গুগলের কর্মীদের এআই ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান সুন্দর পিচাইয়ের
Published: 4th, August 2025 GMT
কর্মীদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি আরও কার্যকরভাবে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই। সম্প্রতি গুগলের অভ্যন্তরীণ এক বৈঠকে তিনি জানান, প্রতিষ্ঠান এখন যে ধরনের বড় বিনিয়োগকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাতে জনবল বাড়ানোর বদলে এআই প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোই হওয়া উচিত মূল কৌশল। এ মুহূর্তে এআই প্রযুক্তিকে ঘিরে গুগলের যাত্রা ঠিক পথে আছে।
বৈঠকে সুন্দর পিচাই বলেন, ‘যখন কোনো প্রতিষ্ঠান বড় বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে যায়, তখন সাধারণত জনবল বাড়ানো হয়। কিন্তু এআইনির্ভর এই পরিবর্তনের সময় আমাদের আরও দক্ষ ও উৎপাদনক্ষম হতে হবে। আমরা এখন অনেক বড় বিনিয়োগের পথে হাঁটছি। এই বিনিয়োগ যেন যথাযথভাবে কাজে লাগে, সে জন্য আমাদের সম্পদ ব্যবহারে হতে হবে মিতব্যয়ী। আমি চাই, আমরা যেন আরও কার্যকর ও কৌশলগত উপায়ে কাজ করতে পারি।’
বৈঠকে গুগলের কোর ডেভেলপমেন্ট ও পণ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান সালুজ্জো বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের জন্য একাধিক এআই টুল তৈরি করা হয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে গুগলের সব কর্মীই এআই প্রযুক্তি আরও ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। আমরা এআইকে আরও দ্রুত কোডিং কার্যপ্রবাহে যুক্ত করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য, প্রকৌশলীরা যেন অনেক দ্রুত কাজ শেষ করতে পারেন এবং এতে সামগ্রিকভাবে গুগলের উৎপাদনশীলতা বাড়ে।’
সম্প্রতি গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের ত্রৈমাসিক আয়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ২০২৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি মূলধনী ব্যয় বাড়িয়ে ৮৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করছে। এর আগে এই ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৫ বিলিয়ন ডলার। সুন্দর পিচাইয়ের ভাষ্যমতে, এআইকে ঘিরে যে নতুন বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত রূপান্তর শুরু হয়েছে, তার মাধ্যমে গুগল আরও টেকসই ও কর্মক্ষম প্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দর প চ ই ব যবহ র গ গল র
এছাড়াও পড়ুন:
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নে দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রে ওষুধ নেই, চিকিৎসক নেই, বিদ্যুৎ–সংযোগ নেই। ফলে তেমন একটা রোগীও নেই। এই ‘নাই নাই’ হাসপাতালটির নাম মাস্টারদা সূর্য সেন মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র। এভাবে কি একটা হাসপাতাল চলতে পারে? প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যাওয়ার এমন নমুনা আমাদের হতাশ করে। দেশজুড়ে এ রকম আরও চিত্র আমরা দেখতে পাই, যা আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে ইতিবাচক কোনো বার্তা দেয় না।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই ১০ শয্যার হাসপাতালটির মূল সমস্যা জনবলসংকট। ১৬টি পদের ১টিতেও স্থায়ী জনবল পদায়ন করা হয়নি। অন্য হাসপাতাল থেকে প্রেষণে এসে মাত্র তিনজন কর্মচারী (একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, একজন মিডওয়াইফ ও একজন আয়া) সপ্তাহে কয়েক দিন করে দায়িত্ব পালন করেন। এটি একটি জরুরি প্রসূতিসেবাকেন্দ্র, যা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ নেই, ডাক্তার নেই এবং প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে এর কার্যক্রম এখন প্রায় স্থবির।
হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে পানীয় জলের ব্যবস্থাও নেই। বিনা মূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় ছয় মাস ধরে। এ পরিস্থিতিতে একজন রোগী কীভাবে এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসবেন? যেখানে হাসপাতালের বাইরের সাইনবোর্ডে জরুরি প্রসূতিসেবার জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকার কথা লেখা, সেখানে মূল ফটকে তালা ঝোলানো। এটি জনগণের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। হাসপাতালটি চালু না থাকায় মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল বা চট্টগ্রাম শহরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ—দুটোরই অপচয় তো বটেই, চরম ভোগান্তিরও শিকার হতে হয় মানুষকে।
যে মিডওয়াইফরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা জানান, এখন মাসে মাত্র চার-পাঁচজন প্রসূতি সেবা নিতে আসেন, যেখানে আগে শতাধিক প্রসূতি সেবা পেতেন। নিরাপত্তা প্রহরীরা দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তবু নিয়মিত বেতন পাওয়ার আশায় তাঁরা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এ অসহনীয় দুর্ভোগের কারণ হলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, তাঁরা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জনবলসংকটের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।
একটি মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিতে হবে? জনবল নিয়োগ, কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ, বিদ্যুতের ব্যবস্থা কার্যকর করা—সব ধরনের সংকট দূর করতে হাসপাতালটির দিকে আন্তরিক মনোযোগ দেওয়া হবে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।