Risingbd:
2025-10-14@06:17:25 GMT

হাসপাতাল নিজেই যেন রোগী!

Published: 14th, October 2025 GMT

হাসপাতাল নিজেই যেন রোগী!

ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালটি উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল। কিন্তু যে স্থানে মানুষ আসে সুস্থতার আশায়, সেই স্থানই এখন যেন রোগ উৎপত্তির কেন্দ্রস্থল হয়ে পড়েছে। নোংরা পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর অবস্থা আর অব্যবস্থাপনায় ভরে গেছে হাসপাতালটি।

রোগীরা বলছেন, এখন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে মানুষ সুস্থ নয় বরং আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অপরদিকে ধারণক্ষমতার দুই থেকে তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, জনবল সংকট ও অব্যবস্থাপনার কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও সেবাগ্রহীতারা মনে করছেন- ঠাকুরগাঁওয়ে দ্রুত একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন ছাড়া স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের বিকল্প নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ২৫০ শয্যা হলেও প্রতিদিন ভর্তি থাকে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী। রোগীর চাপে বেড পাওয়া যায় না, অনেক সময় ফ্লোরেও জায়গা মেলে না। চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় ডাক্তার ও নার্সদের।

হাসপাতালের করিডোর, টয়লেট এমনকি রোগীর ওয়ার্ডেও নোংরা পরিবেশ। নোংরার মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সুস্থ মানুষও সেখানে প্রবেশ করলে অসুস্থ হয়ে পড়বে। হাসপাতালের দুটি লিফটের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। ভিড়ের চাপে গুরুতর অসুস্থ রোগী বা বয়স্কদের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। দীর্ঘদিন ঘরে বালতি ও পাত্রে জমে থাকা নোংরা পানি থেকে জন্ম নিতে পারে এডিস মশাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ। এছাড়াও হাসপাতালের ভিতরে কুকুর-বিড়ারের অবাধ বিচরণ তো আছেই! 

এমনকি আইসিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং পিসিআর ল্যাবের জন্য নির্ধারিত ভবন ও স্থান থাকলেও, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো চালুই হয়নি।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, এই হাসপাতালে অধিকাংশ পরীক্ষার রিপোর্ট বাইরে থেকে করাতে হয়। যেসব ওষুধ হাসপাতল থেকে দেওয়ার কথা সেসব ওষুধ নিতে রোগীদের ছুটতে হয় বাইরের ফার্মেসিতে। এছাড়া একটু জটিল অবস্থা দেখলেই রোগীকে দিনাজপুর, রংপুর বা ঢাকায় রের্ফাড করা হয়। এতে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই অনেকের মৃত্যু হয়। 

সময় মতো ডাক্তার পাওয়া এখানটায় ভাগ্যের ব্যাপার। টয়লেটগুলোতে ঢোকা যায় না। বেসিনে হাত ধোয়ার অবস্থা নেই। এখানে রোগী নিয়ে এলে সুস্থ মানুষই অসুস্থ হয়ে পড়েন বরে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের।

মো.

মুজাহিদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, “এখানকার পরিবেশ এতটাই নোংরা যে বলার মত না। যেখানে সেখানে পানি ও ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে। হাসপাতালে অনেকগুলো টেস্ট হয় না। রোগী নিয়ে টেস্ট করাতে বাইরে যেতে হয়। এভাবে আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে আছি। এছাড়া এখানে রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী সেবা দেওয়া মতো জনবল নেই। জনবল বৃদ্ধি করলে হয়তো কিছুটা সমস্যার সমাধান হবে।”

বালিয়াডাঙ্গী থেকে অসুস্থ মাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, “যেগুলো ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়ার কথা, সেই ওষুধগুলো আবার আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। তাহলে সরকার যে ওষুধ দিচ্ছে সেই ওষুধগুলো যাচ্ছে কোথায়?”

শহীদুল ইসলাম উজ্জল তার ছেলেকে নিয়ে ভর্তি আছেন হাসপাতালে তিনি বলেন, “ধরতে গেলে এই হাসপাতালে চিকিৎসা বলতে তেমন কিছুই হচ্ছে না। সময় মতো ডাক্তার পাওয়া যায় না। নার্সরা ঠিক মতো কথা শোনেন না। তাদের কোন কিছু বলতে গেলে বিরক্ত বোধ করেন। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে এখানকার লিফট নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এদিকে কেউ নজর দিচ্ছেন না।”

রিক্তা পারভীন বলেন, ‘হাসপাতালের টয়লেটের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, আমরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারছি না। নোংরা থাকায় বেসিনে হাত ধোয়ারও উপায় নেই। এখানে আমরা আসি সুস্থতার জন্য কিন্তু রোগীর সাথে যারা আসি তারাই মনে হয় অসুস্থ হয়ে পড়ছি।”

বাধন নামে এক ব্যক্তি বলেন, “এখানে রোগী নিয়ে এলে অধিকাংশ রোগীকেই দিনাজপুর, রংপুরসহ ঢাকায় রেফার করে দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ রোগীর পথেই মৃত্যু হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে একটি ভালো মানের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল জরুরি হয়ে পড়েছে।”

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, এই হাসপাতালে প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক ৫৯ জনের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪০ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির ৩টি পদেই শূন্য। দ্বিতীয় শ্রেণির নার্সের পদ সংখ্যা মাত্র ৯১ জন। তার বিপরীতে কর্মরত আছেন ৮৮ জন। তৃতীয় শ্রেণির পদ সংখ্যা ৪২ জন হলেও আছেন মাত্র ২০ জন। এখনো শূন্য পদ ২২টি। চতুর্থ শ্রেণির লোকবল ২৫ জনের বিপরীতে আছেন ১৭ জন। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে মঞ্জুরীকৃত মোট পদের সংখ্যা মাত্র ২২১টি। এর মধ্যে আবার এখনো শূন্য হয়ে পড়ে আছে ৫৬ জনের পদ।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. রকিবুল আলম (চয়ন) বলেন, “রোগীর চাপ আমাদের সক্ষমতার অনেক বেশি। জনবল কম, আবার প্রায় তিনটি জেলার মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন এখানে। ২৫০ শয্যার অন্যান্য হাসপাতালের তুলনায় এই হাসপাতালে নার্সের সংখ্যা কম। তাই এক শিফটে ২০-২৫ জন নার্স দিয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগীর সেবা দেওয়া অসম্ভ হয়ে পড়ে। তারপরেও সীমিত সম্পদে যতটা পারি সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এছাড়া যেসব রোগীদের ইউনিট এখানে চালু নেই ও আইসিইউ, সিসিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং পিসিআর ল্যাবের মতো রোগীদের রেফার করতে হয়। ভবিষতে যদি এই ডিপার্টমেন্টগুলো এখানে চালু হয়, তাহলে রেফারের সংখ্যা কমে আসবে।”

ঢাকা/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঠ ক রগ অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ৪১ পদের চাকরি, করুন আবেদন

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে জনবল নিয়োগে আবেদন চলছে। এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মোট ৪১টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকেরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এসব পদের জন্য।

পদের নাম ও সংখ্যা—

১. পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ৫
গ্রেড: ১৩
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: (ক). স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি; (খ) কম্পিউটার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত; (গ) সাঁটলিপিতে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৭০ শব্দ এবং বাংলায় ৪৫ শব্দ; (ঘ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৩০ ও বাংলায় ২৫ শব্দ।
(ঙ) কম্পিউটারে word processingসহ ই-মেইল ও ফ্যাক্স পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

আরও পড়ুনধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে ১০ম–সহ বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগ, পদ ৪৯০৭ অক্টোবর ২০২৫

২. পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ২
গ্রেড: ১৩
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: (ক) কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি; এবং (খ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ এবং ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতিসহ সংশ্লিষ্ট Standard Aptitude Test উত্তীর্ণ হতে হবে।
৩. পদের নাম: অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ১২
গ্রেড: ১৬
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; (খ) কম্পিউটার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত; (গ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ২০ ও বাংলায় ২০ শব্দ; (ঘ) কম্পিউটারে word processingসহ ই-মেইল ও ফ্যাক্স পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. পদের নাম: অফিস সহায়ক
পদসংখ্যা: ২২
গ্রেড: ২০
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে চাকরি, নবমসহ বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগ১১ অক্টোবর ২০২৫

বয়সসংক্রান্ত তথ্য

প্রার্থীদের বয়স ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের জন্য বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। বয়স প্রমাণের ক্ষেত্রে কোনো এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য হবে না।

আবেদনের প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীদের টেলিটকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অন্য কোনো মাধ্যমে প্রেরিত আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না।

আবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ

অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও আবেদন ফি জমা দেওয়া শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা থেকে। আবেদন শেষ হবে আগামী ১৪ অক্টোবর ২০২৫, বিকেল ৫টায়। আবেদনপত্র সাবমিট করার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে।

আবেদন ফি

ক্রমিক নম্বর ১-৩ পদের জন্য ১১২/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ) এবং ক্রমিক নম্বর ৪ পদের জন্য ৫৬/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)। অনগ্রসর প্রার্থীদের জন্য সব পদের আবেদন ফি ৫৬/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)।

পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান

লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান পরবর্তী সময় যোগ্য প্রার্থীদের মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওয়েবসাইটে জানানো হবে। প্রবেশপত্র ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। আবেদনপত্রে উল্লিখিত মুঠোফোন নম্বরটি সর্বদা সক্রিয় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে প্রার্থীদের।

আরও পড়ুনঅ্যামাজনে ছয় ক্যাটাগরিতে ইন্টার্নশিপ, প্রোগ্রাম শেষে দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ারের সুযোগ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ৪১ পদের চাকরি, করুন আবেদন