অর্থনীতির ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে পরামর্শ দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের জুনিয়র অর্থনীতিবিদরা কিছুই নাকি দেখেন না। আমি তাদের সবাইকে চিনি। ৭০ সাল থেকে শিক্ষকতা করি, সবাই আমার ছাত্র। দেখতে দৃষ্টি লাগে, অন্তর্দৃষ্টি লাগে। যদি দেখতে না চায়, দেখতে পারবে না।”

সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও রাজস্ব ভবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস সংক্রান্ত পরিবর্তনগুলো তুলে ধরা হয়।

আরো পড়ুন:

শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ

১৫ শতাংশ শুল্ক কমানো অন্তর্বর্তী সরকারের আরেকটি সফলতা: আইন উপদেষ্টা

এনবিআর চেয়ারম্যান মো.

আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে এতে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  

তিনি বলেন, “সরকারের শুধু নেতিবাচক বিষয়গুলো না দেখে ভালো বিষয়গুলোও দেখুন। ভুলের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি নেই। এতে সংশোধন করা যাবে। পাশাপশি এনবিআরের সুনাম যে আছে, তা ধরে রাখতে হবে।”

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন প্রক্রিয়া আরেকটু সহজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, “আমার বয়স ৬৫ বছরে বেশি; হয়ত একটু সময় পাব, চেষ্টা করব। তবে আমার জন্য কঠিন। আমি খুব টেক সেভি না। শুধু টেলিফোনটায় মেসেজ নিতে পারি আর ইমেইল দিতে পারি। এর বেশি কিছু করলে, আটকে গেলে আমি পারি না। এটা কিন্তু সবার জন্য; আমি মনে করি যে এটা ইউনিভার্সাল একটা সিস্টেম। সবাই বুঝতে পারবে। কম্পিউটার ভাষা এমন যে, সবাই বুঝতে পারবে, এক্সেস করতে পারবে।”

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ইউনিটির (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আক্তার মালা, সদস্য (কাস্টমস নীতি ও আইসিটি) মুবিনুল কবির, সদস্য (কর নীতি) বদিউল আলম চৌধুরী, সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমান প্রমুখ।

ঢাকা/নাজমুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন কীভাবে

আজ থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে। দেশের প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। করযোগ্য আয় থাকলে টিআইএনধারীদের রিটার্ন দিতে হয়।

গত বছর থেকে নির্দিষ্ট এলাকার অধিক্ষেত্রের ব্যক্তি করদাতা, সারা দেশের ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। গতবার ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন।

এবার দেখা যাক কীভাবে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেবেন।

কোথায় দেবেন

সব করদাতা ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।

অনলাইনে রিটার্ন জমার আগে প্রথমে করদাতাকে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন নিতে করদাতার নিজের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ও বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর লাগবে। এ দুটি দিয়ে নিবন্ধন করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। অনলাইনে রিটার্ন জমা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তি রসিদ মিলবে।

কীভাবে দেবেন

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন তথা ই-রিটার্ন দিতে করদাতাকে কোনো কাগজপত্র আপলোড করতে বা জমা দিতে হবে না। শুধু ওই সব দলিলাদির তথ্য দিলেই হবে। যেমন সনাতনি পদ্ধতিতে চাকরিজীবীদের আয়ের বা বেতন-ভাতার প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যাংক হিসাবের এক বছরের লেনদেন বিবরণী (স্টেটমেন্ট) জমা দিলেই চলবে। আগের বছরের ১ জুলাই থেকে পরের বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত (অর্থবছর) সময়ের ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, সুদের তথ্য ও ব্যাংক হিসাবের নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে।

কীভাবে কর দেবেন

করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্য কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর পরিশোধ করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের জন্য রাজস্ব বোর্ডের কর্মীরা কল সেন্টার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করবেন।

যেসব দলিলের তথ্য প্রয়োজন

রিটার্ন জমার সময় নিজের প্রয়োজন অনুসারে কিছু কাগজপত্রের তথ্য লাগবে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস থেকে এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে। যেসব কাগজপত্রের লাগবে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বেতন খাতের আয়ের দলিল, সিকিউরিটিজের ওপর সুদ আয়ের সনদ, ভাড়ার চুক্তিপত্র, পৌরকরের রসিদ, বন্ধকি ঋণের সুদের সনদ, মূলধনি সম্পদের বিক্রয় কিংবা ক্রয়মূল্যের চুক্তিপত্র ও রসিদ, মূলধনি ব্যয়ের আনুষঙ্গিক প্রমাণপত্র, শেয়ারের লভ্যাংশ পাওয়ার ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট, সুদের ওপর উৎসে কর কাটার সার্টিফিকেট।

বিনিয়োগ করে কর রেয়াত পেতে চাইলেও কিছু কাগজপত্র লাগবে। যেমন জীবনবিমার কিস্তির প্রিমিয়াম রসিদ, ভবিষ্য তহবিলে দেওয়া চাঁদার সনদ, ঋণ বা ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারে বিনিয়োগের প্রমাণপত্র, ডিপোজিট পেনশন স্কিমে (ডিপিএস) চাঁদার সনদ, কল্যাণ তহবিলের চাঁদা ও গোষ্ঠী বিমার কিস্তির সনদ, জাকাত তহবিলে দেওয়া চাঁদার সনদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন কীভাবে
  • রিটার্ন ছাড়া ১০ লাখ টাকার বেশি আমানত ও সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না, প্রজ্ঞাপন জারি
  • অনলাইনে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করেছে এনবিআর
  • সব করদাতার জন্য অনলাইনে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক