ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলি সরকারের পদক্ষেপে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা সংস্থা ইসরায়েলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে - যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন যে, গাজার বেশিরভাগই এলাকাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজায় এখন ‘মানবসৃষ্ট’ দুর্ভিক্ষ চলছে।

গাজায় ইসরায়েরি হামলার প্রতিক্রিয়ায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। গত বছর ব্রাজিলের সিয়ারার ফেডারেল বিশ্ববিদ্যালয় একটি ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে উদ্ভাবনী শীর্ষ সম্মেলন বাতিল করেছে। একইসময় নরওয়ে, বেলজিয়াম এবং স্পেনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন সহ অন্যান্যরাও চলতি গ্রীষ্মে একই পদক্ষেপ নিয়েছে।

আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একটি ছাত্র বিনিময় কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে। ইউরোপীয় সামাজিক নৃবিজ্ঞানী সমিতি ইসরায়েলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতা করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।

ফিলিস্তিনি ক্যাম্পেইন ফর দ্য একাডেমিক অ্যান্ড কালচারাল বয়কট অফ ইসরায়েলের স্টেফানি অ্যাডাম বলেন, ইসরায়েলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘ইসরায়েলের দশকব্যাপী সামরিক দখলদারিত্ব, বসতি স্থাপনকারী ঔপনিবেশিক বর্ণবাদ এবং এখন গণহত্যার’ সাথে জড়িত।

তবে, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির খুব কম প্রতিষ্ঠানই ইসরায়েলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে। ইউনিভার্সিটিস ইউকে (ইউইউকে) জানিয়েছে, তারা শিক্ষা বয়কটকে সমর্থন করে না।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে

দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর নগরী বুসানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে কফিন। দেশটিতে ভবিষ্যতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পরিচালকদের প্রশিক্ষণের জন্য এগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ফলে মৃত্যুর ব্যবসায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোক কাজ খুঁজে পাচ্ছে। কারণ দেশটিতে জন্মহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ৫০ বা তার বেশি।

বুসান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাপড়ে সাবধানে একটি পুতুল জড়িয়ে, কাপড়টিকে আসল চামড়ার উপর মসৃণ করে, তারপর আলতো করে কফিনে নামিয়ে দিচ্ছিল।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রশাসনের শিক্ষার্থী ২৭ বছর বয়সী জ্যাং জিন-ইয়ং বলেন, “আমাদের সমাজের বয়স বাড়ার সাথে সাথে, আমি ভেবেছিলাম এই ধরণের কাজের চাহিদা আরো বাড়বে।”

আরেক ছাত্র, ২৩ বছর বয়সী ইম সে-জিন তার দাদীর মৃত্যুর পর মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়।

তিনি বলেন, “তার (দাদীর) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আমি দেখেছি পরিচালকরা তাকে শেষ বিদায়ের জন্য কতটা সুন্দরভাবে প্রস্তুত করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞ বোধ করছি।”

দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ ক্রমশ একাকী জীবনযাপন করছে এবং নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যাচ্ছে। এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির প্রায় ৪২ শতাংশ এখন একাকী জীবনযাপন করে।

এই পরিসংখ্যান দেশটিতে একটি নতুন পেশার আবির্ভাবকে প্রতিফলিত করছে।

উন্নত দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। এই ‘একাকী মৃত্যু’-তে সেইসব ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত যারা আত্মহত্যা করেছেন।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যবসায়ের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি কিম ডু-নিয়ন বলেন, তার ২০ বছর বয়সী ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছে।

তিনি বলেন, “মানুষ যখন একসাথে থাকে, তখন তারা জিনিসপত্র ভাগ করে নেয়... এমনকি যদি একজন ব্যক্তি মারা যায়, সেই জিনিসপত্রগুলি থেকে যায়। কিন্তু যখন কেউ একা মারা যায়, তখন সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে।”

তবে নিজের পেশা নিয়ে ভয়ও পান কিম।

তিনি বলেন, “আমি ভয় পাচ্ছি। আপনি যতই প্রস্তুতি নিন না কেন, একজন মৃত ব্যক্তির মুখোমুখি হওয়া ভীতিকর।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে
  • ক্যানসার ঠেকাতে খাদ্যাভ্যাস আর জীবনযাপনপদ্ধতি পরিবর্তনের তাগিদ