গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্রবাহিনীর অবদানের স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ দাবি এবি পার্টির
Published: 2nd, August 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্রবাহিনী এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের অবদানের স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করার দাবি জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।
‘গৌরবোজ্জ্বল জুলাই ৩৬’ উদযাপনের অংশ হিসেবে শনিবার (২ আগস্ট) গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ দাবি করে দলটি।
রাজধানীর বিজয় নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
ভাইস চেয়ারম্যান লে.
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “যখন রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব একীভূত হয়, তখনই মুক্তিযুদ্ধ বা গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়। আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে বিবেকের দায় থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছিল।সাধারণত অবসরপ্রাপ্ত সেনারা রাজনৈতিক দাবিতে রাজপথে নামেন না, কিন্তু সেদিন ডিওএইচএসগুলোতে সেই রীতির ব্যত্যয় ঘটিয়েছিল বলেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনী গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পেরেছিল। তাদের মাঠে নামার কারণেই গণঅভ্যুত্থান সহজ হয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করেন,“ফ্যসিবাদের অন্তিম সময়ে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, মূলধারার কিছু মিডিয়া, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী ও সাংবাদিক জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তবে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সেদিন জনগণের বিরুদ্ধে যায়নি। সেটাই সেদিন আমাদের মাঝে আশার আলো সঞ্চারিত করেছিল।”
মনিশ দেওয়ান বলেন, “সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। জগদ্দল পাথরকে সরানো গেলেও, তা সম্পূর্ণরূপে সরানো যায়নি। ফুটো বল দিয়ে খেলা চলে না।”
মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, “২/১ জনের অপকর্মে পুরো বাহিনী কলুষিত হতে পারে না। জুলাইয়ের যুদ্ধ এখনো চলমান। সংস্কার দরকার মিডিয়া ও সশস্ত্র বাহিনী উভয় ক্ষেত্রেই। সংস্কার থাকলে হয়তো হিলি বা কাউল পালাতে হতো না। সংস্কারবিহীন নির্বাচন মানেই স্বৈরতন্ত্রের পুনর্বাসন।”
মোশাররফ বলেন, “হাজারো শহীদের রক্তে রঞ্জিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ থেকে পিছু হটা যাবে না। সেদিন আমরা সামরিক কর্মকর্তারা আমাদের সন্তানদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলাম, বিবেকের তাড়নায় আমরা আর সেদিন ঘরে থাকতে পারিনি। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খুনিদের বিচার আমরা দেখতে পারি নাই।”
জামাল উদ্দিন বলেন, “হাসিনার ফ্যাসিবাদকে না করে দেওয়ার জন্য ৩৬ জুলাই আমরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসি এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে বলি। সেদিন আমরা নেমে আসায় জনগণ আরো বেশি সাহসী হয়ে সামনে এগিয়ে যায়। তখন পর্যন্ত আমরা কিন্তু জানতাম না আজকে হাসিনার শেষ দিন।”
মেজর (অব.) ডা. ওহাব মিনার বলেন, “দেশ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ছোটখাটো মতপার্থক্য ভুলে জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের উচিত অবিলম্বে ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবসরপ র প ত স ন গণঅভ য ত থ ন কর ন ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
অন্তবর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সবাইকে ধৈর্য ধরে বিচার প্রক্রিয়া, সংস্কার এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সারাদেশ এখন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার অপেক্ষায় রয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাহাঙ্গীরনগর বিবিদ্যালয়ে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে, অদম্য ২৪ উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্মিত জুলাইয়ের ভিডিও ও ফটো ডকুমেন্টারি উপভোগ করেন।
আরো পড়ুন:
জবির পরিত্যক্ত ডাস্টবিনগুলো সংস্কার করল ছাত্রদল
রাকসু থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে যারা
আদিলুর রহমান খান বলেন, “১ বছর আগে বাংলাদেশে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেই ঐক্যই পারে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে। বিচার প্রশ্নে বলতে চাই কোনো অবস্থাতেই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া সরকার বিচারের ক্ষেত্রে দুর্বলতা স্কোপ রাখবে না। খুব দ্রুতই বেশ কয়েকটি বিচারের কাজ দৃশ্যমান হবে।”
তিনি আরো বলেন, “তরুণ ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি এবং দেশকে বাঁচানোর জন্য জীবন দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।” এছাড়া স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য-২৪’ বিভাজন ভুলে একাত্ম হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।
সমাপনী বক্তব্যে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “সংঘবদ্ধ আন্দোলনে ৫ আগস্ট আমরা বিজয় অর্জন করেছি। এর মানে এই নয় যে, অন্য যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আর স্বর আপনারা শুনবেন না। আপনারা দেখবেন, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা সচেতন এবং কথা বলার ব্যাপারে উন্মুক্ত।”
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আবার স্মরণ করিয়ে দিলাম, আমরা যদি বাংলাদেশে কোনো অশান্তি দেখি, বৈষম্য দেখি, পরাজয়ের কালো মেঘ দেখি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য সংগ্রামীরা আবারো তাদের সেই কার্যক্রম শুরু করবে। গোটা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে, আবার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ -উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলমসহ জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য দেন।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী