কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে করা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৫ সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

আসিফ মাহমুদের অনুসারীদের ভাষ্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীরা তাঁদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছেন। এতে তাঁদের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন দাবি করেছেন, আসিফের অনুসারীরা আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে তাঁদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়েছেন। এতে বিএনপির অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে এসব ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় পুলিশ সদস্যদের ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে মুরাদনগর থানার সামনে এসে অবস্থান নিতে দেখা যায়। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে উপজেলা সদরে উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বিএনপির নেতা কায়কোবাদের অনুসারীরা। এরপর ‘মুরাদনগর উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে উপদেষ্টা আসিফের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আসিফের অনুসারীদের মিছিলটি বিকেল পাঁচটার দিকে স্থানীয় ডি আর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ থেকে শুরু হয়ে আল্লাহু চত্বরের দক্ষিণ পাশে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় চত্বরের উত্তর পাশে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন কায়কোবাদের অনুসারীরা। দুই পক্ষের মাঝে পুলিশের অবস্থান ছিল। এ সময় আসিফের অনুসারীরা ‘চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘চাঁদাবাজ ধর, জেলে ভর’, ‘মুরাদনগরের মাটি, আসিফের ঘাঁটি’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ আসিফের অনুসারীদের সমাবেশে অন্য প্রান্ত থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। তখন কায়কোবাদের অনুসারীরা কিছুটা পেছনে গিয়ে পাল্টা ধাওয়া দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা অন্তত পাঁচজন সাংবাদিককে পিটিয়ে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আহত করা হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে উপস্থিত লোকজন ও ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আসিফের অনুসারীরা মুরাদনগর থানার সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। আর কায়কোবাদের অনুসারীরা আল্লাহু চত্বরসহ দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে আসিফের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।

আহত সাংবাদিকেরা হলেন বেসরকারি টেলিভিশন স্টার নিউজের জেলা প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মারুফ, খোলা কাগজের জেলা প্রতিনিধি শাহ ইমরান, এস এ টিভির ক্যামেরাপারসন এ এস বাপ্পা, নয়াদিগন্তের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার ফাহিম মুনতাছিম প্রমুখ। সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘হামলাকারীদের একজন আমার পায়ে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। আমাকে বারবার বলছিল, “ভিডিও বন্ধ কর, ক্যামেরা বন্ধ কর”। আসিফের অনুসারীদের ওপর যারা প্রথমে হামলা করেছিল, তারাই সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়।’

কুমিল্লার মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ। বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন ন ম র দনগর কর ম দ র দ র ওপর ব এনপ র উপদ ষ ট র স মন আল ল হ এ সময় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

কুমিল্লার মুরাদনগর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। 

এলাকাবাসী জানান, বুধবার বিকেলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হন।  সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে কয়েকটি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হন, তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে বিএনপির অভিযোগ বক্স, যা পাওয়া গেল

সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান

মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পর শত শত ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিতে থাকে। আমাদের অনেক সমর্থক আহত হন।”

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, “তারা হামলা করার পর আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করেছে।”

কুমিল্লার মুরাদনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান জানান, আজ মুরাদনগর সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উসকানিতে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপরে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। 

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি
  • উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • বন্দরে ডেভিল হান্ট অভিযানে ছাত্রলীগ নেতা আয়াত গ্রেপ্তার  
  • মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, পরিবার বলছে ষড়যন্ত্র
  • কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার