ববিতে আমরণ অনশনে সাত শিক্ষার্থী
Published: 5th, September 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) অবকাঠামো উন্নয়নসহ তিন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধের পর এবার আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় অনশনে বসেছেন সাত শিক্ষার্থী। তারা হলেন—ইংরেজি বিভাগের শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অমিয় মন্ডল, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের মো.
শিক্ষার্থীদের অনশনে বসার খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে সেখানে ছুটে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু, শিক্ষার্থীরা দাবিতে অনড় থাকায় উপাচার্য অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অবস্থান নেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, আমরা একটানা ৩৬ দিন ধরে আন্দোলন করলেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। তাই, বাধ্য হয়ে আমরা আমরণ অনশন শুরু করেছি। কেন প্রশাসন আমাদের কথা শুনছে না, তা আমরা বুঝতে পারছি না।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধি ও অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং পরিবহন সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
অবকাঠামো উন্নয়ন:
বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফেজের উন্নয়নের জন্য ফিজিবিলিটি টেস্ট সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। পরবর্তীতে একনেকে বাজেট অনুমোদন করাতে হবে। অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করার বিষয়ে সরকার, ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
জমি অধিগ্রহণ:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ২০০ একর জমির মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি ১৫০ একর জমি দ্রুততম সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ করতে হবে। কোন জায়গা থেকে কত একর জমি অধিগ্রহণ হবে এবং কতদিনের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে, সে বিষয়ে যৌক্তিক পরিকল্পনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
পরিবহন ব্যবস্থা:
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে। কতদিনের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা হবে, তার পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে। নিজস্ব পরিবহন সংগ্রহ না হওয়া পর্যন্ত বিআরটিসি বাসের মাধ্যমে শতভাগ পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উল্লিখিত দাবিগুলো যথাযথ শর্ত অনুযায়ী বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে। দাবিগুলো শতভাগ পূরণ হলেই আন্দোলন স্থগিত করা হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেছেন, শিক্ষার্থীদের অনশনে বসার বিষয়টি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
ঢাকা/পলাশ/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আমরণ অনশন অবক ঠ ম পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।
তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।
আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেযতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।