শহীদদের কবরের কাজে দুই নম্বর ইট, ঠিকাদারকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
Published: 2nd, August 2025 GMT
রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের কবরের উন্নয়নকাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ ঘটনায় দোষী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আজ শনিবার সকালে জুলাই শহীদদের কবর জিয়ারতে রায়েরবাজার কবরস্থানে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তখন তিনি দেখতে পান, জুলাই আন্দোলনে নিহত ১১৪ শহীদের গণকবর ঘিরে চলমান নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঠিকাদারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শহীদদের কবরের ওপর আপনি এ রকম দুর্নীতি করছেন!’
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের নিয়ে কবরস্থানের কাজ দেখছেন। ইট দেখে তিনি ঠিকাদার কে, জানতে চান। ইটের মান নিয়ে প্রশ্ন করেন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীকে ইটগুলো দেখান। তখন পাশে থাকা ঠিকাদারের প্রতিনিধি বলছিলেন, ‘এক নম্বর (ইট)।’
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘এটা কি এক নম্বর? একটা বাইর করো। এটা এক নম্বর নাকি? এটা কিসের এক নম্বর?’ ইটগুলো নির্বাহী প্রকৌশলীকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখেন তো কী ইট লাগাইতাছে?’
একই সঙ্গে ঠিকাদারকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরে শোনেন, এটা কী ইট লাগাইতাসেন আপনি? শহীদদের কবরের ওপর আপনি এ রকম দুর্নীতি করতাসেন! এটা ভালো ইট নাকি?’
এ সময় পাশে ঠিকাদারের লোকদের একজন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘১০০ পার্সেন্ট ভালো ইট ছিল।’ তখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ধমক দিয়ে তাঁকে থামিয়ে দেন। নির্বাহী প্রকৌশলীকে ডেকে উপদেষ্টা বলেন, ‘কই, ইঞ্জিনিয়ার সাহেব কই? আপনি দেখেন।’
ভিডিওতে এ সময় ঢাকা উত্তর সিটির অঞ্চল-৫–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে যেতে দেখা যায়। এ সময় প্রকৌশলী বলেন, ‘স্যার, আমি ঠিক করে দিচ্ছি স্যার।’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রকৌশলীকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কোথা থেকে পাস করেছেন?’ আইইবি (ইনস্টিটউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ) উত্তর শুনে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি আইইবি থেকে পাস করেছেন। আপনিই তো বুঝতে পারবেন, দেখেন।’ এ বলে ইটগুলো দেখান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইটগুলো দেখিয়ে বলেন, ‘সব সরাতে হবে। ভালো ইট দাও। দুই নম্বরি ইট এখানে লাগাইতাছে। দেহেন ইঞ্জিনিয়ার সাব, দুই নম্বর। সব দুই নম্বর ইট। এ জন্যই উনি (ঠিকাদার) বলেন মোনাজাত করে চলে যেতে। এ জন্যই বলতেছে, ওই হানে মোনাজাত করেই যানগা।’
এ সময় আবারও কথা বলছিলেন ঠিকাদারের প্রতিনিধি। এতে ক্ষেপে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি যান।’ প্রকৌশলীকে বলেন, ‘এই কন্ট্রাক্টর আপনি চেঞ্জ করেন। খালি চুরি ছাড়া আর কিছু নাই।’ উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের খারাপ ইটগুলো দেখিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই যে দেখেন, ছবি তুলে নেন। ছবি উঠান, প্রচার করেন।’
ঠিকাদার ইট পাল্টে দেওয়ার কথা বললে উপদেষ্টা বলেন, ‘কেন, বলার পরে চেঞ্জ কেন?’ প্রকৌশলীকে উন্নয়নকাজের রাফ (প্রাথমকি) ঢালাই দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ার সাব, রাফ ঢালাই এ রকম কোয়ালিটি হবেনি? ভাইঙ্গা গেছে। একটু ছবি উঠায় নেন। এ রকম হবে কেন?’ এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি যদি না আসতাম, তখন আপনারা কী করতেন? সে সময় এগুলো লাগাই দিতেন। এত দুর্নীতি করলে তো দেশ চলবে না। এত দুর্নীতি যদি করেন, তো দেশ চলবে?’
রায়েরবাজার কবরস্থানটি ঢাকা উত্তর সিটির অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন। এ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো.
এ প্রকৌশলী আরও বলেন, গত শুক্রবার রাতে এ কাজের জন্য এক ট্রাক ইট আসে। এর মধ্যে কিছু ইট খারাপ এসেছে। আজ সকালে সেখানে গিয়েই তিনি বিষয়টি দেখেন এবং ইটগুলো সরাতে বলেন। কিন্তু এর মধ্যে আজ শনিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শহীদদের কবর জিয়ারতের জন্য রায়েরবাজারে যান। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ মোতাবেক বাচ্চু কনস্ট্রাকশনকে বাদ দিয়ে সেখানে অন্য ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানো হবে বলেও জানান তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র য় রব জ র কবরস থ ন প রক শ এ সময় এ রকম ইটগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিপ্রবিতে ‘ফ্রম ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার’ বিষয়ক সেমিনার
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিপ্রবি) ক্যারিয়ার গঠনে ‘ফ্রম ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ এর সভা কক্ষে ম্যানেজমেন্ট বিজনেস সোসাইটির (এমবিএস) আয়োজনে এবং খাগড়াছড়ির অ্যাডুলাইফ আইটি ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি: ইউপিডিএফ
রাঙামাটিতে পিসিসিপির ডাকা হরতাল প্রত্যাহার
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, “যেকোনো ক্যারিয়ারে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গকে- অন্তর্ভুক্তি, স্বাধীনতা এবং প্রাধিকার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। যে চাকরিতে এই তিনটি জিনিস থাকবে, সেসব চাকরি স্বাচ্ছন্দ্য ও মর্যাদাপূর্ণ হবে।”
শিক্ষার্থীদেরকে তাদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্কিলে উন্নত করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “দক্ষতার ঘাটতিগুলো শনাক্ত করে সেগুলো কাটিয়ে উঠে নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা ও সততা দিয়ে ক্যারিয়ারে সফল হতে হবে। এছাড়াও নিজেদের যে পেশায় আগ্রহ ও দক্ষতা আছে, তা বেছে নিতে হবে।”
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জুনাইদ কবির, প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক সাদ্দাম হোসেন, ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রহিম উদ্দিন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সূচনা আখতার প্রমুখ।
এছাড়া অ্যাডুলাইফ আইটি ইনস্টিটিউটের সিইও আমির হোসেন রোজেলসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তারা ক্যারিয়ার গঠনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
ঢাকা/শংকর/মেহেদী