বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তির প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

আজ শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের নেতারা বলেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন স্থাপনের ফলে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। এ কারণে বাংলাদেশের মানুষ এ দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন হতে দেবে না।

বিক্ষোভ সমাবেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার হলো অস্থায়ী সরকার। এই সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো বোঝাপড়া না করে, পরামর্শ না করে দেশবিরোধী এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ইতিহাস পক্ষপাতিত্বের ইতিহাস, পশ্চিমা মডেলের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। ফিলিস্তিন ও কলম্বিয়ায় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় থাকলেও সেগুলো কী ভূমিকা পালন করছে, এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি। একই সঙ্গে ভারত ও চীনের উইঘুরে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চললেও সেখানে কেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন নেই, সেই প্রশ্নও তোলেন জমিয়ত মহাসচিব।

মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘বাংলাদেশে এই কার্যালয় প্রতিষ্ঠার এত দরদ উতলে পড়ল কেন? কেন.

..এটা দরদ নয়, আন্তরিকতা নয়; এটা আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত।’

সরকারের উদ্দেশে জমিয়ত মহাসচিব বলেন, ‘খবরদার, খবরদার, সাবধান। পার্বত্য অঞ্চলকে আগামীর বাংলাদেশে খ্রিষ্টান রাজ্য বানানোর কোনো ফাঁদে পা দেবেন না। এমন কোনো ফাঁদে পা দিয়ে থাকলে একাত্তরের, চব্বিশের হাতিয়ার গর্জে উঠবে আরেকবার। অনতিবিলম্বে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করতে হবে।’

মঞ্জরুল ইসলাম বলেন, যাঁরা বাংলাদেশে ভিনদেশি এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করে, তাঁদের বিরুদ্ধে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের আন্দোলন চলবে। এ সময় তিনি আগামী ৭ আগস্ট এই চুক্তি বাতিলের দাবিতে জেলায় জেলায় জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এরপর বায়তুল মোকাররম থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি পুরানা পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরের সাবেক দুই ডিসিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

শিবচরে পদ্মা সেতু রেললাইন সংযোগ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মাদারীপুরের সাবেক দুই জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন ও মো. ওয়াহিদুল ইসলামসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই)  দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় এ সংক্রান্ত নোটিশ মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সাবেক দুই জেলা প্রশাসকসহ অভিযুক্তদের কাছে পাঠিয়েছে ।

দুদক সূত্র জানায়, পদ্মা রেললাইন সংযোগ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক দুই জেলা প্রশাসকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন জন্য দুদক মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামানকে দলনেতা ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান অপুকে সদস্য করে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

খুকৃবির সাবেক উপাচার্যসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

কুবির নতুন ক্যাম্পাসের জমি ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ, তথ্য চেয়েছে দুদক

অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ১৯ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর বিধি ৮ অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য এবং চাহিদাপত্র চেয়ে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে তারা হলেন- মাদারীপুর সাবেক জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম, সাবেক জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ ফারুক আহম্মদ, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ঝোটন চন্দ্র, মাদারীপুরের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস।

‎মোহাম্মদ সুমন শিবলী, প্রমথ রঞ্জন ঘটক, ‎আল মামুন, মো. নাজমুল হক সুমন, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ‎কানুনগো (ভারপ্রাপ্ত) মো. নাসির উদ্দিন, মো. আবুল হোসেন, রেজাউল হক এবং মাদারীপুর কালেক্টরেট রেকর্ড রুম শাখার রেকর্ড কিপার মানিক চন্দ্র মন্ডল।

দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুরের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বলেন, “মাদারীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও ড. রহিমা খাতুনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও বিভিন্ন চাহিদাপত্র চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত নোটিশ অভিযুক্তদের কাছে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ