নতুন বউ ঘরে রেখে মাঠে নেমেই সামির ৫ উইকেট
Published: 15th, October 2025 GMT
আফগান পেসার বিলাল সামির জীবনে সৌভাগ্য বয়ে এনেছেন তাঁর স্ত্রী। চলতি মাসের ৪ তারিখে ইনস্টাগ্রাম পোস্টে নিজের বিয়ের কথা জানান সামি। পোস্টে লিখেন, ‘গট ম্যারিড’। সামি তখনো বোধ হয় জানতেন না দুই দিন পরই ডাক আসবে আফগানিস্তান দলে। ছাড়তে হবে ঘর ও প্রিয় স্ত্রীকে।
কীভাবে জানবেন, সুযোগই যে পেয়েছেন একজনের চোটের কারণে। হুট করে আফগানিস্তান দলে সুযোগ পেয়ে বিয়ের দুই দিন পরই ঘরছাড়া সামির সামনেই গতকাল আবুধাবিতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বাংলাদেশ দল।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সামি সুযোগ পান আরেক পেসার মোহাম্মদ সালিমের চোটে। পেশির চোটে সিরিজ থেকে ছিটকে যান সালিম। সামি কালকের আগে আফগানিস্তানের হয়ে খেলেছেন মাত্র একটি ম্যাচ।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর অভিষেক। অভিষেক ম্যাচে ৩ ওভারে দিয়েছিলেন ২৫ রান। উইকেট পাননি। এরপর আর দলে সুযোগ পাননি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছন্দে ছিলেন ২১ বছর বয়সী এই পেসার।
সম্প্রতি শেষ হওয়া গাজী আমানুল্লাহ খান রিজিওনাল ওয়ানডে টুর্নামেন্টে (আফগানিস্তানের ঘরোয়া লিস্ট এ প্রতিযোগিতা) সামি স্পিনঘার অঞ্চলের হয়ে খেলেন। সেখানে তিনি দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন। ২২.
সামি বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে সুযোগ পাননি। সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত করা আফগানিস্তান কাল তাকে মাঠে নামায়। আর আফগানিস্তানের এমন সিদ্ধান্ত কাজেও লেগে যায়। নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই নেন ৩৩ রানে ৫ উইকেট। এটি সামির লিস্ট এ ক্রিকেটেও সেরা বোলিং।
আরও পড়ুনমিরাজরা ভাবছেন কীভাবে পরের সিরিজে ভালো করা যায়৫৭ মিনিট আগেসামি কাল শুরুটা করেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেনকে বোল্ড করে। এরপর অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও আউট হন এই পেসারের বলে। আফগানিস্তানের ২০০ রানের জয়ের দিনে শেষ তিনটি উইকেট নিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সামি। আউট করেন রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম ও হাসান মাহমুদকে। ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে তাঁর হাতে।
ম্যাচসেরার হয়ে সামি বলেছেন, ‘নিজের খেলা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি। দল আমার পাশে ছিল। কাজটা সহজ ছিল না, কারণ দলে অনেক বিকল্প আছে। খুবই ভালো লেগেছে আজ (কাল) নিজের সেরাটা দিতে পেরেছি।’
আরও পড়ুনবিপিএলের টাকার ভাগ পাবে ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও১১ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন র উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
জিসান হত্যা: আদালতে জবানবন্দি দিলেন ৩ আসামি
খুলনার দিঘলিয়ায় সাত বছরের শিশু জিসানকে হত্যা করেন প্রতিবেশী ফয়সাল। তার লাশ গুম করতে সহযোগিতা করেন অভিযুক্তের মা-বাবা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার জিআরও এএসআই ইমাম আলী।
তিনি জানান, রবিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ফয়সাল ও তার বাবা-মাকে খুলনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাসের আদালত-১ এ হাজির করা হয়। সেখানে গ্রেপ্তারকৃতরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালতে প্রথমে ফয়সাল (২৬), এরপর তার বাবা জিএম হান্নান (৫২) ও সর্বশেষ তার মা মাহিনুর বেগম (৪৫) জবানবন্দি দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার
খুলনায় শিশু জিসান হত্যা: আসামির বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
এদিকে, সন্তান হারা জিসানের মায়ের আহাজারি যেন থামছে না। ১২ বছর বয়সী বড় ছেলে রাশেদকে জড়িয়ে একের পর এক বিলাপ করছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাজান তো কোনো অন্যায় করে নাই। আমার লগে ওদের কোনো শত্রুতা নাই। কেন ওরা আমার বাজানরে মাইরা ফালাইলো। কেমনে আমার বাজানরে খুন করল? আমি এইডার বিচার চাই। সুষ্ঠু বিচার চাই।”
তিনি বলেন, “আমার বাবারে ওরা যে কষ্ট দিছে, আমিও ওগো সেই কষ্ট দিবার চাই। আমার বাবারে যেভাবে শাস্তি দিছে, আমিও ওদের সেভাবে শাস্তি চাই। আমি ওগো ফাঁসি চাই। আমার বাজান মসজিদ থেইক্যা নামাজ পইড়া বাহির হইছে বৃহস্পতিবারের দিন। ওই শয়তানও সঙ্গে নামাজ পড়ছে। নামাজ পইড়া দু’জন একসাথে বাহির হইছে। এরপর আমার বাবারে হাত ধরে লইয়া কাম করছে।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লিটন কুমার মন্ডল বলেন, “৯ অক্টোবর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে শিশু জিসানকে ফয়সাল তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি দড়ি দিয়ে বেঁধে রান্নাঘর থেকে দা এনে কুপিয়ে হত্যা করেন জিসানকে। ঘটনাটি প্রথমে ফয়সালের মা মাহিনুর বেগম আঁচ করতে না পারলেও পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, তার ছেলে একটি শিশুকে হত্যা করেছে। এরপর তিনি ফয়সালের বাবা হান্নানকে খবর দেন।”
তিনি বলেন, “তারা উভয়ে জিসানের মরদেহ প্রথমে প্লাস্টিকের বস্তায় এবং পরবর্তীতে একটি চটের বস্তায় করে বাড়ির পূর্ব পাশের দেওয়ালের কাছে মাটি চাপা দেন। বিষয়টি যাতে কেউ আঁচ করতে না পারেন সেজন্য মাটির উপর রোদে শুকানোর জন্য পাটখড়ি সাজিয়ে রাখেন তারা।”
দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এইচএম শাহীন বলেন, ‘কি কারণে এবং কেন শিশু জিসানকে হত্যা করা করেছে এর উত্তর বের করার জন্য অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন। বাদীর সাথে তাদের কোনো শত্রুতাও ছিল না। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ফয়সাল মাদকাসক্ত ছিলেন।”
অভিযুক্ত ফয়সালের চাচা জিএম আকরাম বলেন, “সরকারি সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ফয়সাল এসএসসি পাস করে। এরপর স্থানীয় একটি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে। ওদের স্বভাব চরিত্রের কারণে আমি খোঁজখবর রাখি না। মাঝেমধ্যে ওর মাথা ঠিক থাকতো না, পাগলামি করত।”
উল্লেখ্য, বড় ছেলে রাশেদ নানা নানির সঙ্গে ভোলায় থাকে। ছোট ছেলে জিসান বাবা-মায়ের সঙ্গে দৌলতপুর-দেয়াড়া খেয়াঘাট সংলগ্ন মন্ডল টেক্সটাইল মিলের কোয়ার্টারে বসবাস করত। জিসানের বাবা আলমগীর হোসেন মন্ডল টেক্সটাইল মিলের মেকানিক্যাল বিভাগের শ্রমিক।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ