স্বরাষ্ট্র-শিক্ষা উপদেষ্টাকে এসে দাবি মানার ঘোষণা দিতে, না হলে আন্দোলন চলবে
Published: 27th, August 2025 GMT
বুয়েটসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাগত দাবিগুলোর যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়নে গঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেছে বুয়েটের আন্দোলনকারীরা।
প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে নতুন করে এই পাঁচ দাবি তুলে ধরেছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেছেন, এসব দাবি মানা না হলে আনোদালন চালিয়ে যাবেন তারা।
আরো পড়ুন:
তিন দাবিতে শাহবাগে প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা, যান চলাচল বন্ধ
‘লংমার্চ টু ঢাকা’ ঘোষণা দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা
বুধবার (২৭ আগস্ট) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের গেটের সামনে এই অবস্থান তুলে ধরে সংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ।
তিনি বলেন, সরকারের স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টা শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে এসে তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আন্দোলনকারী বুয়েট শিক্ষার্থীদের পক্ষে পাঁচ দাবি তুলে ধরেন জুবায়ের।
১.
২. প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইতিঃপূর্বে গঠিত কমিটিকে আমরা আমাদের প্রতিনিধিত্বের অনুপযুক্ত মনে করি। ওই কমিটিকে আমরা প্রত্যাখ্যান করি। অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রকৌশল আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে কমিটি সংস্কার করে পেশকৃত তিন দফা দাবিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নিয়ে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং এই মর্মে সংশ্লিষ্ট তিন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান এবং সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে আজই এসে এর নিশ্চয়তা দিতে হবে।
৩. হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে বহন করতে হবে এবং উক্ত আন্দোলন চলাকালীন সকল শিক্ষার্থীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনে আর কোনো প্রকার হামলা করা যাবে না।
৪. রোকন ভাইয়ের ওপর হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাদের চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
৫. শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলার জন্য ডিসি মাসুদকে বহিষ্কার করতে হবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নেসকো অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম হোসেন (ডিপ্লোমা ব্যাকগ্রাউন্ড) তার কক্ষে রোকনুজ্জামান রোকনকে ডেকে নেন। সেখানে উপস্থিত প্রায় ২০-২৫ জন ডিপ্লোমা ব্যাকগ্রাউন্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে রোকনকে ঘিরে ধরে গালাাগাল করেন এবং গলা কেটে হত্যার হুমকি দেন।
এর প্রতিবাদে তিন দফা দাবি নিয়ে রাস্তায় নামেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। গত দুই দিন ধরে আন্দোলন চলছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের গেটের সামনে এই অবস্থান তুলে ধরে সংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ।ঢাকা/রায়হান/রাসেল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে