন তা একটি বিপজ্জনক সীমা অতিক্রম করে।’

ওয়েবিনারে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ডিজিটাল স্বাধীনতা যেমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং অনলাইনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে সাইবার আইন ও এর প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ; ডিজিটাল পরিসরে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সংস্কারের সম্ভাবনা নিয়ে এতে আলোচনা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়েবসাইটের কুকিজ সংগ্রহের অনুরোধ ভালো না খারাপ, নিরাপত্তাঝুঁকি কতটা
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি