অনুকূলের ৩০ হাজার টাকার বিমান উড়ছে আকাশে
Published: 6th, September 2025 GMT
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামে এক বিস্ময়কর দৃশ্যের জন্ম দিলেন তরুণ উদ্ভাবক অনুকূল চন্দ্র রায়। নিজের মেধা ও বাবার কষ্টার্জিত টাকায় তৈরি করা বিমানটি প্রথমবারের মতো সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছে। অনুকূল বিমানটির নাম দিয়েছেন ‘Royal Sky-110’।
মাত্র ২ বছর গবেষণা আর কাঠমিস্ত্রি বাবার তিলে তিলে জমানো ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ছেলে অনুকূল বিমানটি তৈরি করেন। বিমানে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে রেডিও কন্টলার ফ্লাইস্কাই এএসআই৬, লিকো ব্যাটারি ২২০০ এমএস৩ সেল, দুইটি বিএল ডিসি মটর (১৪ কেভি), প্রোপেলার ৮ ইঞ্চি, সার্ভো মটর ৯ গ্রাম (চারটি) এবং বডি ককপিট তথা বিমানের মূল কাঠামো ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হবে অক্টোবরে: উপদেষ্টা
উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: ছাড়পত্র পেল শিক্ষার্থী তৌফিক
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিমানটি আকাশে উড়তেই গ্রামের মাঠে ভিড় জমায় আত্মীয়-স্বজনসহ স্থানীয়রা। তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অনুকূলের সাফল্যকে অভিনন্দন জানান।
অনুকূল চন্দ্র রায় উপজেলার আঙ্গারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে। ২০২৩ সালে তিনি একটি রোবটও তৈরি করেছিলেন। সুযোগ পেলে অনুকূল দেশের প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নতুন উচ্চতা স্পর্শ করবেন বলে আশাবাদী তারা স্বজনসহ গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসী আব্দুল খালেক, আরিফুল, সাগরসহ অনেকেই বলেন, আমাদের অনুকূল বিমান তৈরি করে আকাশে উড়িয়েছে, এটা আমাদের গর্ব। এটা একটি বিমান নয়, এটি অনুকূলের স্বপ্ন। অধ্যবসায় আর গ্রামের মানুষের উচ্ছ্বাসের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। মেধাবী অনুকূল যদি সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পায়, তাহলে আরো বড় কিছু করে দেখাতে পারবে।
অনুকূলের বাবা কাঠমিস্ত্রি রণজিৎ রায় বলেন, “আমার স্বপ্ন ছিল ছেলে আমার আকাশে বিমান উড়াবে। আজ সে আমার স্বপ্ন পূরণ করেছে। অনেক কষ্ট করে তার বিমান তৈরির ব্যয় ব্যবস্থা করেছি। আমি সবার নিকট দোয়া চাই, আমার ছেলে যেন আরো বড় কিছু করতে পারে।”
অনুকূল চন্দ্র রায় বলেন, “আমি ছোট থেকে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম এবং আকাশে বিমান উড়া দেখতাম। মূলত তখন থেকেই আমার মনের বাসনা নিজে কিছু করব। নিজের আশা পুরণ করতে দীর্ঘ দুই বছর প্রচেষ্টায় তৈরি করেছি ‘Royal sky 110’ বিমান। যখন বিমানটি আকাশে উড়ায়, তখন মাঠে দর্শকের অভাব থাকে না। এটা আমার জীবনের চরম স্বার্থকতা।”
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সরকার বলেন, “আমি অনুকূল চন্দ্র রায়ের আবিষ্কার বিষয়ে জেনেছি। তার বিমানটি নিয়ে আসতে বলেছি, বিমানটি দেখবো, আসলে সে কি তৈরি করেছে দেখি। পরে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানাব, যাতে সে সরকারি সহযোগিতা পায়। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ক ল র ব ম নট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।