সিদ্ধিরগঞ্জে দুই দফায় সাড়ে ১১ ভরি স্বর্ণ চুরি করে ধরা পড়ল ২ শিক্ষর্থী
Published: 30th, July 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে কোচিং করার পরিচয়ের সুবাদে বন্ধুর বাসা থেকে ৪ মাস আগে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ৯ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চুরি করেন ২ শিক্ষার্থী।
দ্বিতীয়বার প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকা দামের আড়াই ভরি স্বর্ণ ও ২২ ভরি রূপা চুরি করে তারা ধরা পড়েন বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে। এ ঘটনা ঘটে গোদনাইল ধনকুন্ডা এলাকায় মো.
গ্রেপ্তাররা হলেন, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকার সিরাজ মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া আরিফের ছেলে মো. রাফিন (১৯) ও হাসানের বাড়ির ভাড়াটিয়া রবিউলের ছেলে হাসিবুর রহমান(১৯)। তারা দুজনই শিক্ষার্থী। রাফিন নবম শ্রেণি আর হাসিবুর রহমান এবছর এসএসসি পাস করেছে।
চোরাই স্বর্ণালংকার কিনার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরো ২ জনকে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম।
এঘটনায় বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী আব্দুল মালেকের মেয়ে দেলোয়ারা বেগম বেলী (৪৫) বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদীর ভাতিজা শেখ শাহরিয়ার হাসিব (১৪) গোদনাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র। কোচিং করার সুবাদে রাফিন ও হাসিবুর রহমানের সঙ্গে তার বন্ধত্ব হয়। তারা সবাই মিলে বাদীর পিত্রালয়ে গ্রুপ স্টাডি করতো।
গত ২৬ মার্চ বাসা থেকে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ৯ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। যার কোন হদিস মিলছিলনা। গত ২৭ জুলাই বিকেল ৫ টার দিকে গ্রুপ স্ট্যাডি করার সময় রাফিন ও হাসিবুর রহমান কৌশলে শাহরিয়ার হাসিবকে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে আড়াই ভরি স্বর্ণ ও ২২ ভরি রূপার অলংকার ( যার মূল্য প্রায় ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা) চুরি করে চলে যাওয়ার সময় শাহরিয়ার হাসিব দেখে ফেলে।
তখন তারা শাহরিয়ারকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে চলে যায়। পরে শাহরিয়ার চুরির ঘটনা প্রকাশ করলে স্থানীরা অভিযুক্ত দু’শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে জানতে চাইলে তারা আগে ও পরে চুরির কথা স্বীকার করে। তখন স্থানীয়রা তাদেরকে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, চোর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, তারা কার মাধ্যমে কার কাছে চোরাই স্বর্ণালংকার বিক্রি করেছে তাদের নাম বলেছে।
তাদের দেওয়া তথ্য মতে বিকেল পর্যন্ত আদমজী সোনামিয়া বাজারের একটি জুয়েলারী দোকানদার ও গোদনাইল ২ নং ঢাকেম্বরী এলাকার একজন মেকানিক্সকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জনের নামে চুরির মামলা হয়েছে। এজাহার নামীয় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ হ স ব র রহম ন স বর ণ ল ক র স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।