পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় এক রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৩১ জন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। খবর সিনহুয়ার। 

সরকারি কর্মকর্তা হামজা শাফায়াত জানান, মঙ্গলবার বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির (বিএনপি) নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সরদার আতাউল্লাহ মেঙ্গলের মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। এ উপলক্ষে কোয়েটায় একটি স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। সেখানে বিএনপির শত শত সদস্য জড়ো হয়েছিল। সমাবেশ শেষে অনেকেই বেরিয়ে আসেন। সে সময়ে কাছের পার্কিং লটে হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। 

আরো পড়ুন:

অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা দিলেন আলিজাহ শাহ

ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তান হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

পুলিশের এক কমর্কর্তা আতহার রশিদ বলেন, “বিস্ফোরণটি আত্মঘাতী বোমা হামলা বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।”

এখানো কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। 

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও দরিদ্রতম। এছাড়া মানব উন্নয়ন সূচকের স্কোরকার্ডেও নিচের দিকে থাকে।

পাকিস্তানি বাহিনী এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বেলুচিস্তানে বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং ২০২৪ সালে এই অঞ্চলে সহিংসতা তীব্রভাবে বেড়েছে, যার মধ্যে ৭৮২ জন নিহত হয়েছে।

গত মার্চ মাসে, বিচ্ছিন্নতাবাদী বেলুচ লিবারেশন আর্মি প্রদেশটিতে একটি ট্রেন দখল করে। তিন দিনের অবরোধে শত শত যাত্রীকে জিম্মি করে এবং কর্তব্যরত নিরাপত্তা বাহিনীকে হত্যা করে।

এএফপির পরিসংখ্যান অনুসারে, ১ জানুয়ারি থেকে বেলুচিস্তান ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিরুদ্ধে লড়াইরত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতায় ৪৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে খাইবার পাখতুনখোয়া শহরের বান্নুতে একটি আধাসামরিক সদর দপ্তরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ছয় সৈন্য নিহত হয়েছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সরকারি কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরক ভর্তি গাড়িটি এফসি ক্যাম্পের গেটে ঢুকিয়ে দেয়। এরপর আরো পাঁচজন আত্মঘাতী হামলাকারী প্রবেশ করে।  

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, পরবর্তীতে ১২ ঘন্টা ধরে গোলাগুলি হয় এবং শেষ পর্যন্ত ছয় হামলাকারী নিহত হলে অভিযান শেষ হয়।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত