নর্দান ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 16th, September 2025 GMT
নর্দান ইউনিভার্সিটি ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি ট্রাস্টের (আইবিএটি) চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ১৯ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের (অর্থ পাচার) অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আবু ইউসুফ আবদুল্লাহর স্ত্রী হালিমা সুলতানা, সন্তান সাদ আল জাবির আবদুল্লাহ ও লাবিবা আবদুল্লাহ, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এম শামছুল হক, মোসাম্মাৎ হাবিবুন নাহার ও নাজমুস সাদাত।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ৭ সেপ্টেম্বর এ মামলা দায়ের করে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বিশ্ববিদ্যালয় ও ট্রাস্টের তহবিল থেকে অর্থ তুলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান প্রাসাদ নির্মাণ লিমিটেড ও সুন্দরবন সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল লিমিটেডের হিসাবে স্থানান্তর করেন।
দুদক জানায়, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আইবিএটি ট্রাস্টের তহবিল থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে কোটি কোটি টাকা একাধিক চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ও নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের হিসাব থেকেও বিপুল অর্থ আইবিএটি ট্রাস্টের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ওই অর্থ আসামিদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানে সরানো হয়।
২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে একাধিক চেকের মাধ্যমে ১৯ কোটি ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪০ টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে। পরে এই অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’
আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাকা/সৈকত/রাজীব