মঞ্চ নয়, র‍্যাম্প নয়, ক্যামেরার সামনেও এখন আর নেই রূপালি পর্দার আলোচনায় থাকা শান্তা পাল এখন আলোচনায় রিমান্ডের কক্ষে! ভারতের পরিচয়পত্র রাখা, ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার, নানা নামে নানা ঠিকানায় ঘুরে বেড়ানো— সব মিলিয়ে তার জীবন যেন গল্পের থেকেও বেশি নাটকীয়!

কলকাতার যাদবপুর থানা এলাকা থেকে গত ৩০ জুলাই গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশি অভিনেত্রী ও মডেল শান্তা পালকে। অভিযোগ, তার কাছে ভারতের আধার ও ভোটার আইডি রয়েছে, যেগুলোর সত্যতা নিয়ে তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশ। বর্তমানে তিনি ৮ দিনের রিমান্ডে আছেন। 

কে এই শান্তা পাল? 

ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেলিং দিয়ে। জিতেছিলেন মিস এশিয়া গ্লোবাল বাংলাদেশ খেতাব। ছিলেন নাটকে, ছিলেন সিনেমায়। অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের পাশাপাশি তেলেগু ছবিতেও। কিন্তু আলোচনায় আসার চেয়ে, সমালোচনাতেই যেন বেশি জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

২০২০ সালের দিকে ওপার বাংলার নির্মাতা রাজিব কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে হোটেলে রাত কাটানোর কুপ্রস্তাবের অভিযোগ করে আলোচনায় আসেন শান্তা। একই বছর ঢাকায় এক নাট্যনির্মাতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনেন। এরপরের ঘটনা যেন সিনেমাকেও হার মানায়— রাতভর রমনা থানায় অজ্ঞান হওয়ার অভিনয়, চিৎকার, কান্না, থানার বাইরে গড়াগড়ি!

কলকাতায় এবার অ্যাপ ক্যাব ব্যবসার সূত্র ধরে আবার ধরা পড়ে যান পুলিশের জালে। পুলিশ জানায়, শান্তা বিভিন্ন সময় ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। এমনকি রেশন কার্ডও নাকি রয়েছে! শুধু তাই নয়, তিনি নিজেই ঠাকুরপুকুর থানায় একবার প্রতারণার মামলা করেছিলেন— সেখানে দেয়া হয় ভিন্ন ঠিকানা। 

কলকাতার গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার বলছেন, ২০২৩ সাল থেকেই শান্তা কলকাতায় বসবাস করছিলেন। বর্তমানে তার স্বামীর বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হয়েছে।

ঢাকা/রাহাত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হতে হবে: নাহিদ

জুলাই ঘোষণাপত্র অবশ্যই সংবিধানের প্রস্তাবনা ও তফশিলে উল্লেখ করে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা নির্বাচিত সংসদের হাতে এই সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে দেব না, বরং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী সংসদ গঠিত হবে, গণপরিষদ গঠিত হবে। এবং অর্ন্তর্বতী সরকারের আমলেই এই সনদ কার্যকর করতে হবে।

শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘জুলাই পদযাত্রায় আমরা গণহত্যার বিচার, সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়েছিলাম। পাশাপাশি আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের কথা বলেছিলাম। পাশাপাশি আমাদের দাবি ছিল, ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদের বিষয়টিও যেন সুরাহা হয়।’’

আরো পড়ুন:

জুলকারনাইনের পাঁচ প্রশ্ন ও রিয়াদকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ

মানুষ পরিবর্তন চায়, এনসিপিকে চায়, নরসিংদীতে নাহিদ

আগামী ৫ আগস্ট সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘‘সরকারের পক্ষ থেকে আমরা জানতে পেরেছি, জুলাই ঘোষণাপত্রটি সরকার আগামী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষ এবং রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ঘোষণা করতে যাচ্ছে। যদিও ঐক্যমত্য কমিশন এখনো জানায়নি ‘নোট অব ডিসেন্টে’র বিষয়গুলোর সমাধান কী হবে।’’

গত বছর ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকার পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে এক দফা ঘোষণা করা হয়েছিল। আগামীকাল রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে জুলাই পদযাত্রার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। এই সমাবেশ থেকে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার পাঠ করা হবে। সেখানে এনসিপির পক্ষ থেকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। 

উল্লেখ্য আগামীকাল বিকেল ৪টায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে আজ শনিবার দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টে জানানো হয়। পোস্টে এনসিপির নেতাকর্মীসহ সারাদেশের মানুষকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।  

সমাবেশের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘‘আগামীকাল এইচএসসি পরীক্ষা আছে। এছাড়া ছাত্রদলের সমাবেশ রয়েছে। একই এলাকায় দুটি বড় কর্মসূচি থাকায় ভোগান্তি হতে পারে।’’

এ জন্য তিনি ঢাকাবাসী এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘৩ আগস্ট একটা ঐতিহাসিক দিন। এ কারণে এই দিনে এই সমাবেশ করছি আমরা। এই দিনের বিশেষ গুরুত্বের কারণে ছুটির দিনের বাইরে এটা করতে হচ্ছে। তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন মানুষের ভোগান্তি কম হয়।’’ 

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, এই এক বছরে তার পূর্ণতা আমরা লক্ষ্য করিনি। জুলাই সনদের মধ্য দিয়ে সেই আকাঙ্ক্ষাটা আংশিক পূরণ হবে। দেশের একটা গণতান্ত্রিক সংস্কার হচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংস্কার, কর্মসংস্থান এবং মানুষের জীবনমানের পরিবর্তনের বিষয়গুলো নিয়ে এত অল্প সময়ের মধ্যে কাজ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এই সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে এনসিপির জন্ম।’’
 

ঢাকা/রায়হান

সম্পর্কিত নিবন্ধ