দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে ঘরের ভেতর মিলল অর্ধগলিত লাশ
Published: 1st, November 2025 GMT
ঘরের দরজা-জানালা সব বন্ধ। তবে ভেতর থেকে ভেসে আসছিল দুর্গন্ধ। ডাকাডাকিতে সাড়া না পাওয়ায় ঘরটির জানালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন লোকজন। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে অর্ধগলিত একটি লাশ। গতকাল শুক্রবার রাতে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পাঠানগড় সুলতান হাজিবাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার হয়।
লাশটি ওই ঘরেরই বাসিন্দা শেখ ফরিদের (৪২)। তিনি ওই এলাকার নজির আহাম্মদের ছেলে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শেখ ফরিদের ভাই মাহফুজুর রহমান জানান, সপ্তাহখানেক ধরে সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে রয়েছেন ফরিদের স্ত্রী। ঘরে ফরিদ একাই থেকে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির লোকজন তাঁকে এলাকার দোকানে দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে দুর্গন্ধ আসায় আমি ঘরে ঢোকার চেষ্টা করি। তবে দরজা-জানালা ভেতর থেকে বন্ধ পেয়েছি। পরে বাড়ির লোকজন নিয়ে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখি মেঝেতে আমার ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে।’
নিহত শেখ ফরিদের মা রৌশন আরা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা ছিল না। ঘরের দরজা-জানালা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। এ অবস্থায় কীভাবে তার মৃত্যু হলো, বুঝতে পারছি না।’
নিহত শেখ ফরিদের স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার বলেন, তাঁর স্বামী কোনো কাজকর্ম করত না। পরিবারে অভাব-অনটনের বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে সপ্তাহখানেক আগে তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়িতে চলে যান। এরপর স্বামীর সঙ্গে তাঁর আর কথা হয়নি।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ খ ফর দ র
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসুর শপথ এবং কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই
২২ অক্টোবর সন্ধ্যার ফ্লাইটে চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম। রাতের খাবার চট্টগ্রাম শহরে সেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় ১২টা বেজে গেল।
পরদিন ছিল নবনির্বাচিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেলগুলোর নবনির্বাচিত ছাত্র সংসদের শপথ গ্রহণ। এযাবৎকাল যাঁরা যাঁরা চাকসুর ভিপি–জিএস নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাওয়াত করেছিল। আমাদের আসা–যাওয়া, থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা তাঁরাই করেছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমার গভীর আবেগের জায়গা। ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর চারটি বিভাগে দুই শ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। দুই বছর পর ১৯৬৮ সালে আমি ভর্তি হয়েছিলাম অর্থনীতিতে অনার্সে। অনার্সে সর্বমোট শিক্ষার্থী ছিলেন ৮১ জন। একমাত্র প্রশাসনিক ভবন, ছোট আকারে একটি লাইব্রেরি, কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ নিয়ে যাত্রা করেছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। শিক্ষক ছিলেন যত দূর মনে পড়ে; মোট ৬ জন।
একটা ছোটখাটো বিদ্যালয় বলা যায়। একটি মাত্র হল ছিল। আলাওল হল। একতলা ভবন। তার আবার কংক্রিটের ছাদ ছিল না। অ্যাসবেস্টস টিনের চাল ছিল। সর্বমোট আবাসিক ছাত্রসংখ্যা শ খানেকের মতো হবে। সবুজ ঘাস, লতাগুল্ম ছাওয়া ছোট ছোট অনেকগুলো টিলা (যাকে আমরা সাধারণত ‘পাহাড়’ বলতাম)। পাহাড়ের ওপরে বা পাদদেশে নির্মিত ছোট ছোট সব ভবন।
সেখানেই আমার বিশ্ববিদ্যালয়–জীবন। সেখানেই বেড়ে ওঠা। কলেজজীবন পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়ে পরিণত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সংগ্রাম।
আমার বাড়ি বগুড়ায়। পাহাড় দূরের কথা, কোনো টিলাও নেই সেখানে। বোধ হয় এ জন্যই আমার তখনই খুব ভালো লাগত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। প্রকৃতি, প্রকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্য আর আমাদের উঠতি যৌবনের রং মাখা সময়ে এক মনোরম পরিবেশ।
ছাত্র–শিক্ষক সবাই সবাইকে চিনতাম। এক পরিবারের মতো মেলামেশাও ছিল। একই সঙ্গে সাপখোপ অন্যান্য প্রাণীও বাস করত। আমার মনে আছে, এক সন্ধ্যায় যখন আঁধার নেমে এসেছে, তখন এক আবাসিক ছাত্র বাথরুমের বেসিনে ট্যাপ খোলার সঙ্গে সঙ্গে বেসিনে কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকা সাপ ফোঁস করে উঠেছিল। আর তাতে শিক্ষার্থীটি চিৎকার করে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম–হাটহাজারী সড়কের জিরো পয়েন্টের বাঁ দিক দিয়ে পাহাড় কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তা করা হয়েছে। ওই রাস্তায় প্রবেশ করে, আমরা রাত প্রায় ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের দিকে যেতে লাগলাম। ১ নম্বর গেটের কাছে তখনো শিক্ষার্থী এবং দোকানিদের ভিড়।
আমি এ বছরেই ১৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশনে এসেছিলাম। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
চাকসুর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে চাকসুর সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ