আমরা সত্যিই একটা দুর্নীতিগ্রস্ত জাতি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। তিনি বলেছেন, “আমি জানি, যখন কথাটা বলি, তখন যারা সরকারে বসেন তারা কষ্ট পান। কিন্তু, সত্যটা যদি স্বীকার না করি, শুধরাবো কী করে?” 

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘নাগরিক অধিকার ও জলবায়ুর ন্যায্যতা’ শীর্ষক এক প্রকল্পের উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “কীভাবে আমরা দুর্নীতির বাইরে আসতে পারি, এটা আমাদের দেখতে হবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে একটা পর্যায় পর্যন্ত এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কিন্তু, এটার গভীরের স্তরে আমরা পারিনি।”

তিনি বলেন, “মানুষ আমাদের থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে। প্রায়ই আমার কাছে এসে বলে, আপনারা থাকতে সব করে যান। এর পরে তো আর হবে না। এই বাক্যের অর্থটা কী? এটা যদি ন্যায্য হয়, কেন হবে না? তারা যদি সত্যি জনগণের প্রতিনিধি হয়, কেন হবে না, যদি দাবিটি একটি ন্যায্য দাবি হয়? কারণ, দেশটা আমার খণ্ডবিখণ্ড হয়ে গেছে।”

শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “জাতিসংঘ বলেছে, প্রায় ২ হাজার মানুষ মারা গেছে। আমরা আজও সেটা শনাক্ত করে উঠতে পারিনি। শনাক্ত করতে না পারার পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। যেগুলো গণহত্যা হয়েছে, গণকবর হয়েছে, সেগুলোর ডিএনএ’র কাজ কিছু কিছু হয়েছে। কিছু কিছু এখনো বাকি আছে। শনাক্তের পর নিশ্চয়ই সেই নামগুলোও গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হবে। আমরা ৮০০ এর বেশি নাম গেজেট করেছি এবং সেগুলোকে ধরেই আমরা কাজ করছি।”

তিনি বলেন, ‍“যুগে যুগে অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই দেশ সংগ্রাম করে এসেছে। অথচ, গণতন্ত্র আমাদের বাইরেই থেকে গেলো। চব্বিশেও তাই। আমি একাত্তর দেখেছি, চব্বিশ দেখেছি। আমি দুটো যুদ্ধকেই দেখি আমার ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা, গণতন্ত্রের তৃষ্ণা, সমতার স্বপ্ন এবং বৈষম্যের নিষ্ঠুর হাত থেকে বাঁচার একটা চেষ্টা। আমরা লড়াইটা লড়ছি।”

অভিভাবকদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “এই প্রজন্মের শিশুদের হাল্কাভাবে নেবেন না। এই প্রজন্মের শিশুরা অনেক পাল্টে গেছে। তারা জগত দেখে ফেলেছে। আমরা আমাদের সময়ে সেভাবে দেখিনি। তারা আত্মবিশ্বাসের জায়গায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তারা মরণকেও ভয় পায় না। এরকম একটা প্রজন্মকে নিয়ে অসাধ্য সাধন করা যায়। তাই, এই প্রজন্মকে আমাদের খুব যত্নশীলভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে।”

“রাষ্ট্রের ভেতরে যে অপশাসনগুলো আছে, একটা আন্দোলনে তো আর সেসব মুছে যায় না। একাত্তরের পরেও মুছে যায়নি। একাত্তরে একটি ক্যাওস হয়েছিল। সেটা থেকে আমরা কষ্ট করে বেরিয়েছিলাম। চব্বিশের পরেও কিন্তু ক্যাওস হয়েছে, হচ্ছে। প্রত্যেকটা যুদ্ধের পরে একটা ক্যাওস হয়। সেটাকেও সামাল দিতে হবে।”

বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা, সিভিল সার্জন ডা.

এ কে এম মোফাখখারুল ইসলাম, সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রকনুল হক, বগুড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রেজাউল হাসান রানুসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও সুশীলসমাজের সদস্যরা। 

ঢাকা/এনাম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রজন ম উপদ ষ ট আম দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ