Risingbd:
2025-09-18@06:20:04 GMT

৭ লাখ টাকা হলে বাঁচবে অয়ন

Published: 3rd, September 2025 GMT

৭ লাখ টাকা হলে বাঁচবে অয়ন

হার্টের একটি ছিদ্র নিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে এক বছর বয়সী ছোট্ট অয়ন। দিনাজপুরের হিলি পৌর শহরের ধরন্দা গ্রামের আলী হোসেন অন্তর ও আঁখি মনি দম্পতির সন্তান সে।

অর্থের অভাবে সন্তানের চিকিৎসা করাতে না পেরে দিশেহারা বাবা-মা। চিকিৎসকরা বলেছেন, দ্রুত অস্ত্রপচার করলে হয়তো বেঁচে যেতে পারেন কোমলমতি এই শিশুটির জীবন।

অন্তর-আঁখি দম্পতি দুজনেই শিক্ষার্থী। এক বছর আগে তাদের কোল জুড়ে আসে শিশু অয়ন। জন্মের পরই বুকে ব্যাথা এবং নিউমোনিয়া ছিল। জন্মের তিন মাসের মাথায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর ধরা পড়ে শিশু অয়নের হার্টে একটি বড় ছিদ্র রয়েছে। 

সন্তানের চিকিৎসায় সহায়-সম্বল যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেছে। সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারায় দিন দিন শিশুটি মৃতুর কোলে ঢেলে পড়ছে। হার্টে ছিদ্রের আকার ধীরে ধীরে বড় আকার ধারণ করছে। 

চিকিৎসকরা বলেছেন, দ্রুত হার্টের অপারেশন করতে হবে। অপারেশন করতে ব্যয় হবে প্রায় সাত লাখ টাকা। অথচ আজ এই দম্পতি একেবারেই নিঃস্ব। সন্তানের জীবন বাঁচাতে অন্যের কাছে হাত পাতা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।  

যে বয়সে শিশু অয়ন বাবা-মায়ের কোলে হেসে খেলে বেড়ে উঠবে- সেই বয়সে মৃত্যুর হাতছানি দেখতে হচ্ছে শিশুটির। মৃত্যু কী সেটা বোঝে না শিশুটি, এটুকু বোঝে বুকে তার বেজায় যন্ত্রণা। সেই যন্ত্রণার কারণে সারাক্ষণ কান্না করে শিশুটি। কোন কিছু খেতে দিলে খেতে পারে না। কোনো খাবার খেলেই খাবার বমি হয়ে যায়। অর্থের অভাবে বন্ধ রয়েছে শিশুটির চিকিৎসা।

এলাকাবাসী মনির হোসেন বলেন, “এক বছর বয়সী বাচ্চাটাকে নিয়ে খুবই বিপদে আছে পরিবারটি। বাচ্চাটার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়েছে। প্রথম থেকে শিশুটির অনেক চিকিৎসা করেছে। তবে দিন দিন শিশুটির অবস্থা খারাপ হচ্ছে। অর্থের অভাবে ভাল চিকিৎসা করতে পারছে না অন্তর। আমরা যতদূর পারছি সহযোগিতা করছি। তবে শিশুটির চিকিৎসায় অনেক টাকা প্রয়োজন। তাই দেশবাসীর কাছে আবেদন জানাই- এগিয়ে আসুন, ফুটফুটে এই শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য আপনার সহৃদয় হাত বাড়িয়ে দিন।” 

শিশু অয়নের ফুফু মুক্তা বেগম বলেন, “আমার ছোট ভাইয়ের ছেলের হার্টে ছিদ্র দেখা দিয়েছে। তাদের প্রথম সন্তান, অনেক আশা এবং স্বপ্ন বাচ্চাটাকে নিয়ে। দিন যত যাচ্ছে, বাচ্চাটার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তাকে বাঁচাতে অনেক টাকা লাগবে, এত টাকা আমার ভাই কোথায় পাবে? জানি না আল্লাহপাক কী করবেন?”

অয়নের বাবা-মা অন্তর ও আঁখি বলেন, “আমাদের কোলে ফুল ফুটতে না ফুটতেই তা ঝরে পড়ার উপক্রম হয়েছে। অয়ন আমাদের অনেক আদরের সন্তান। জন্মের পর থেকেই অসুস্থ সন্তানকে বাঁচাতে দিনাজপুর, রংপুর, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তার দেখিয়েছি। আমাদের যা সম্পদ ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। এখন আমরা নিঃস্ব। তবুও ছেলের অসুখ ভাল করতে পারলাম না। হার্টের ছিদ্র অনেক বড় আকার ধারণ করেছে। ডাক্তার বলেছেন, দ্রুত হার্ট অপারেশন করতে হবে। কী করব ভেবে পাচ্ছি না। সন্তানের মুখের দিকে তাকাতে পারছি। আজ আমরা নিরুপায়, এমন কেউ কি আছেন, আমার অবুঝ সন্তানের পাশে দাঁড়ানোর?” 

এ বিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, “ধরন্দা গ্রামের একটি শিশুর হার্টে ছিদ্র ধরা পড়েছে। বিষয়টি জেনেছি। শিশুটির বাবা-মা অফিসে এসেছিলেন। আমি তাদের সরকারি অনুদানের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে বলেছি। আবেদন করলে সরকারিভাবে ৫০ হাজার টাকা পাবে শিশুটি।”

কোনো বাবা-মা চান না তাদের আদরের সন্তান পৃথিবী ছেড়ে চলে যাক। ছোট্ট ফুলের মতো আদরের এই সন্তান হারিয়ে গেলে কীভাবে বাঁচবেন তার বাবা-মা? তার চিকিৎসার জন্য প্রায় সাত লাখ টাকা আমাদের সমাজের অনেকের কাছেই অতি সামান্য। সেই সামান্য টাকায় যদি একটি জীবন বেঁচে যায় এর চেয়ে মহৎ আর কী হতে পারে? কেউ কি সত্যিই নেই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর মতো? বাবা-মায়ের মুখের হাসি কেউ কী ফিরিয়ে দিতে পারার মতো মনোভাব কি আমরা হারিয়ে ফেলেছি? আমরা যদি সবাইমিলে শিশুটির পাশে দাঁড়াই, তাহলে হয়তো একটি প্রাণ বাঁচবে সহজেই।

ঢাকা/মোসলেম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সন ত ন র র অন ক আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের

বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে তিনি ‘স্বৈরাচারের (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন’ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের প্রথম দিনে উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাজা।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত

সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প

জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এ সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ শব্দ দিয়ে যথাযথভাবে বোঝানো যায় না।

উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এই নৈশভোজে রাজার বক্তৃতায় দুই দেশের গভীর বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।

ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় এ সফর চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। এদিন নানা অনুষ্ঠানে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেবেন ব্রিটিশ রানি ক্যামিলা ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস।

রাজকীয় অ্যাপায়ন শেষে ট্রাম্পের আজকের কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনায় রূপ নেবে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সরকারি বাড়ি চেকার্সে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও হবে। 

বুধবারের (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় ভোজ ছিল আড়ম্বর ও রাজনীতির সমন্বয়ে সাজানো এক বিশেষ আয়োজন। ভোজে রাজা, রানি ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় উইন্ডসরে।

উইন্ডসর ক্যাসলের মনোরম প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মেলানিয়া রাজকীয় ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সেনাদলের অভিবাদন গ্রহণ করেন তারা। 

যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।

যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট ও মেলানিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ এক বৈঠকও করেন।

ভোজসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রিন্স উইলিয়ামের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি হবেন ‘অসাধারণ সফল নেতা’। প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনকে তিনি আখ্যা দেন ‘উজ্জ্বল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুন্দরী’ হিসেবে।

ট্রাম্পের ঐতিহাসিক এ দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর প্রমাণ করেছে রাজা ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। সফরে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তও দেখা গেছে।

এরপর রাজপ্রাসাদে ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে একযোগে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকে একই রকম তোপধ্বনি হয়।

ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩০০ সদস্য। ছিল শতাধিক ঘোড়া।

যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।

বিবিসি বলছে, রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।

যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর হলো একধরনের নরম শক্তির কূটনীতি, যা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য রাজকীয় আকর্ষণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর শুরু হওয়ার সাথে সাথে, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের একটি বড় প্রযুক্তি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাইক্রোসফট থেকে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা দেখা যাবে। 

ট্রাম্পের সফরের আগে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণাও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ